প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
লিফটের কারণে কিংবা জায়গা বাঁচানোর জন্যে বহুতল পাকা ভবনগুলোতে যে সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়, তার অন্তত নিরানব্বই ভাগই খাড়া। এতে মোটা, বয়স্ক লোকসহ যে কোনো বয়সী রোগীদের ওঠানামাতে কষ্ট হয়। বিশেষ করে হৃদরোগীরা তো এমন সিঁড়ি ডিঙ্গাতে গিয়ে হাঁপাতে থাকেন, শ্বাসকষ্টে ভোগেন। কোনো বহুতল ভবনে লিফট থাকলে খাড়া সিঁড়ি এড়ানো যায়। আর লিফট না থাকলে কিংবা বিদ্যুৎ না থাকলে খাড়া সিঁড়ি ডিঙ্গাতেই হয়। এতে যারা কষ্টে ভোগার তারা নীরবে-সরবেই সেটা ভোগেন। কেউ তাতে মৃদু-জোরালো প্রতিবাদ করেন, তবে আন্দোলন করেন না। এমন বিষয়ে কেউ আন্দোলন করলে তাকে পাগল শুধু সাধারণ মানুষই বলবে না, এমনকি খাড়া সিঁড়ির জন্যে ভুক্তভোগীরাও বলতে দ্বিধা করবেন না।
যে মানুষ পশু-ক্লেশ নিবারণ সমিতি করে নির্বাক পশুর নানা কষ্ট নিয়ে কথা বলে, সে মানুষ খাড়া সিঁড়িজনিত কষ্ট বা ক্লেশের জন্যে কথা বলবে না, সেটা কী করে হয়! আর কথা না বলুক, সে কষ্টটা পর্যবেক্ষণ করে অন্তত কেউ কম-বেশি উপলব্ধি করুক, সেটা ভুক্তভোগীরা বিশেষ করে রোগীরা প্রত্যাশা করে। এমন প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে এসে সেটা বাস্তবে করে দেখিয়েছেন স্থপতি প্রফেসর ড. শায়ের গফুর। তিনি বর্তমানে বুয়েটের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত। তিনি তাঁর পিতা আলহাজ্ব ডাঃ এমএ গফুর ও মাতা প্রফেসর মাহমুদা খাতুন কর্তৃক চাঁদপুর শহরের ষোলঘরে দানকৃত ভূমিতে নির্মিত চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের বহুতল ভবনের এমন নকশা করেছেন এবং সেটি বাস্তবায়ন করেছেন, যেখানে রয়েছে রোগীবান্ধব ঢালু সিঁড়ি। যে সিঁড়ি দিয়ে অসুস্থ মানুষ বা রোগীরা স্বাচ্ছন্দ্যে উপরে ওঠানামা করেন, আর সুস্থ মানুষ কেবল দ্রুত নয়, কেউ কেউ দৌড়িয়েও ওঠানামা করতে পারেন। এর ফলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কতো মানুষ যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্যে দোয়া-আশীর্বাদ করে সেটা পর্যবেক্ষণক্রমে উপলব্ধি করা যায়। এই দোয়া-আশীর্বাদ যে স্থপতির ওপরও বর্তায় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।