শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

জেলার শতাধিক ইটভাটার অর্ধেকই অবৈধ
মির্জা জাকির ॥

চাঁদপুর জেলায় বর্তমানে ইটভাটার অর্ধেকের বেশি ইটভাটা পরিবেশের ছাড়পত্র ও অন্যান্য অনুমোদন ছাড়াই চলছে। এরা অবৈধ প্রক্রিয়ায় ইট উৎপাদন করে যেমনি পরিবেশ ধ্বংস করছে, তেমনি সরকারও বিরাট অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব ইটভাটার কোনো কোনোটি পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম-নীতি না মেনে কাঠ, টায়ার, বিভিন্ন গার্মেন্টসের বর্জ্য ও ভুষি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে। আর তা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া পরিবেশকে দূষিত করে তুলছে। জনগণও এর মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। নানা রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে। চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে যেখানে সেখানে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে শতাধিক ইটভাটা। নিয়মণ্ডনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। বিশেষ করে ইটভাটাগুলোতে কাঠ, টায়ার ও মাত্রাতিরিক্ত সালফারযুক্ত পাথুরে কয়লা ব্যবহারের ফলে পরিবেশ রয়েছে হুমকির মুখে। শুধু তাই নয়, এসব অবৈধ ইটভাটার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ জনপদ এবং ফসলি জমি।

চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুরের ৮টি উপজেলায় ১২৫টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে হালনাগাদ ছাড়পত্র রয়েছে মাত্র ৫২টি ইটভাটার। বাকি সব বন্ধ ও অবৈধ। তারপরও বেশ ক’টি ইটভাটা নিয়মণ্ডনীতি না মেনেই অবৈধভাবে ইট উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। তবে এর মধ্যে ৭/৮টি ইটভাটার ছাড়পত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুরের সহকারী পরিচালক মোঃ হান্নান। তিনি জানান, এসব ইট ভাটায় আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটা চালু করাসহ অন্যান্য অবৈধ কারণে গত এক বছরে মোবাইল কোর্ট ও এনফোর্সমেন্টের মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। তবে চালুকৃত প্রায় পনরটি ইটভাটার আদালতে আপিল বিভাগে রিট রয়েছে কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট শাখায় কিংবা পরিবেশ ছাড়পত্রের আপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা যায়। ইতোমধ্যে ফরিদগঞ্জের বালিথুবায় আবৈধভাবে ব্র্রিক ফিল্ডে ইট পোড়ানোর দায়ে আদালত জরিমানা ও পাইপ দিয়ে পানি ঢেলে দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করার ঘটনাও ঘটেছে। জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আবদুর রশিদ জানান, আমরা সবসময় সব ব্রিকফিল্ড মালিককে বলেছি সরকারি নিয়ম মেনে ব্রিক ফিল্ড চালাতে। তাই বলে অনিয়মের দায়িত্বতো আমরা নিতে পারি না।

দেখা গেছে, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়ার অবৈধ ক’টি ইটভাটা ১২০ ফুট উচ্চতার চিমনি বিশিষ্ট সনাতন পদ্ধতির। আবার কিছু ইটভাটা রয়েছে নিষিদ্ধ এলাকায়। যেমন : শহর এলাকায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা রেলাইনের পাশে। এসব স্থানে ইটভাটা করা আইনত নিষিদ্ধ। এছাড়াও চাঁদপুরে কিছু ইটভাটায় মাত্রাতিরিক্ত সালফারযুক্ত পাথুরে কয়লা ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর আমদানি করা ওইসব কয়লা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্যে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওইসব কয়লা ব্যবহারের ফলে ইটভাটা সংলগ্ন এলাকাগুলোতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি এলাকাবাসী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হান্নান চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, কয়লায় সালফারের পরিমাণ মাপার যন্ত্র আমাদের নেই। তাই সেটা যাচাই করা সম্ভব নয়। তবে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার বিরুদ্ধে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়