বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী নিহত: ডোপ টেস্টে ধরা পড়ল মাদকাসক্তি
  •   সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ টাকা ছিনতাই: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
  •   চাকা পাংচার হওয়ায় এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু
  •   বরগুনায় টিকটক নিয়ে পারিবারিক কলহ: স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা
  •   মানব পাচারের চক্রের বিরুদ্ধে বিজিবির সফল অভিযান: কিশোরী উদ্ধার, তিন আটক

প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩

মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা: বিতর্কের কেন্দ্রে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম

মো: জাকির হোসেন
<b>মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা: বিতর্কের কেন্দ্রে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম </b>
আবদুল হাই কানু(৭৪)। ছবি :সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানুকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার পটভূমি

গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে ৭৮ বছর বয়সী আবদুল হাই কানুকে একদল লোক আটক করে বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে জুতার মালা পরিয়ে অপমান করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, কানু বিনাবাক্যে শাস্তি মেনে নিচ্ছেন এবং বারবার ছাড়পত্র চাইছেন।

আবদুল হাই কানু মুক্তিযোদ্ধা এবং কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি। তবে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা-সহ ৯টি মামলা রয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কানুর পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে, হামলাকারীরা স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী। কানুর ছেলে গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, “একজন মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে অপমান করা হয়েছে। আমি কার কাছে বিচার চাইব?”

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাহফুজুর রহমান বলেন, “ঘটনাটি নিন্দনীয়। তদন্ত করে অভিযুক্তরা আমাদের কেউ হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনার পটভূমি

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তার উজ জামান জানান, কানুর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, তবে তিনি কোনো অভিযোগ করতে রাজি নন। তিনি জানিয়েছেন, অভিযোগ করলে এলাকায় টিকে থাকতে পারবেন না। তারপরও পুলিশ অভিযুক্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছে।

বিতর্কের কেন্দ্রে অতীত কর্মকাণ্ড

আবদুল হাই কানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে প্রতিপক্ষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, তিনি জামায়াত-শিবির নেতাদের ঘরছাড়া করার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের ইমেজ নিয়ে আলোচনা

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক চলছে। কেউ বলছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের লাঞ্ছনা মেনে নেওয়া যায় না। আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা হলেও কি অপরাধের দায়মুক্তি পাওয়া যায়?

সরকারের প্রতিক্রিয়া

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে। তবে ১৫ বছরের ক্ষমতার সময়ে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গও সামনে এসেছে।

শেষ কথা

একজন মুক্তিযোদ্ধার লাঞ্ছনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে তাঁর অতীত কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা যে কোনো অবস্থাতেই সমর্থনযোগ্য নয়। প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা এবং তার অপকর্মের বিচারও নিশ্চিত করা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়