প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৪, ২১:৫৬
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই
কোরবানির ঈদের আর দুই সপ্তাহ বাকি। ঈদকে সামনে রেখে এখন বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম ওঠানামা করছে। রোজার ঈদের পর থেকে আলু, পেঁয়াজ ও রসুনের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এই সময়ের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম নামেনি দুশ’ টাকার নিচে। এখনো ব্রয়লার মুরগির দাম দুশ’র ওপরে। একই সঙ্গে কক মুরগি ও লেয়ার মুরগির দামও আগের পর্যায়ে। বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানি ঈদ আসছে, সামনে মুরগির দাম কমবে।
|আরো খবর
অন্যদিকে আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়ে চলেছে আলু, পেঁয়াজ, রসুনের দাম। কোরবানির ঈদে এসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়ছে। আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা। শনিবার চাঁদপুরের বাজারে পাইকারি প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা ও আলু ৪৭-৪৮ টাকা বিক্রি হয়েছে। কয়েকটি সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে, আবার কমেছেও কয়েকটির। তবে বেশিরভাগ সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। বাজারে প্রতিনিয়ত বাড়ছেই নিত্যপণ্যের দাম।
চাঁদপুর শহরের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা ও পাইকারি উভয় বাজারে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। যখনই সরবরাহ কমে যায়, তখনই দাম বাড়ে। তিনদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দামও। হালিতে ৫ টাকা বেড়ে বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। গত ক’দিন ধরে বাড়তি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে বলে খুচরা ক্রেতারা জানিয়েছে।
আদার দামও বেড়েছে। খুচরায় কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বাজারভেদে দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। আর আমদানিকৃত আদা কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে দেশি রসুন, কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। খুচরা বাজারে এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ, বাজারভেদে কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।
দেশের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন বেশি হওয়ার পরও বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু, জাত ও মানভেদে কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।
কাঁচা পেঁপে শনিবারও চড়া দামে বিক্রি হয়েছে, বাজারভেদে কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। যদিও দুই সপ্তাহ আগে পণ্যটির কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়েছিল। এক মাস আগেও পণ্যটি বিক্রি হয়েছিল কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। এছাড়া বাজারে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। গোলাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে। বাজারভেদে ও মানভেদে পটল-ঢেঁড়স-চিচিঙ্গা-ঝিঙে-করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।
বাজারভেদে ভালো মানের দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৫০ টাকায়। এছাড়া মানভেদে মুগডাল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা আর খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। গতকাল বাজারে টমেটো ১০০, শসা ৬০-৮০, উচ্ছে ৬০, করলা ৬০, কাঁকরোল ৮০, পেঁপে ৫০-৬০, ঢেঁড়স ৬০, পটল ৫০-৮০, চিচিঙ্গা ৬০, ধুন্দল ৫০, ঝিঙা ৬, বরবটি ৬০, কচুর লতি ৮০, কচুমুখী ১০০-১২০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, কাঁচা মরিচ ২০০, ধনেপাতা ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-৭০, চাল কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
এদিকে আরেক বিক্রেতা সালাম বলেন, কোরবানির ঈদের আগে সাধারণত আদা রসুন পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়, এবারও বেড়েছে। ক’দিন পরে হয়তো আরও বেড়ে যাবে।
বাজার করতে আসা তোফায়েল বলেন, রসুনের দাম মনে হচ্ছে প্রতি সপ্তাহে ২০ টাকা করে বাড়ছে। আর হুট করেই আলু-পেঁয়াজের দামও বেড়ে গেলো। কোনো বিশেষ উৎসব সামনে থাকলে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এটা ঠিক নয়।
এদিকে সবকিছুর দাম বাড়লেও মুদিপণ্য রয়েছে অপরিবর্তিত। প্যাকেট পোলাওর চাল ১৫৫, খোলা পোলাওর চাল মানভেদে ১১০-১৪০, ছোট মসুর ডাল ১৪০, মোটা মসুর ডাল ১১০, বড় মুগ ডাল ১৬০, ছোট মুগ ডাল ১৮০, খেসারি ডাল ১২০, বুটের ডাল ১১৫, ডাবলি ৮০, ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭, খোলা সয়াবিন ১৪৭, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০, খোলা ঘি ১২৫০, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫, খোলা চিনি ১৩০, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির ঈদ ঘিরে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্যে বাজার মনিটরিং দরকার বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।