প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:১২
তালাকপ্রাপ্ত নারীকে ধর্ষণ : গ্রেপ্তার ১
চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের পশ্চিম হোসেনপুর গ্রামে রুজিনা বেগম (৩৬) নামে তালাকপ্রাপ্তা এক নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় হাশিম মিজি (৫৮) নামে এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি ২০২৫) সকালে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন ধর্ষণের শিকার রুজিনা বেগম। এর আগে রোববার (১২ জানুয়ারি ২০২৫) রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে আসামী হাশিম মিজিকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আওলাদ হোসেন রিকাবদার।
ধর্ষণের শিকার রুজিনা বেগম পশ্চিম হোসেনপুর মিজি বাড়ির আব্দুর রহমান মিজির মেয়ে। আর আসামী হাশিম মিজি একই বাড়ির মৃত মোহাম্মদ মিজির ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, আসামী হাশিম মিজির স্ত্রী গত ৩ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। আর ধর্ষণের শিকার রুজিনা বেগমের স্বামীর সাথে গত ১৩ বছর পূর্বে তালাক হয়। রুজিনা বেগমের ১৬ বছর বয়সী কন্যা সন্তান আছে। তালাকের পর থেকে রুজিনা বাবার বাড়িতে থাকেন। আসামী হাশিম মিজির স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে রুজিনাকে তিনি প্রায় সময় বিয়ের প্রস্তাব দিতেন। এরই মাঝে গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর রাতের বেলায় রুজিনা প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাইরের বাথরুমে গেলে ওই সময় নীরবে হাশিম মিজি তার শয়ন কক্ষে অবস্থান নেয়। পরে রোজিনা ঘরে আসলে হাশিম মিজি দরজা বন্ধ করে বিয়ের আশ্বাসে রুজিনার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। এই ঘটনার পর রুজিনা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এরপর থেকে রুজিনা হাশিম মিজিকে বিয়ের জন্যে বললে টালবাহানা শুরু করে। তাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্যে বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করে এবং সন্তান নষ্ট কলে তাকে বিয়ে করবে বলে জানায়। হাশিম মিজি ও রুজিনার স্বজন এবং এলাকার দুষ্টু প্রকৃতির সংঘবদ্ধ একটি চক্র বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। যার ফলে রুজিনা বেগম নিরূপায় হয়ে দেরিতে হলেও থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আশিকাটি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ পশ্চিম হোসেনপুর এলাকার সম্ভাব্য মেম্বার পার্থী মাসুদ মালের নেতৃত্বে ইউনিয়নের রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কাজী আশরাফুল ইসলাম রিপন, যুব নেতা বারেক খানসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র আসামী হাশিম মিজির পক্ষ নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে হাশিম মিজির সাথে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আছে। স্থানীয়দের দাবি, এই বিষয়ে তদন্ত করলে ধর্ষণের ঘটনার প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আওলাদ হোসেন রিকাবদার জানান, মামলার বাদী রুজিনা বেগম আত্মসম্মানের ভয়ে বিষয়টি এতোদিন গোপন রাখেন। এছাড়া আসামী তাকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে আসছিলো। গর্ভের অনাগত সন্তান যে কোনো সময় নষ্ট করে দিতে পারে শঙ্কায় তিনি মামলা করেন।