প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলকে ঘিরে চাঁদপুর নদী বন্দর। ব্যবসা-বাণিজ্যের এই বন্দরে রয়েছে একাধিক কার্গো, ট্রলার ও খেয়াঘাট। শহররক্ষা বাঁধের বড়স্টেশন মোলহেড ও পুরাণবাজার ব্যবসায়ী এলাকার ট্রলার ও খেয়াঘাট জুড়ে এখন বিরাজ করছে কচুরিপানার ব্যাপক জট।
এ স্থান দিয়ে নদী ও খাল-বিলের কচুরিপানা ভেসে এসে আটকে থাকায় নৌযান চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের। ব্যবসায়িক কাজে শহরের এপার-ওপার চলাচলে বহু মানুষকে নদী পারাপারে খেয়া নৌকা পাড়ি দিতে হয়।
অপরদিকে, মেঘনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মানুষের একমাত্র চলাচলের ভরসা নৌপথ। কিন্তু নির্মম পরিহাস, মাথায় হাত রেখে বিধাতাকে দোষারোপ করা ছাড়া আর কিছুই যেন করার নেই ট্রলার ও খেয়া পারাপারের যাত্রীদের। কচুরিপানা এমনভাবে আটকে আছে, যার ভেতর দিয়ে নৌযান চলাচল একেবারেই অসম্ভব।
সোমবার বিকেলে সরজমিনে দেখা যায়, ডাকাতিয়া নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকা কচুরিপানায় ছেয়ে গেছে। এতে এই নদীতে লঞ্চ, কার্গো, ট্রলারসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রায়শ বিকল হচ্ছে নৌযানের ইঞ্জিন। নৌযান চালকেরা বলছেন, কচুরিপানার জন্যে যাতায়াত করতে সময় বেশি লাগছে। অথচ কচুরিপানার জট সরাতে উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
১নং খেয়াঘাটের নৌকার মাঝি সেরাজল জানান, গত দুদিন যাবৎ এখানে প্রচুর কচুরিপানা জমে থাকছে। নদীতে ভাটার সময় কচুরিপানার জট লেগে থাকায় ইঞ্জিনচালিত নৌকা চালিয়েও এপাড় থেকে অপর পাড়ে যাওয়া যাচ্ছে না। আমরা কচুরিপানার কারণে অত্যন্ত দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। নদী পারাপারে অনেক সময় চলে যায়।
ভূঁইয়ার ঘাটের মান্নান মাঝির কার্গোর সুকানি (চালক) মোঃ আমিন বলেন, কচুরিপানা ঠেলতে ঠেলতে ঘাটে ভিড়তে হচ্ছে। বর্ষার খালবিলের কচুরিপানা এখন নদীতে নেমে আসায় এ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
পুরাণবাজার মদিনা মসজিদ ট্রলার ঘাটের সোবহান মাঝি জানান, প্রতিদিন চরের শতাধিক ট্রলার মালামাল নিতে এবং যাত্রী পারাপারে বন্দরে আসা-যাওয়া করে।
মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর টেকের ঘাট, টিনবাজার, ১নং ঘাট, ভূঁইয়া ঘাট, বড়স্টেশন মাছঘাট এলাকায় অনেক কচুরিপানা। কচুরিপানা পেঁচিয়ে ট্রলার-নৌকা, স্পিডবোটের ইঞ্জিন ও পাখা প্রায়ই বিকল হয়। এই কচুরিপানা বড় নদীতে কিছু নামলেও আবার এসে জট লেগে যায়। কচুরিপানা অপসারণে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নেয়া দরকার। তা না হলে সামনের দিনগুলোতে আরো সমস্যা হবে।
পুরাণবাজার চাউল পট্টির ব্যবসায়ী কাউছার জানান, ব্যবসায়িক কাজে প্রতিদিনই এখান দিয়ে নদী পার হতে হয়। ইদানিং কচুরিপানা জমে নৌকা আটকে যাচ্ছে। নদী পারাপারে অনেক দুর্ভোগ হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পৌর মেয়র, বিআইডব্লিউটিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর-এর সমন্বিত সুদৃষ্টি কামনা করেছেন কার্গো, ট্রলার, নৌকার চালক ও ভুক্তভোগী খেয়া যাত্রী সাধারণ।