সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৫, ১৯:৫১

নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সনাক-টিআইবির মানববন্ধন

ধর্ষক তথা নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনকে অত্যন্ত কঠোর হওয়ার দাবি

ধর্ষক তথা নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনকে অত্যন্ত কঠোর হওয়ার দাবি
টিআইবি ও সনাকের আয়োজনে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছেন সনাক সভাপতি মো. আলমগীর পাটওয়ারী।
অনলাইন ডেস্ক

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও টিআইবি, চাঁদপুরের আয়োজনে ’নারী ও শিশু ধর্ষণ ও সহিংসতা : বিচার চাই নির্মূল কর, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’-এই প্রতিপাদ্যের ওপর নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৬ মার্চ ২০২৫) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে সনাক সভাপতি আলমগীর পাটওয়ারী বলেন, দেশের সর্বত্র নারী ও শিশু ধর্ষণ ও সহিংসতা প্রতিদিনের ঘটানায় পরিণত হয়েছে এবং দেখা যাচ্ছে যে, অপরাধীরা অনেকটাই সবার ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দেশবাসী প্রকৃতপক্ষে আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। তিনি বলেন, প্রতিটি প্রান্তিক পর্যায় থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে যেন কোনো ধর্ষণকারী ছাড় পেতে না পারে। বেশিরভাগ নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত প্রভাব খাটিয়ে মুক্তি পেয়ে যায়। এছাড়াও গ্রামীণ সালিসের মাধ্যমে অনেকক্ষেত্রে ধামাচাপা দেয়া হয়। তিনি ধর্ষক তথা নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনকে অত্যন্ত কঠোর হওয়ার দাবি জানান। তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সকলের প্রতি ধর্মীয় ও পারিবারিক শিক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সনাক, ইয়েস ও অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপের সদস্যগণ সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। তিনি মানববন্ধনে উপস্থিত হওয়ার জন্যে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান।

অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপের সমন্বয়ক মো. জাকির হোসেন বলেন, বর্তমান সময়ে সারাদেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, শিশু আছিয়ার ঘটনা সারাদেশকে আলোড়িত করেছে। তিনি প্রশাসনকে এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে এবং কঠোরভাবে তা প্রতিহত করার আহ্বান জানান এবং সকল ধরনের সহিংসতায় দোষীদের দ্রুততম সময়ে বিচার দাবি করেন।

মানববন্ধনের ওপর ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ইয়েস সদস্য শৈলী দাস রূপালি। বক্তব্য রাখেন ইয়েস গ্রুপের সাবেক দলনেতা খায়রুল আলম। এছাড়াও সনাকের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট পলাশ মজুমদার, সনাক সদস্য মোহাম্মদ আসিফ-উল-ইসলাম, ইয়েস, এসিজি গ্রুপ সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জেন্ডার সমতা, নারীর ক্ষমতায়নে সনাক, ইয়েস, এসিজি ও টিআইবি সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলো হচ্ছে : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও 'নতুন বাংলাদেশ'-এর মূল চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং সব ধরনের যৌন নির্যাতন, সহিংসতা ও বৈষম্য প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এসব অপরাধের সাথে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি অপরাধের শিকার পরিবারকে সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা; সকল ক্ষেত্রে ও পর্যায়ে নারীর অধিকার নিশ্চত করা এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন সংস্কার ও বিদ্যমান আইনসমূহের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা; শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্র সহ সকল পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে নারীর নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করা; সকল রাজনৈতিক দল ও তাদের অঙ্গ সংগঠন, পেশাজীবী সংস্থা, সকল প্রকার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নারী-পুরুষের সমঅধিকার ও সমমর্যাদার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ঘোষণাসহ চর্চা প্রতিষ্ঠার সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া, টেকসই উন্নয়ন অর্জনের কর্মপরিকল্পনায় অভীষ্ট-৫ (জেন্ডার সমতা) ও ১৬ (শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান)কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধের পূর্বশর্ত হিসেবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণসহ আইনের শাসন নিশ্চিত করা; নারীর প্রতি সহিংসতা ও নানা অজুহাতে যত্রতত্র হেনস্তা রোধে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি রাষ্ট্রকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন; নারী ও শিশু নির্যাতনসহ সকল প্রকার নারী অধিকার হরণের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ করে প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার ব্যবস্থায় দুর্নীতি প্রতিরোধ, শুদ্ধাচার, জবাবদিহিতা ও সার্বিক সুশাসন নিশ্চিত করা; জেন্ডার সমতা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নারীর অভিগম্যতা নিশ্চিত, ইন্টারনেট ও প্রয়োজনীয় ইলেকট্রিক ডিভাইস সুলভ করা এবং বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করা; অনলাইনের সহিংসতা ও নির্যাতন থেকে নারীর সুরক্ষা নিশ্চিতে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিশেষায়িত জাতীয় কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা; যে সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাঙ্গনে বা সমাজে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করছেন, তাদের উৎসাহিত করা, সঠিক প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদান করা; মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সকল প্রতিষ্ঠানে অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখার নিশ্চয়তা সহ নারীবান্ধব অভিযোগ প্রদান ও নিরসনের ব্যবস্থা থাকা; নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি বন্ধে ব্যক্তির রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থান, মর্যাদা ও প্রভাব বিবেচনা না করে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাগুলোর দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করা; নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ ও নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতে সাধারণ জনগণের ইতিবাচক মানসিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কার্যকর প্রচারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা; জাতীয় হেল্পলাইন ও অভিযোগ জানানোর হটলাইন নম্বরগুলোর প্রচার ও কার্যকরতা বৃদ্ধি করা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়