চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই চাঁদপুর শহরের কবি নজরুল সড়কস্থ পৌর পার্কে দুটি গেট, বেশ কিছু স্টল, অনুষ্ঠানের জন্যে প্যান্ডেল, মঞ্চ ও আসন পেতে রেখে প্রচার সামগ্রী সাঁটানো হয়েছে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অবধি আলোকসজ্জায় পৌর পার্ককে করে রাখা হয় দৃষ্টিনন্দন। মূল সড়কেও করা হয়েছে গেট। কৌতূহলী ব্যক্তিমাত্রই কাছে গিয়ে প্রচার সামগ্রী পড়ে দেখে, একটি অর্গানিক খাদ্য ও পণ্য মেলার জন্যে পৌর পার্কে এমন আয়োজন।

এই মেলার শ্লোগান হচ্ছে ‘ভেজাল ও বিষপণ্যের সময় শেষ/অর্গানিকে বাংলাদেশ’। এটির আয়োজক হিসেবে গেটে লিখা রয়েছে--বাংলাদেশ অর্গানিক ফারমার্স এন্ড রিটেইলার্স এসোসিয়েশন, চাঁদপুর জেলা কমিটি। কর্মসূচিতে উল্লেখ আছে--অর্গানিক খাদ্যপণ্যের সমাহার, অর্গানিক সেমিনার, গুণীজন সম্মাননা, বাচ্চাদের বিনোদন, খাবার দাবার। আরো লিখা আছে, দোকান বরাদ্দের জন্য আজই যোগাযোগ করুন। আগামী ফেব্রুয়ারি ২০২৩ মেলাটি শুরু হবে বলে গেটের লেখায় বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু চলতি ফেব্রুয়ারির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সময় পার হতো চললো, তবুও আগামী শব্দটি মোছা হলো না, আর মেলাও উদ্বোধন হলো না। অথচ প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সম্মুখভাগে আলোকসজ্জার সাথে সাথে প্যান্ডেল ও মঞ্চে বাতি জ্বলছেই। মনে হচ্ছে, কারো জন্যে আয়োজকরা নিরন্তর অপেক্ষা করেই চলছেন। তবে মেলায় একটি দোকানও নেই, মানুষও নেই।

অর্গানিক বলতে বোঝায় জৈব। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগে উৎপাদিত ফসল তথা কৃষিপণ্য স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর বলে খাদ্য বিশেষজ্ঞ বিশেষ করে নিরাপদ খাদ্যের প্রবক্তারা যখন সোচ্চার, তখন ভোক্তারা জৈব সার (গোবর, সবুজ সার, খৈল, কম্পোস্ট ইত্যাদি)-এর প্রয়োগে উৎপাদিত ফসলের দিকেই ঝোঁকার চেষ্টা করছে বা প্রবণতা দেখাচ্ছে। এমতাবস্থায় অর্গানিক খাদ্য ও পণ্য মেলার প্রয়োজনীয়তা খাদ্য-সচেতন ব্যক্তিমাত্রই উপলব্ধি করছেন। অথচ চাঁদপুরে সে মেলা আয়োজনের জন্যে অপেক্ষার যন্ত্রণা ও অদ্ভূত প্রচার কেনো করতে হবে সেটা পর্যবেক্ষকদের মাথায় ঢুকছে না।