প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুরজুড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। শুক্রবার ভোররাত থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। সারাদিন বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়। শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় চাঁদপুরে ২১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। বিকেল ৩টার পর চাঁদপুরে ঝড়ো বাতাসের গতি বাড়তে থাকে। যেটিকে ঘূর্ণিঝড় বলা যেতে পারে। তখন বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ছিল।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাঁদপুরের অভ্যন্তরীণ রুটে সবধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ-এর চাঁদপুর নদীবন্দর কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, সকালে ছোট লঞ্চগুলো বন্ধ করা হলেও সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ঢাকা-চাঁদপুর, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ চাঁদপুর থেকে সকল রুটের লঞ্চ ও নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তিনি আরো জানান, চাঁদপুরকে ৩ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখানো হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৭ ও ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ খুলনা ও বরিশালের মাঝখান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির অগ্রভাগ দুপুর ১২টা থেকে মোংলা ও পায়রা উপকূল অতিক্রম শুরু করে। ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ কিছুটা বাড়ে। ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার বেগে এটি এগিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম শেষ করে।
চাঁদপুর লঞ্চঘাটের দায়িত্বরত নৌ পথ পরিদর্শক (টিআই) শাহ আলম জানান, ভোর ৬টা থেকে নির্ধারিত সময়ে এমভি আফিয়া, এমভি সোনার তরী-৩, এমভি ঈগল-৭, এমভি বোগদাদিয়া লঞ্চ চাঁদপুর ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ১০টা ৪০ মিনিটে সব লঞ্চ বন্ধ হয়ে যায়। সকাল থেকে লঞ্চগুলো ছেড়ে গেলেও যাত্রীর সংখ্যা ছিলো খুবই কম।
চাঁদপুরের আবহাওয়া কর্মকর্তা মোঃ শামসুল আলম জানান, শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় চাঁদপুরে ২১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা রড। শুক্রবার জুমার নামাজের পর চাঁদপুরে বৃষ্টির পরিমাণ ও বাতাসের গতি আরো বেড়েছে।
তিনি জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিট থেকে চাঁদপুরে বাতাসের গতি বাড়তে থাকে। যা অনেকটা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। তখন বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। এদিকে বিকেলের ঝড়ে চাঁদপুরের বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে পড়েছে।