প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২১, ২১:৪৬
প্রধানমন্ত্রীর জমি ও ঘর পেল হাজীগঞ্জের ৯ পরিবার
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া জমি ও ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত হাজীগঞ্জের ৯ পরিবার। মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় হাজীগঞ্জের ৯টি পরিবারের মাঝে এই ঘর দেয়া হয়। জমি আর ঘর একত্রে পেয়ে ঈদের ছেয়ে হাজার গুন বেশী আনন্দে রয়েছে পরিবারগুলো। যাদের ঘরই ছিলো না তারা জমিসহ ঘর পেয়ে এতোটাই আবেগ আপ্লুত যে, আনন্দের মধ্যে ও তাদের চোখের পানি চলে আসে।
সরজমিনের উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া জমিসহ সেমিপাকা ঘরগুলো একেকটি যেন একেকটি পরিবারের স্বপ্ন,আশা আর ভরসা। দুই কক্ষ বিশিষ্ট শুধু ঘরই নয়, ঘরের সাথে রয়েছে বারান্দা, রান্নাঘর ও টয়লেট, বিদ্যুৎ সংযোগসহ সুপেয় পানির ব্যবস্থা। যা কয়েকদিন আগে এই পরিবারগুলোর কাছে ছিলো নিতান্তই স্বপ্ন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ১ম পর্যায়ে ৫টি বরাদ্দ ঘর নির্মাণ করা হয়। যার প্রতিটি ঘরের জন্য ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর প্রতি ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দে ৪ টি ঘর নির্মিত হয়েছে। উপজেলার গ্রোথ সেন্টার থেকে নিকটবর্তী স্থানে যাতায়াতের সুবিধা আছে এমন ২ শতক জমিতে নির্মিত ইটের প্রতিটি ঘরে রয়েছে বারান্দাসহ ২টি কক্ষ, ১টি রান্না ঘর, ১টি টয়লেট ও ১ টি রান্না ঘরের ব্যবস্থা। এছাড়াও রয়েছে সুপেয় পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। জমিসহ ঘর পেয়ে বেজায় খুশি ফারুক হোসেন, সোহেল ও ইমান হোসেনের পরিবার।
এই সকল ব্যক্তির পরিবারের সবাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ঘর দেয়া থেকে শুরু করে সার্বিক খোঁজখবর নেয়া হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তারকে তারা চিনেন এবং তার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান পরিবারগুলো।
কৃষক ফারুক হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম জানান, তাদেও নিজস্ব বলতে কোন ভূমি ছিলো না। তাই ২ মেয়ে ও ১ ছেলেসহ থাকতেন অন্যের বাড়িতে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ২ শতাংশ জমিসহ সেমিপাকা (দালান) ঘরের মালিক হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করবো জানিনা। তবে, তার জন্য দোয়া করি। আল্লাহ্ যেন তাকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করেন।
উপকারভোগী আরেকজন পারভীন বেগম জানান, নিজস্ব সম্পদ না থাকায় ছিলো না মাথা গোঁজার ঠাঁই। তাই ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ভাড়া বাড়িতে। সিএনজি স্কুটার চালক স্বামী সড়ক দূর্ঘটনায় স্বামী মারাত্মক আহত হলে, মাথায় যেন তার আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। ঘরভাড়া দেওয়া-তো দূরের কথা, দু-বেলার খাওয়া যোগাতেই কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই দূশ্চিন্তায় তিনি কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছেন তার হিসেব নেই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্রকৌশলী মো. জাকির হোসাইন জানান, হাজীগঞ্জে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের কার্যক্রম চলমান। এর মধ্যে আমরা ভূমিহীন ও গৃহহীন ৯ পরিবারকে পূর্নবাসন করেছি। জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ এবং গনমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতায় সততা এবং স্বচ্ছতার সাথে পরবর্তী কাজগুলোও সমাপ্ত করতে পারবো বলে আশা রাখি।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার চাঁদপুর কন্ঠকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সু-যোগ্য কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের সহযোগিতায় এবং জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আমাদের টীমের প্রতিটি সদস্য এই কাজটি মন থেকে ভালোবেসে, সততা এবং স্বচ্ছতার সাথে করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ঘর করতে গিয়ে খাস জমি নির্বাচন, ঘর নির্মান এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মালিকানার দলিলাদি হস্তান্তর করা পর্যন্ত এই মহতী কাজের প্রতিটি পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সম্মিলিত প্রয়াসের ফলেই ইতিমধ্যে এই ৯টি পরিবারকে আমরা জমিসহ ঘর বুঝিয়ে দিতে পেরেছি।