প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:৪৭
আব্দুল্লাহ সরকারের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও আলোচনা সভা
![আব্দুল্লাহ সরকারের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও আলোচনা সভা](/assets/news_photos/2025/02/07/image-58727-1738939783bdjournal.jpg)
হাইমচরের কৃতী সন্তান কমরেড আব্দুল্লাহ সরকারের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) এ উপলক্ষে হাইমচর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে আব্দুল্লাহ সরকারের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং বিকেলে তাঁর স্মরণে হাইমচর বাজার সংলগ্ন সাবু মাস্টারের মোড়ে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন আব্দুল্লাহ সরকার স্মৃতি সংসদের সদস্য সুনীল কৃষ্ণ মাঝি। উপস্থিত বক্তাগণ তাঁর জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন।
|আরো খবর
বক্তাগণ বলেন, বাংলার মুক্তি সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হাইমচর সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, শহিদ কাইউম পাঠাগারের প্রধান উপদেষ্টা, শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আজীবন কারিগর, সাবেক সংসদ সদস্য, হাইমচর থানার রূপকার, হাইমচরের মাটি ও মানুষের আমৃত্যু বন্ধু ছিলেন জননেতা কমরেড আব্দুল্লাহ সরকার। তিনি তাঁর সমস্ত জীবন শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার কাজে ব্যয় করেন। তিনি কখনো অন্যায়ের সাথে আপস করেননি। তিনি সবসময় ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে সামাজিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি ছিলেন ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে একজন সৎ এবং নির্ভীক মানুষ। তিনি হাইমচরের মানুষকে আলোকিত করার জন্য নিজের শিক্ষা জীবনকে তুচ্ছ করে হাইমচরে দুটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। মানুষের দেশপ্রেমের চেতনাকে জাগ্রত করার জন্য তিনিই প্রথম ১৯৬৮ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্কুলে একটি শহিদ মিনার নির্মাণ করেন। হাইমচরকে নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য তিনি ১৯৮৯ সালে হাইমচরের জনগণকে সাথে নিয়ে ঢাকা প্রেসক্লাবে আমরণ অনশন করেন এবং নদী ভাঙ্গন সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করতে সক্ষম হন। তিনি জলকরের (জলমহল) বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নদীতে জেলেদের মাছ ধরার অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ভূমিহীন মানুষদের জন্য কলোনী প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভূমিহীন মানুষদের জন্য খাসজমি বরাদ্দের আন্দোলন গড়ে তোলেন।
বক্তাগণ আরো বলেন, তাঁর জীবনের আদর্শকে তরুণ সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে সমাজের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। রুহুল আমীন এবং নাছির মাস্টারের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ডা. শামসুল আলম (সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টি), শাহজাহান তালুকদার (সমন্বয়ক, বাসদ, চাঁদপুর), আজিজুর রহমান (আহ্বায়ক, সাম্যবাদী আন্দোলন, চাঁদপুর জেলা), জাহাঙ্গীর হোসেন (সাধারণ সম্পাদক, সিপিবি, চাঁদপুর), তাঁর ছাত্র শাহ আলম পাটওয়ারী, শিক্ষক নেতা লিয়াকত হোসেন, মানিক মিয়া, ইছহাক খোকন (সাবেক চেয়ারম্যান, হাইমচর ইউনিয়ন পরিষদ), নূরুল কাদের মানিক, অ্যাড. মাসুদ রানা, ব্যাংকার মজিবুর রহমান, মানিক দেওয়ান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, আজকের সমাজ বাস্তবতায় আদর্শ মানুষের জীবনী তরুণ এবং যুব সমাজের সামনে তুলে ধরতে না পারলে ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার ও সামাজিক সম্পর্ক, পারস্পারিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে এবং এতে করে সামাজিক বিশৃঙ্খলা চরম আকার ধারণ করবে। বক্তারা এই সমাজের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আগিদ অনুভব করেন। বক্তারা বলেন, আজকের সমাজ বাস্তবতায় কমরেড আব্দুল্লাহ সরকারের মতো মানুষের খুবই প্রয়োজন।