শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি : প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মুখোমুখি -১৬

প্রাণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই পূর্তি মনে ব্যাপক আনন্দের জোগান দিয়েছে

----মোঃ সাইফুল ইসলাম

প্রাণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই পূর্তি মনে ব্যাপক আনন্দের জোগান দিয়েছে
আলআমিন হোসাইন ॥

মোঃ সাইফুল ইসলাম। চাঁদপুর জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ আল-আমিন একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ। বর্ণাঢ্য শিক্ষকতা জীবনের অধিকারী তিনি। প্রায় ৩০ বছর পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজে কৃষিশিক্ষা বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত ছিলেন। শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ছিলেন। শিক্ষাজীবনে চাঁদপুর সরকারি হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি এজি (অনার্স) ও এমএসসি এজি (এগ্রোনমি) ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি একজন কৃষিবিদ।

‘চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি : প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মুখোমুখি’ শীর্ষক দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার পর্বে আজ তাঁর অভিব্যক্তি তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সম্পর্কে জানতে চাই।

মোঃ সাইফুল ইসলাম : আমার জন্ম চাঁদপুর শহরে। মতলব উত্তর উপজেলায় আমার পৈত্রিক নিবাস। বাবা পুরানবাজারস্থ ডব্লিউ রহমান জুট মিলে অ্যাকাউন্টস্ অফিসার ছিলেন। সে সুবাদে এ শহরেই আমার বেড়ে ওঠা।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কত সালে, কোন্ শ্রেণিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন?

মোঃ সাইফুল ইসলাম : চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমার প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি। হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করি। ১৯৮২-১৯৮৩ সেশনে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হই। এ কলেজ থেকে ১৯৮৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি সম্পন্ন করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সে সময় কলেজের পরিবেশ কেমন ছিলো?

মোঃ সাইফুল ইসলাম : তৎকালে অধ্যক্ষ ছিলেন এ. ডব্লিউ. এম. তোয়াহা মিয়া। কলেজের পরিবেশ ছিলো নির্মল। সবুজ ছায়াঘেরা বিশাল ক্যাম্পাসে মনের আনন্দে পড়াশোনা করতাম। বিপুল বইসমৃদ্ধ লাইব্রেরি ছিলো। বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসহ সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমে আমরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিতাম।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় শিক্ষক এবং সহপাঠী ছিলেন কারা? তাদের সম্পর্কে কিছু বলুন।

মোঃ সাইফুল ইসলাম : শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিলো মধুর। সব শিক্ষকই আমার প্রিয় ছিলেন। শিক্ষকবৃন্দ যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে আমাদের পাঠদান করতেন। ফলে আমরা ক্লাসের পড়া ক্লাসেই সম্পন্ন করে ফেলতাম। আমাদেরকে প্রাইভেট পড়তে হয়নি। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের তাজুল ইসলাম স্যার, প্রাণিবিদ্যার বদিউর রহমান চৌধুরী স্যার, ফিজিক্সের ইউনুছ স্যার, বাংলার মুহাম্মদ খলিলুর রহমান স্যার, ইংরেজির এবিএম ওয়ালিউল্লাহ স্যার আমার শিক্ষাজীবনের উল্লেখযোগ্য প্রিয় শিক্ষক। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াবস্থায় আমি স্যারদের সান্নিধ্য লাভ করি।

কলেজে পড়াবস্থায় আমাদের বড় বন্ধু-ব্যাচ ছিলো। সবাই এখন সমৃদ্ধ। কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান, কাজী শেফায়েত কবির কানন, ডাঃ সফিকুল ইসলাম মন্টু, ইফতেখারুল আলম মাসুম, ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোশারেফ হোসেন, দেওয়ান শাহআলম, জি.এম. ঈমান হোসেন, শামীম, প্রদীপ চন্দ্র পাল, বাদল, লতিফ মিয়া, মাসুদ, পরশ, প্রফেসর ড. এম. মেজবাহ উদ্দিন সরকার, নিপেন পোদ্দার, আনোয়ারা বেগম আনু, অশ্রু, হুমায়রা, মুন্নি প্রমুখ আমার সহপাঠী। এছাড়া অনেকেই আছে, যাদের নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। বন্ধুদের ভীষণ মনে পড়ে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজের ৭৫ বছরপূর্তিতে আপনার অনুভূতি জানতে চাই।

মোঃ সাইফুল ইসলাম : চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তির অনুভূতি অনেক। ৭৫ বছরপূর্তি পেয়েছি, জীবদ্দশায় শতবর্ষপূর্তি হয়তো পাবো না। যখনই এই অনুষ্ঠানের আলোচনা শুরু হয়, তখন থেকেই আমি বেশ আপ্লুত। প্রাণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই পূর্তি মনে ব্যাপক আনন্দের জোগান দিয়েছে। আবারো কলেজ-জীবনের বন্ধুদের খুঁজে পাবো, হাসি-আনন্দে মেতে উঠবো সেদিনের জন্যে অধীর আগ্রহে আছি। ইতোমধ্যে আমরা ব্যক্তিগতভাবে দিনটি উদযাপনকল্পে নিজেদের মধ্যে নানা পরিকল্পনা অব্যাহত রেখেছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা/স্বপ্ন কী?

মোঃ সাইফুল ইসলাম : চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উক্ত কলেজের অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নতি হয়েছে এবং হচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন ‘বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল’ কলেজের সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। চাঁদপুর সরকারি কলেজ সারাদেশে অন্য সরকারি কলেজের মধ্যে খুবই ভালো অবস্থানে আছে। একঝাঁক মেধাবী শিক্ষক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে নিয়োজিত। আমাদের বন্ধু কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ নান্দনিকভাবে কলেজটি সাজিয়েছেন। এজন্যে তাঁকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। তাঁর দিকনির্দেশনা ও শিক্ষকদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় কলেজের শিক্ষার মান দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জনসহ সহশিক্ষা কার্যক্রমে উত্তরোত্তর সাফল্য বয়ে আনছে। কলেজের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে যা আমার খুবই ভালো লাগে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : উল্লেখিত প্রশ্নের বাইরে আপনার কোনো কথা থাকলে বলুন।

মোঃ সাইফুল ইসলাম : চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে একটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন দরকার। প্রাক্তন এবং নবীন শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত হবে এই প্লাটফর্ম। এতে করে শিক্ষার্থীদের যে কোনো সমস্যার খুব সহজেই সমাধান করা সম্ভব হবে। দেশ ও জাতির কল্যাণে সমাজসেবামূলক কাজ করা যাবে। অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রতি বছর একটি দিন উদযাপন করা হবে। যে অনুষ্ঠানে এ কলেজের প্রাক্তন কিংবা নবীন শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনের কিংবা সফলতার গল্প উপস্থাপন করবে। এতে করে অন্যরা বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হবে। কেননা শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখানো খুবই জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়