প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
শাহরাস্তি উপজেলার মেহার কালীবাড়ি বাজারে অবস্থিত ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। সংবাদ পেয়ে ভুক্তভোগীরা এজেন্ট শাখায় এসে বিক্ষোভ করে। ভুক্তভোগী বেশ ক’জন জানান, তাদের সঞ্চয়পত্রের টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক এশিয়ার কালীবাড়ি বাজারের এজেন্ট হৃদয় চন্দ্র পাল উধাও হয়ে যায়। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি থানা কমপ্লেক্সের পাশেই অবস্থিত শাহরাস্তি পোস্ট অফিসের নতুন ভবনের কাজ শুরু হওয়ায় মেহার কালীবাড়ি বাজারে অস্থায়ীভাবে ব্যাংক এশিয়ার অফিসের একই কক্ষে বিগত ক’মাস ধরে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম চলে আসছে।
শাহরাস্তি পোস্ট মাস্টার মোঃ মজিবুর রহমান জানান, ব্যাংক এশিয়ার সাথে পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা চুক্তি রয়েছে। সেই কারণে একই অফিসে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি জানান, আমার কাছে চেকের কোনো কাজ নেই। সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে হলে এমআইসিআর চেক থাকতে হয়। ওই ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে আমাকে চেক জমা দিতে হয়। এই চেক কালেকশনের জন্যে আমি প্রধান ডাক ঘরে পাঠাই। তিনি জানান, যেহেতু ব্যাংক এশিয়া এমআইসিআর চেক দিতে পারে তাই এজেন্ট শাখায় গ্রাহকগণ এ কাজটি করেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, এজেন্ট হৃদয় চন্দ্র পাল জালিয়াতির মাধ্যমে জাল রিসিটের মাধ্যমে টাকাগুলো তার নিজের একাউন্টে নিয়ে নেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে গত বুধবার ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গ্রাহকদের ৪০ লাখ টাকা ২ ফেব্রুয়ারি ও ৫ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ টাকা করে ২ কিস্তিতে পরিশোধ করবেন বলে হৃদয় চন্দ্র পাল অঙ্গীকারনামা দেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই হৃদয় তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উধাও হয়ে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে গ্রাহকরা এজেন্ট শাখায় জড়ো হতে থাকেন। এ সময় বেশ ক’জন দাবি করেন প্রায় কোটি টাকার অধিক অর্থ নিয়ে হৃদয় উধাও হয়ে গেছে। উপস্থিত গ্রাহকদের মধ্যে অফিস চিতোষীর মরিয়ম আক্তারের ১০ লাখ, নিজমেহার গ্রামের আব্দুল মালেকের ৯ লাখ ৩০ হাজার, পদুয়া গ্রামের ইয়াছিনের ৫ লাখ, কচুয়া উপজেলার সোরাইস গ্রামের সুচিত্রার ৬ লাখ, হাজেরা খাতুনের ৩ লাখ, ঝর্ণা আক্তারের ২ লাখ, রোজিনা বেগমের ২ লাখ, মামুন হোসেনের ১৫ লাখ, মোঃ জহির হোসেনের ৮ লাখ ২০ হাজার, সুরাইয়ার ২ লাখ ৫০ হাজার, সালেহা বেগমের ১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে বলে তারা দাবি করেন। এছাড়াও আরো বেশ কিছু গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান হৃদয়।
এশিয়া ব্যাংকের জেলা ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর তদন্ত চলছে। কতো টাকা হৃদয় জালিয়াতি করেছেন তা তদন্ত শেষে বলা যাবে। গ্রাহকগণ যাতে হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।