প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০:১১
নিষেধাজ্ঞা শেষ।। পুনরায় মাছ ধরা শুরু

প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত ২২ দিনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শেষে চাঁদপুর জেলার মেঘনা ও পদ্মা নদীতে পুনরায় মাছ ধরা শুরু হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর ২০২৫) দিবাগত মধ্য রাতের অপেক্ষা করতে হয়নি, কয়েক ঘণ্টার আগেভাগেই ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরতে নদীতে নেমে পড়েন জেলেরা।
|আরো খবর
গত ২২ দিনে অবসরের অন্ত ছিলো না অনেক জেলের। সেই সুযোগে তারা জাল, নৌকা মেরামতের কাজ শেষ করেছে। কার আগে কে নদীতে যাবে এমন প্রতিযোগিতায় মাছ শিকারে নদীতে ব্যস্ত স্থানীয় জেলেরা। প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে জালে, এমনটা আশা করছেন তারা। জেলেদের ক'জন জানান, এই নিষেধাজ্ঞার সময়ে ইলিশের বড়ো নৌকার জেলেরা সরকারের আইন মেনে নদীতে যায়নি। কিন্তু কারেন্ট ও সুতার জালের ছোট নৌকার জেলেরা নদীর সবদিক থেকেই কম-বেশি নেমেছে। এখন নিষেধাজ্ঞার সময় পার হলেও নদীতে তেমন মাছ নেই। তবুও নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার প্রথম দিন কিছু মাছ পাবার আশায় নদীতে আছেন। ক'দিন পর আবার জাল নৌকা উপরে তুলতে হবে, কারণ সিজন শেষ।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ জানান, তিন অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান -২০২৫-এর যে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, ২৫ অক্টোবর রাত ১২টায় তা শেষ হয়। দীর্ঘ ২২ দিনের এ কার্যক্রমটি চাঁদপুর জেলায় খুব সুন্দর এবং সুশৃঙ্খলভাবে শেষ হয়েছে। জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যগণসহ জেলা প্রশাসক বিভিন্ন জেলেপাড়ায় গিয়ে অনেক মতবিনিময় সভা ও জনসচেতনতা সভা করেছেন। জেলেদেরকে বোঝানো হয়েছে যে, ইলিশ নামক এই সম্পদটি তাদের এবং সম্পদটি রক্ষা করতে পারলে তাদেরই লাভ হবে। জেলেরাও সেটা বুঝতে পেরেছে, তারাও স্বতঃপ্রণোদিতভাবে নদীতে নামে নি। তারপরও আইন ভঙ্গ করে যে সকল জেলে নদীতে নেমেছে তারা শাস্তির আওতায় এসেছে। চাঁদপুর জেলায় ৬৭টি মোবাইল কোর্ট করা হয়েছে এবং ৪৬৭টি অভিযান পরিচালনা করে ৮৩টি মামলা করা হয়েছে। ১২৫ জনকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের সাথে সরকারের অনেক সংস্থা যেমন জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ, জেলা পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করার ফলেই এ সুফল পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছর একটা নির্ধারিত সময় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এর ধারাবাহিকতায় এ বছরও ৪-২৫ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মা ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্যে অভয়াশ্রম এলাকা ঘোষণা করা হয়। এসব এলাকায় নিবন্ধিত জেলে পরিবার হচ্ছে প্রায় ৪৫ হাজার ৬শ’ ১৫। এসব জেলেকে ২২ দিনের জন্যে ২৫ কেজি করে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল দিয়েছে সরকার।








