প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ২১:১৭
বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলেই হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধের বিকল্প নেই : বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের উদ্যোগে চাঁদপুর জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের অংশগ্রহণে আয়োজিত 'গণমাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা' বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আবদুল হাকিম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, চঞ্চল্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যে যে সংবাদ তৈরি করা হয় তা-ই হলুদ সাংবাদিকতা। হলুদ সাংবাদিকতা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাই হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধের কোনো বিকল্প নেই। আর বাংলাদেশের উন্নয়নে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকতা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। এ পেশায় আসতে হলে পড়াশোনা করতে হয়। সাংবাদিকতার অঙ্গনে শৃঙ্খলা সৃষ্টিতে সাংবাদিক ও সম্পাদকদের ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে। ডাটাবেইজ কার্যক্রম বেশ আগেই শুরু হলেও এখন পর্যন্ত সারাদেশ থেকে মাত্র ৩ হাজার ৫শ'টি ফরম পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৮শ' টি সঠিক হলেও বাকিগুলো ভুলে ভরা। তিনি জানান, প্রেস কাউন্সিল এখন পর্যন্ত প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রটি দেখছে। দ্রুতই ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়াকেও কাউন্সিলের আওতায় নেওয়ার চিন্তা চলছে। পেশায় যোগদানের আগে আইনজীবী ও চিকিৎসকদের সনদের প্রয়োজন হলেও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আজও সেটি করা হয়নি। তাই একজন সাংবাদিকের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, হলুদ সাংবাদিকতা নির্মূল করতে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল বেশ ক'টি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মূলধারার সাংবাদিকদের সংবাদ করতে গিয়ে যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয় সেজন্যে বর্তমানে সাংবাদিক হওয়ার আবেদন করলে তাকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে। তাছাড়া যারা স্নাতক পাস করেননি, কিন্তু ৫–১০ বছর ধরে কাজ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে তাদের কাজের শুরুর যোগদানপত্র উপস্থাপন করতে হবে। এছাড়া আগামীতে সাংবাদিকতা পেশায় কেউ আসতে চাইলে তাকে পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে–এমন সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। যে বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করবেন ওই বিষয়ের পিছনের তথ্য যাচাই করে দেখে নেবেন।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুপ্রভাত চাকমার সভাপ্রধানে ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনের সঞ্চালনায় এই কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব (উপ-সচিব) ও রিসোর্স পার্সন আব্দুস সবুর, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ ) মো. লুৎফর রহমান ।
প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ জালাল চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন মিলন ও শাহাদাত হোসেন শান্ত, সিনিয়র সহ-সভাপতি সোহেল রুশদী, সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, সহ-সভাপতি আলম পলাশ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল আউয়াল রুবেল, সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি ফারুক আহাম্মদ, এখন টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি তালহা জুবায়ের, চাঁদপুর জেলা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাওন পাটোয়ারী, দৈনিক চাঁদপুর দিগন্তের বার্তা সম্পাদক কে এম সালাউদ্দিন প্রমুখ।
কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার তপন চন্দ্র বেপারী।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জেলা সদরে কর্মরত টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়ার ৪০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণশেষে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের হাতে সনদপত্র তুলে দেয়া হয়। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সাবিক সহযোগিতা করা হয় ।