প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
মুখে সাদা দাড়ি, মাথায় টুপি। গায়ে ফুলহাতা গেঞ্জি। বয়স অবশ্যই ষাটোর্ধ্ব। পেশায় রিকশাচালক। রিকশা চালাতে চালাতে উচ্চ স্বরে আল্লাহকে ডাকেন। আর স্বগতোক্তি করেন নিজের কষ্টকর দিনযাপন নিয়ে। এতে যাত্রীর বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় এমন চালকের প্রতি। গন্তব্যে পৌঁছে যাত্রী নির্দিষ্ট ভাড়া দেয়ার আগেই কাচুমাচু করে বৃদ্ধ চালকটি বাবা/মা /স্যার/ ম্যাডাম সম্বোধন করে বলেন, আমার লুঙ্গির অবস্থা দেখুন। আপনি একটি লুঙ্গি কেনার টাকা দিলে ভালোভাবে নামাজ পড়ে আপনার জন্যে দোয়া করতে পারতাম। তার এমন কথায় চিত্তে-বিত্তে সামর্থ্যবান কোনো কোনো যাত্রী একটি লুঙ্গি কেনার টাকা পুরোটাই দিয়ে দেন, আর কেউ কেউ ২০-৫০-১০০ টাকা দিয়ে চলে যান।
কিন্তু সময়ান্তরে এই বৃদ্ধই যখন একইভাবে একই যাত্রীদের কাছে অর্থাৎ পূর্বে তার রিকশায় চড়েছেন এমন যাত্রীদের কাছে লুঙ্গি কেনার টাকা চান, তখন ঐ যাত্রীদের কেউ বলেন, ওই মিয়া, আপনারে না সেদিন একটি লুঙ্গি কেনার পুরো টাকাটাই দিলাম, এখন আবার কিসের টাকা? বাটপারির জায়গা পান না? আবার পূর্বে লুঙ্গির জন্যে খুচরা দান করেছেন এমন যাত্রীদের কেউ কেউ বিরক্ত হয়ে বলেন, আরে মিয়া, আপনার লুঙ্গি কিনতে কয় টাকা লাগে? বারে বারে টাকা চান! আবার বিরক্ত হয়ে কোনো কোনো যাত্রী বলেন, আপনারে ভালো কইরাই চিনি, টাকা কামাইবার ভালোই ফিকির ধরছেন দেহি।
এই বৃদ্ধ রিকশা চালককে চাঁদপুর শহরে দেখা যাচ্ছে গত ক’বছর ধরেই। তার লুঙ্গি কেনার আরজি আর কতোদিন চলবে সেটা আল্লাহই ভালো জানেন।