প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৬
মশার উপদ্রবে চাঁদপুর পৌরবাসী, বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী
চাঁদপুর শহরে মশার উপদ্রবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। মশার কামড়ে মানুষের যন্ত্রণার যেন শেষ নেই। মশা নিধনের কার্যকর তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভিন্ন ওয়ার্ডে তারা মশা নিধনের ওষুধ ছিটাচ্ছে এবং ড্রেন, ডাস্টবিনের ময়লা- আবর্জনা পরিষ্কার রাখছে।
|আরো খবর
ভুক্তভোগী পৌরবাসী বলছে, আমাদের জনজীবন মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ। কয়েল, অ্যারোসল, বৈদ্যুতিক ব্যাট কিছুতেই মশাকে বশ করা যাচ্ছে না। দরজা-জানালা খুললেই ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ঢুকে পড়ে ঘরে। মশার উপদ্রবে রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট, হাসপাতাল, ধর্মীয় উপাসনালয়সহ কর্মস্থলে অবস্থান করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে শহরবাসী। এমনিতেই ড্রেন- রাস্তাঘাটের দুরবস্থায় ক্ষোভ বিরাজ করছে পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতি। তার ওপর মশার উপদ্রব। বর্তমান সময়গুলোতে পৌরবাসীর ভোগান্তির এবং কষ্টের শেষ নেই।
এদিকে চাঁদপুর শহরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। বিশেষ করে পুরাণবাজার মোম ফ্যাক্টরি রিফিউজি কলোনি, মধ্যশ্রীরামদী, বাজার এলাকার দুধহাটায় ঘরে ঘরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষ ভুগছে। এই ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাদ যায়নি বাজারের দোকান শ্রমিক কর্মচারীরাও। এমন অবস্থা আর কখনও দেখা যায়নি।
বাতাসা পট্টির আবুল বাশার নামে এক মুদি ব্যবসায়ী জানান, জয়রাম ভান্ডারের বাবুল ও রাতুল, আনোয়ারা রাইসের রাসেল, সুলতান স্টোরের সুলতান, আনন্দময়ী ভান্ডারের দুজনসহ এখন অনেকেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। এর আগে রিফিউজি কলোনি, বাকালি পট্টির অনেকে ডেঙ্গু জ্বরে দীর্ঘদিন ভুগেছিল। চিকিৎসা নেওয়ার পর তারা কিছুটা সুস্থ হয়েছে বলে জানান রমনী মোহন রোডের সেলুন ব্যবসায়ী মিঠুন শেখ।
আড়াইশ' শয্যার চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক একেএম মাহাবুবুর রহমান জানান, এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেক রোগী হাসপাতালে এসেছে। তাদের আমরা যথাযথ চিকিৎসা দিয়েছি এবং দিচ্ছি। তিনি বলেন, এ বছর প্রায় পাঁচ শতাধিক ডেঙ্গু রোগী আমরা দেখেছি। আজকে ( বুধবার) সাতজন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো রোগী চাঁদপুরে মারা যায়নি। পৌরবাসী বলছে, শহরের বিভিন্ন আবাসিক, ব্যবসায়িক ও ঘনবসতি এলাকায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ঝোপঝাড়, জঙ্গল, ড্রেন নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। পৌরসভার খাল নালা, স্ল্যাববিহীন ড্রেন, খোলা ডাস্টবিনে, ময়লা-আবর্জনার কারণে জমে থাকা পানি থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা। মশার আক্রমণ থেকে বাঁচতে দুপুর থেকেই কয়েল জ্বালানো অথবা মশা নিধনের ওষুধ স্প্রে করতে হচ্ছে। আগে পৌরসভার উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় মশা নিধনের ওষুধ স্প্রে করা হলেও এবার তেমন একটা করতে দেখা যায়নি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের খেয়াল খুশিমতো মশা নিধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হয় না।
বুধবার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার রাস্তার পাশে বাজারের বিভিন্ন স্থান, ঘনবসতির পাড়া মহল্লাগুলোতে আবাসিক এলাকায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে। অনেক এলাকার ঝোঁপঝাড়, জঙ্গল, ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বাড়ছে। ড্রেনগুলোতে পানি প্রবাহ না থাকায় ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। অনেক এলাকার ড্রেন লাইনের ঢাকনা নেই।