প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
হাজীগঞ্জে সালিসগণের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত বাবার অনুমতি সাপেক্ষে আর স্ত্রী-সন্তানদের হিস্যা বুঝিয়ে দেবার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কামাল পাটোয়ারীর লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার গভীর রাতে এই দাফন সম্পন্ন হয় বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ প্রধানীয়া সুমন। এর আগে গত সোমবার বিকেলে মারা যাওয়ার পর থেকে হাজীগঞ্জের মাতৈন গ্রামে ঔরসজাত সন্তান কামাল পাটওয়ারীকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে বাধা দেয় বাবা আবদুল কাদের। একই ঘটনায় নিজেদের ন্যায্য হিস্যা বুঝে নিতে লাশ দাফনে বাধা দেয় মৃত ব্যক্তির স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বিউটি ও তার সন্তানরা। সোমবার ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জ উপজেলার মাতৈন গ্রামে।
ঘটনার দিন মৃতের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বিউটি জানান, প্রায় ২৩ বছর পূর্বে তার সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের পাটওয়ারী বাড়ির আবদুল কাদের পাটওয়ারীর ছেলে কামাল পাটওয়ারীর। তিনি কালো হওয়ায় তার শ্বশুর-শাশুড়ি কামালের স্ত্রী হিসেবে তাকে মেনে নেয়নি। তার ওপর বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতো। বিশেষ করে আমার শ্বাশুড়ি ও ননদদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন বলে দাবি করেন বিউটি।
বিউটি আরো জানান, ২০০০ সালের দিকে আমার বাবার পরিবার টাকা খরচ করে কামালকে বিদেশ পাঠায়। কামাল বিদেশ যাওয়ার পর সব টাকা তার বাবার নামে পাঠাতো। তারপরেও সে তার বাবা-মা ও বোনদের মন জয় করতে পারেনি। এক পর্যায়ে কামাল অসুস্থ হয়ে পড়লে বিদেশ থেকে দেশে চলে আসে। সেই সময় কামালকে তার পরিবারের কেউ কোনো চিকিৎসা করাতে এগিয়ে আসেনি। এমতাবস্থায় তাকে আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির সহযোগিতায় ঢাকায় চিকিৎসা করাই। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কামাল মৃত্যুবরণ করলে লাশ দাফন করার জন্য বাড়িতে আনি। কিন্তু আমার শ্বশুর কামালকে তার সন্তান নয় বলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনে বাধা দেয়। এখন আমি ও আমার সন্তানের ন্যায্য দাবি শ্বশুর থেকে বুঝে না নেয়া পর্যন্ত লাশ দাফন করতে দেবো না।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ প্রধানীয়া সুমন জানান, কামালের স্ত্রী ও সন্তানের দাবির প্রেক্ষিতে তাদেরকে থাকার জন্য কামালের ক্রয়কৃত সোয়া ৯ শতাংশ জমি স্ত্রী ও তার ছেলেদের নামে দেয়া হবে বলে রাতেই একটি স্ট্যাম্প করা হয়। সর্বশেষ সোমবার রাত বারোটার পর সব বিষয়ে সমাধান করে কামাল পাটোয়ারীকে দাফন করা হয়।