প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
পশ্চিম সকদী ডিবি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মানবিকতা
মানুষ মানুষের জন্যে এ প্রবাদ বাক্যটির সাথে তাল মিলিয়ে মানবিকতার কাজটুকু করেছে পশ্চিম সকদী ডিবি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। টাকা ও ক্ষমতা থাকলেও সবাই মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। আবার ইচ্ছে থাকলেও অর্থের অভাবে অনেকে মানবিক কাজ করতে পারে না। সম্প্রতি এক মানবিক কাজ করেছে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদী ডিবি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, বিদ্যালয়ের আয়া জোসনা বেগম (৫৯) বছর। তিনি বিদ্যালয়ে আয়ার চাকুরি করে আসছেন। আর ১ মাস পরে তিনি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করবেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস প্রায় ১ বছর হবে তিনি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হন। সুস্থভাবে চাকুরি শেষ করে কর্মস্থল থেকে ফিরতে পারলেন না। অসুস্থ অবস্থায় হুইল চেয়ারে বসে কর্মস্থল থেকে ফিরতে হবে। অসুস্থ হয়েও তিনি হুইল চেয়ারে বসে বিদ্যালয়ে আসেন। কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। খাতায় স্বাক্ষর করেন। তার দায়িত্বটুকু তার নিজ সন্তান মোঃ কালু হাজী করে যান। এ চাকুরির বেতন না থাকলে হয়তো তার ঔষধ খরচ তাঁর ছেলের পক্ষে মেটানো সম্ভব হবে না। এ মানবিক কাজটুকু করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জোসনা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম কমান্ডার হারুন চৌধুরী আমাকে চাকরি দিয়েছেন, আল্লাহ তাঁকে বেহেশত দান করেন। আমি তাঁর জন্য দোয়া করি। আর বর্তমানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ যারা আমাকে সহায়তা করেছেন আমি তাদের জন্য দোয়া করি। অন্য কেউ আমাকে সহায়তা করে না। সরকারি কোষাগারের বেতন তুলে আমার চিকিৎসা ও ঔষধ চলে। আমি সরকারকে ও দোয়া করি। বর্তমানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যারা দায়িত্বে রয়েছেন আল্লাহ সবাইকে সুস্থ ভালো রাখেন। তাদের মানসম্মান বাড়িয়ে দেন।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ সুমন বলেন, জোসনা বেগম অসহায়। মানবিকতা চিন্তা করে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির সকলকে নিয়ে আলোচনা করে তার ছেলেকে দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে সহযোগিতা করেছি। এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষও জানেন।
এ বেতনের টাকা জোসনা বেগমের চিকিৎসা ও ঔষধ খরচ চলে আসছে। জোসনা বেগম হুইল চেয়ারে বসে বিদ্যালয়ে আসেন এবং হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। আর ১ মাস পরে তিনি চাকুরি থেকে অবসর নেবেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হান্নানুর রহমান বলেন, ম্যানেজিং কমিটি ও সকাল শিক্ষক শিক্ষিকা মিলে আলোচনা করে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে জোসনা বেগমের দায়িত্ব তার ছেলেকে দিয়ে পালন করার জন্য বলেছি। তিনি প্রায় ১ বছর ধরে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত বলে মানবিক দিক বিবেচনা করে তার দায়িত্ব তার ছেলেকে পালন করতে দেয়া হয়েছে। জোসনা হুইল চেয়ারে বসে বিদ্যালয়ে আসে এবং হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে কিছু সময় থেকে চলে যান।