প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭৮ আমরা বিজয় অর্জন করলাম। আর ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ জাতির পিতাকে মুক্ত করে স্বাধীন দেশে এনে আমরা স্বাধীনতার পূর্ণতা পাই। আমাদের চাঁদপুর থানা কমান্ডার সৈয়দ আবেদ মুনসুরের নির্দেশে আমরা রহমতপুর আবাসিক এলাকা পানির ট্যাংকির পাশে বিচিত্রা ভবনে একটি ক্যাম্প স্থাপন করি এবং পরিত্যক্ত আর্মস্ ও গোলা বারুদ জব্দ করে এনে গুদামজাত করি। আমরা শহরের আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক কর্মকাণ্ড দেখাশোনা করি। আমাদের প্রিয় কমান্ডার শহীদ জাবেদের লাশের কফিন ফরিদগঞ্জের বালিথুবা থেকে এনে লন্ডনঘাটের সফিনা হোটেলের নদীসংলগ্ন কবরে পুনঃসমাহিত করি। সেদিন চাঁদপুর মহকুমা জনসাধারণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাইগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে কমান্ডার সাহেবের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা হয়। চাঁদপুর থানা কমান্ডার সৈয়দ আবেদ মুনসুরের নির্দেশক্রমে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাগণসহ রহমতপুর আবাসিক এলাকায় সরকারের একোয়ার করা পুকুরপাড়ের মাঠটির স্থান নির্ধারণ করা হয় এবং যুদ্ধকালীন দালাল রাজাকার কর্তৃক লুণ্ঠন করা টিন, কাঠ উদ্ধার করে স্কুল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।
সেদিন আমরা যে ক’জন শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয় তৈরিতে অংশগ্রহণ করেছিলাম তারা হচ্ছেন চাঁদপুর থানা কমান্ডার সৈয়দ আবেদ মুনসুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহের হোসেন ভূঁইয়া রুস্তম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন ঢালী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার খান শিমু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সানাউল্লাহ খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদ হোসেন পাটওয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সরোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম গুর্খা, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহের হোসেন পাটওয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্টু পাটওয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা টেলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেক গাজী, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন পাটওয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন পাটওয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম শাহজাহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিকদার মোঃ মেজবাহ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন নান্নু, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম সালাউদ্দিন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এঁরা সহ স্বাধীনতাপ্রিয় ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
২.
আজকের দিনে আমি তাঁদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানাই। সময়ের দাবিতে শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। অন্যদিকে দক্ষ শিক্ষকম-লী ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের একাগ্রতায় ভালো ফলাফল এবং চাঁদপুর-হাইমচরের মাটি ও মানুষের নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয়ের আনুকূল্যে এবং চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলের উদ্যোগে শহীদ জাবেদ বিদ্যালয়টি কলেজে উন্নীত হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সেদিনের স্বপ্ন জাতি গঠনে তাদের ত্যাগ সফল হতে চলেছে।
আমি প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলবো, ‘তোমরা মনে রাখবে শিক্ষার কোনো সময় নাই। আমাদের জীবন পুরোটাই শিক্ষার জন্যে। তাই সঠিক শিক্ষা নিবে এবং সেই অনুযায়ী নিজেদের গড়ে তুলতে হবে’।
শহীদ জাবেদ কলেজের সফলতা প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক-মহান আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনাই করি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এম. সালাহ উদ্দীন : উপদেষ্টা, জেলা আওয়ামী লীগ, চাঁদপুর। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, চাঁদপুর।