শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২১, ২৩:৩৯

স্মরণীয় দিনে চির বিদায়

দুই মেরুতে থাকলেও তাঁদের মাঝে অনেক মিল

মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজলঃ
দুই মেরুতে থাকলেও তাঁদের মাঝে অনেক মিল

একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরেকজন উপজেলা বিএনপির সভাপতি। দুজনেই আবার ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। দু’জনের রাজনৈতিক মঞ্চ ভিন্নতা থাকলেও আন্তরিকতার কোন ঘটতি ছিলনা। তাদের মাঝে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ছিল অফুরন্ত। তারা দু’জনই আবার সফল ব্যবসায়ী, স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে উপজেলার সর্বত্র পরিচিত।

শাহরাস্তি উপজেলার আরেক কৃতী সন্তান উপজেলা পরিষদের সর্ব প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সফল সভাপতি মরহুম রুস্তুম আলীর মৃত্যুর পর শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের হাল ধরেন ব্যবসায়ি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফরিদ উল্লাহ চৌধুরী। প্রথমে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক মনোনীত হন তারপর তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।

গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি বিভিন্ন অসুস্থ্যতার কারণে ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। কিন্ত তার মেয়াদকালে তিনি তার সততা ন্যায় নিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে জনগনের আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন। দলীয় প্রভাব অর্থ বৃত্তের অহংকারের উদ্দে উঠে তিনি সাদা মাটা জীবনযাপন করেছেন। বীর এ মুক্তিযোদ্ধা জীবনের শেষ দিনটিতেও স্বরণীয় করে গেছেন। মহান মুক্তিযোদ্ধের ৫০ বছর ফুর্তির দিন ২৬ মার্চ বিকেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে আর স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে ততদিন ফরিদ উল্লাহ চৌধুরির কথা মনে পড়বে শাহরাস্তিবাসীর।

শাহরাস্তি উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম ছিদ্দিকুর রহমানের দায়িত্ব বুঝে নেন মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী ১৯৯৮ সালে তিনি বিএনপিকে গতিশীল করতে হাল ধরেন। সে সমায়ে দলের নেতাকর্মীদের দাবীর মুখে উপজেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফ্লাইট লেঃ এসএ সুলতান টিটুর উপস্থিতিতে উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে দেলোয়ার হোসেন মিয়াজীর সাথে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন পাটওয়ারী। দীর্ঘদিন তারা উপজেলা বিএনপির দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পরপর দু’বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

দ্বিতীয় মেয়াদের শেষের দিকে স্ব ইচ্ছায় এ পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি উপজেলা বাসিকে অবাক করে দেন। কিন্ত বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। দ্বিধা বিভক্ত উপজেলা বিএনপির একটি অংশের চালিকা শক্তি ছিলেন তিনি। দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী মৃত্যুর আগ পযন্ত জনগনের আস্থা ভাজন হিসেবে নিজেকে ধরে রেখেছেন। জন সমর্থনের দিক থেকে সর্বস্তরের মানুষের আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে তিনি ছিলেন নির্ভরতার প্রতিক। স্পষ্টভাষি দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী কখনোই অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। গরীব দুঃখি মানুষের বিপদের বন্ধু হিসেবে দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী সুপরিচিত ছিলেন। দলমত নির্বিশেষে সকল দলের নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন তিনি। ঈদুল আযহার দিন শেষে সন্ধায় এক স্বরণীয় দিনে তিনি হাসি মুখে পৃথীবি থেকে চির বিদায় নেন। হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন দেলোয়ার মিজি।

শাহরাস্তি উপজেলার মানুষের মাঝে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন ফরিদ উল্লাহ চৌধুরী ও দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী। মহান আল্লাহ পাক জনগণের কাছে তাদের স্মরণীয় করে রাখলেন। এ মৃত্যু যেন মানুষের মাঝে হাসি আনন্দ কষ্ট বেদনা সব একাকার করে দিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়