ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মরণ করার লক্ষ্যে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার একুশ উদযাপন পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। চাঁদপুর সদরের মূল কার্যক্রম সংঘটিত হয় মূলত পুরাণবাজার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। ৫৪ বছর ধরে একুশে উদযাপনের বিরল ধারাবাহিকতায় যারা আয়োজক হিসেবে ব্যতিক্রম, তাদেরই একজন বিশিষ্ট সংগঠক মমতাজ উদ্দিন মন্টু গাজী। ভাষার মাস উপলক্ষে চাঁদপুর কণ্ঠে তাঁর সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি পুরাণবাজারে একুশ উদযাপনের সাথে যখন জড়িত হন তখন আপনি কী করতেন? কেনো জড়িত হন?

মমতাজ উদ্দিন মন্টু গাজী : স্বাধীনতাণ্ডপরবর্তী বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর যখন আমি ছাত্র ছিলাম তখনই পুরাণবাজারে একুশ উদযাপনের সাথে জড়িত হই। চাঁদপুর কলেজে লেখাপড়া করাবস্থায় তৎকালীন পুরাণবাজার ছাত্রসংসদ নামে একটি অরাজনৈতিক ছাত্রসংসদ ছিলো। কলেজ এবং ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা এই ছাত্রসংসদ করতেন। এই ছাত্রসংসদের একটি পত্রিকা ছিলো সাপ্তাহিক রক্তিম সূর্য। এখানে লাইব্রেরি ছিলো এবং ইনডোর গেমস্ও হতো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : একই সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় তথা একই ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ থেকে এতোটা দীর্ঘ সময় একুশ উদযাপনে ব্যাপক কর্মসূচি পালনের পেছনে আপনাদের উদ্দেশ্য কী? সে উদ্দেশ্য কি সাধন হয়েছে?

মমতাজ উদ্দিন মন্টু গাজী : বিভিন্ন সংগঠনের এবং রাজনৈতিক নেতার লোক থাকা সত্ত্বেও আমরা অমর একুশে উদযাপনে একই ছায়া তলে সবাই এক ছিলাম ও আছি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো মাতৃভাষার চেতনাকে নতুন প্রজন্মের নিকট ছড়িয়ে দেয়া। স্থানীয়ভাবে আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ভাষার আন্দোলন এবং এখানকার পরিবেশ সুন্দর রাখা। আমি মনে করি, আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : একুশে উদযাপনে পুরাণবাজারে আর কতোদিন এতোটা অবিচ্ছিন্ন থাকতে চান?

মমতাজ উদ্দিন মন্টু গাজী : আমরা সমমনা যারা আছি, যতোদিন বেঁচে থাকবো, ততোদিন অবিচ্ছিন্ন থাকতে চাই এবং থাকার চেষ্টা করবো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাদের অর্জন কী?

মমতাজ উদ্দিন মন্টু গাজী : পুরাণবাজার শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন পরিষদ চাঁদপুরে শিশু থেকে বয়স্ক সকল বয়সী মানুষের মাঝে একুশের চেতনা সৃষ্টি করতে পেরেছে। ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস নিয়ে সাড়া পড়ে। আমরা চেষ্টা করেছি সবার মাঝে দেশপ্রেম, সামাজিক শৃঙ্খলাবোধ, চরিত্র গঠন, সত্যবাদিতা সৃষ্টি করা। আমরা তা-ই করছি।

মমতাজউদ্দীন মন্টু গাজী পুরাণবাজারের বাসিন্দা। তার পিতার নাম জয়নাল আবেদীন জনু গাজী। ব্যবসায়িক পরিবারে জন্ম তাঁর। বর্তমানে পুরাণবাজার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও উদযাপন পরিষদ কমিটির যুগ্ম মহাসচিব। পেশায় ব্যবসায়ী হলেও রাজনীতির সাথেও জড়িত। তিনি জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন জাতীয় কৃষক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এবং চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক পরিচালক।