সোহেল বেপারী (৩০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর মাটিতে পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ৫ ফেব্রুয়ারি রোববার বিকেলে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের বাইক্কার বাগান থেকে মৃতদেহ মাটি খুঁড়ে উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। চাঁদপুর মডেল থানা ও ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট শাহাদাত হোসেন (৩০) ছাড়াও জাকির হোসেন (৪২)নামে অপর একজনকে আটক করেছে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সার্কেল) পংকজ কুমার দে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গ্রেফতারকৃত শাহাদাত হোসেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের গাজী বাড়ির শাহাজাহানের ছেলে ও জাকির হোসেন একই এলাকার নাজির আহমেদের ছেলে।

নিহত সোহেল বেপারী ও আটককৃতসহ সকলেই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। মাদক বিকিকিনির ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের এই ঘটনা ঘটে। গত ১ ফেব্রুয়ারি খুনের এই ঘটনা ঘটলেও ঘটনার ৪দিন পর নিহতের স্ত্রীর থানায় দায়েরকৃত জিডিকে সামনে রেখে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ খুনের রহস্য উদ্ঘাটন ও লাশ উদ্ধার করতে সমর্থ হয়।

জানা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার দোকানঘর এলাকার ফজলু বেপারীর ছেলে সোহেল বেপারী (৩০) গত ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়। পরে তার স্ত্রী জোছনা বেগম গতকাল ৫ ফেব্রুয়ারি রোববার চাঁদপুর মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন (যার নং ২৮৫ তাং ০৫/০২/২৩)। পুলিশ জিডিটি আমলে নিয়ে পরে তদন্তের এক পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নিহতের বন্ধু শাহাদাত হোসেন (৩০)কে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের বাইক্কার বাগানের পাশ থেকে পুঁতে রাখা সোহেলের লাশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুন নাহারের উপস্থিতিতে উদ্ধার করা হয়। এ সময় চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ও ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের ওসিসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত ছিলো।

আটক শাহাদাত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহাদাত হোসেন, জাকির হোসেন (৪২), আঃ কাদের (২৬) ও কাউসার মিলে সোহেলকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। পরবর্তীতে সকদিরামপুর বড় পাটোয়ারী বাড়ির পেছনে জঙ্গলের পাশে ড্রেনের মধ্যে মাটি খুঁড়ে সোহেলের মৃতদেহ পুঁতে রাখে।

এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আঃ মান্নান জানান, চাঁদপুর সদর থানায় নিহত সোহেলের স্ত্রীর জিডির প্রেক্ষিতে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শাহাদাতকে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে চাঁদপুর মডেল ও ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এছাড়া এই ঘটনায় শাহাদাত ছাড়াও জাকির নামে আরো একজনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় লোকজন জানান, বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নসহ দুই উপজেলার আশপাশের এলাকাগুলো মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা কখনো ফরিদগঞ্জ কখনো চাঁদপুর সদর উপজেলার সীমানা ব্যবহার করে সহজেই মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এই খুনের ঘটনা রমরমা মাদক ব্যবসার বহিঃপ্রকাশ।