প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫, ২০:৪০
চাঁদপুর ইলিশ অভয়াশ্রমে জাটকা রক্ষা অভিযানে নৌ র্যালি

‘জাটকা মাছ রক্ষা পেলে, বারো মাস ইলিশ মেলে’ এই স্লোগানে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকা রক্ষা অভিযান (১ মার্চ হতে ৩০ এপ্রিল ২০২৫) উপলক্ষে সচেতনতামূলক সভা ও নৌ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় ২৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের চেয়ে ছোট ইলিশ, যেটি 'জাটকা' নামে পরিচিত, সেটির সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।
রোববার (২ মার্চ ২০২৫ ) বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় 'ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ বছরের জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব, নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, চাঁদপুর-এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আমিরুল ইসলাম, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত, কোস্ট গার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার সাব লেফটেন্যান্ট মো. ফজলুল হক। সভায়
সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান।
সভায় বক্তারা ২৫ সেন্টিমিটারের চেয়ে ছোট ইলিশ সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং মার্চ-এপ্রিল দুমাস জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম সফল করতে সকলকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসক জেলেদের উদ্দেশ্যে বলেন, নদীর পাড়ের যেসব জেলে ভাই আছেন,
নদী হলো আপনার সম্পদ। এই নদীতে যদি মাছ না থাকে, আপনার পরিবার/সংসার চলবে কীভাবে? তাই আমি বলবো, সন্তানের মতো নদীকে লালন পালন করেন। নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকেন। আপনাদের টাকা পয়সা, ব্যাংক ব্যালেন্স, আয় রোজগারের একমাত্র পথ এই নদী। আমরা চাই না কোনো জেলেকে জরিমানা করি, জেল দেই।
তিনি জেলেদেরকে দুই মাস মাছধরা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। আর এই দুই মাসের জায়গায় সরকার আপনাদেরকে চার মাস ১৬০ কেজি করে চাল দিচ্ছে।
পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর এই সুনাম জেলেদেরই ধরে রাখতে হবে। ইলিশের অভয়াশ্রমে নিজের বাড়িতে ইলিশ নিরাপদ থাকবে, বাধাপ্রাপ্ত হবে না। জেলেদেরকে ধৈর্য ধারণ করে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করতে হবে।
নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানান, নিষিদ্ধ সময়ে কোনো জেলে যেনো অভয়াশ্রম এলাকায় নদীতে মাছ ধরতে না নামে তা নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারি থাকবে। আইন অমান্য করে কেউ মাছ ধরতে নদীতে নামলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযানের শুরুর দিন আইন অমান্য করে মৎস্য শিকারের কারণে দুটি মামলায় ৪ জন গ্রেফতার হয়েছে ।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলে পাড়ার মানুষ, মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে জেলা প্রশাসন, নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ড ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও সদস্যরা একসঙ্গে মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় নৌ র্যালিতে অংশ নেন।