বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

সরকার ও বিরোধিতা : গণতন্ত্র
অনলাইন ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাধীনতার যুদ্ধ ও ফরাসি বিপ্লবের বদৌলতে গণতান্ত্রিক চেতনা আংশিকভাবে সংহত হয়। তখনো দাসপ্রথা ছিল। নারীর কোনো অধিকার ছিল না। পৃথিবীকে গণতন্ত্রের জন্য নিরাপদ করার কথা বলে পৃথিবীতে দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধ ঘটে গেছে। বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রের জন্য জাতিসংঘের জন্ম হয়েছে। গণতন্ত্রে মানুষের মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্যে আজ মানবাধিকার প্রশ্ন বহুলভাবে আলোচিত হচ্ছে।

গণতন্ত্রের ন্যূনতম কর্মসূচির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত হয়ে রয়েছে- নিয়মিত নির্বাচন, প্রাপ্তবয়স্কের সর্বজনীন ভোটাধিকার, দল গঠনের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণ-সাপেক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিভাজন, জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন এবং সর্বোপরি মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাকল্পে গণতন্ত্র অঙ্গীকারাবদ্ধ। গণতন্ত্রের বড় কাজ যেমন জনগণের প্রতিনিধি অনুযায়ী ক্ষমতার বিন্যাস ও প্রয়োগের ব্যবস্থা করা, তেমনি আর একটি বড় কাজ হচ্ছে শান্তিপ্রিয়ভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার হস্তান্তর নিশ্চিত করা।

একটি দেশের রাজনৈতিক জীবনে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রভাব, ধারা ও প্রতিক্রিয়া গড়ে উঠে। শুধু বিভিন্ন রাষ্ট্রের আকার-প্রকারে পার্থক্য রয়েছে তা-ই নয়, একেক রাষ্ট্রে একেক ধরনের কার্যকারণযোগ ঘটেছে। সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসে বিভিন্নতাহেতু দেশে দেশে রাজনৈতিক প্রবণতা ও প্রতিক্রিয়ার নানান হেরফের। গণতন্ত্রে প্রশাসনের কী রূপ হবে, সে নিয়ে নানান মত রয়েছে। কোনো কোনো দেশে প্রশাসনকে দলীয়করণের ব্যাপারে তেমন জবাবদিহি করতে হয় না। গণতন্ত্রে কিছুটা দলীয়করণ থাকবে। তবে রাষ্ট্রীয়কর্মে যেখানে মেধা, পারদর্শিতা বা অভিজ্ঞতার প্রয়োজন, সেখানে কর্মবিভাগে দলের লোক ভর্তি করলে তা হবে নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত-নিন্দীয়। ঔপনিবেশিক আমলে প্রশাসন ঔপনিবেশিক কর্তাব্যক্তিদের অঙ্গুলিহেলনে চালিত হতো। প্রভুর জন্য যেমন সেটাই স্বাভাবিক ছিল। পরাধীন প্রজার জন্য তেমনি স্বাভাবিক ছিল প্রশাসনকে সন্দেহের চোখে দেখা। প্রশাসক, পুলিশ বা সৈন্যের প্রতি যে বিরূপভাব আমাদের ছিল তার থেকে এখনও বের হতে পারিনি। যদিও স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূর্তি পার হয়ে গেল।

ঊনবিংশ শতাব্দীর দুয়ের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ছয়ের দশকের বৃটেনে এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশে ভোটাধিকারের প্রসার ঘটে। ‘এক মানুষ এক ভোট’- এই স্লোগান সংস্কারবাদী মেজর জন কার্টরাইট (১৭৪০-১৮২৪) চয়ন করেন বৃটেনে যখন বাসস্থান ছাড়াও ব্যবসা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্রব-অধিকারে লোকে ভোট দিত। পরে এই স্লোগানের অর্থের ব্যাপ্তি ঘটে। শ্বেতকায়-কৃষ্ণকায় বৈষম্য দূরীকরণের জন্য আফ্রিকায় ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই স্লোগান নতুন করে ধ্বনিত হয়ে থাকে। তদ্রƒপ ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে ইচ্ছে তাকে দেব’ নির্বাচনের জগতে বাংলাদেশের এ এক অনুপম অবদান।

গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা। একদলীয় রাষ্ট্রে প্রকৃত গণতন্ত্র থাকতে পারে না। শান্তিশৃঙ্খলার মোকাবিলার জন্য সংবিধান সংশোধন করে আমাদের দেশে যে একদলীয় সরকারের প্রবর্তন করা হয়েছিল, অতিস্বল্পকালের মধ্যে তার প্রাণাত্যয় ঘটে। স্বৈরসরকারের দলের প্রয়োজন হয় না। দেশে একদলীয় সরকারের চেয়ে দলহীন সরকার বেশ কিছুদিন টিকে ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য যে বিধিনিষেধ তৈরি হয়, তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে ‘রাজনৈতিক দল’-এর একটা ব্যাখ্যা দেয়া আছে এবং তৎসংগে উল্লেখ্য সংসদের প্রাঙ্গণ-পারাপার বন্ধ করার জন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে নিম্নোক্ত বিধান রয়েছে- “কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদণ্ডসদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন অথবা সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহা হইলে সংসদে তাহার আসন শূন্য হইবে।” এই বিধান মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি হিসেবে অনেকে চিহ্নিত করেন। জিজ্ঞাসা মনে একটা প্রশ্ন- সংবিধানের একটা বিধানকে মৌলিক অধিকারের বিধানের আলোকে অসাংবিধানিক বলা যাবে?

আমাদের এতদঞ্চলে ১৮৮৫ সালে নিখিল ভারতে কংগ্রেসের জন্মকাল থেকে রাজনৈতিক দলের সূত্রপাত। একসময় ছিল যখন একই ব্যক্তি নিখিল ভারত কংগ্রেস ও নিখিল ভারত মুসলিম লীগের শুধু সদস্য নয়, কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করতে পারতেন। বর্তমানে বাংলাদেশে শতাধিক দল রয়েছে, তবে কী ঐ রকম ঐতিহ্য আছে বলে মনে হয় না।

কোনো কোনো রাষ্ট্রব্যবস্থায় বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিরোধিতা সহ্য করা হয় না। বিরোধিতাকে কেবল সহ্য করা বা প্রশ্রয়ই দেওয়া নয়, তার প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থানের জন্য গণতন্ত্রে একটা সম্মানজনক জায়গা দেওয়ার প্রয়োজন। জবরদস্তির তুলনায় রাজনীতির এক অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ হিসেবে এবং সরকারের সীমিত বৈশিষ্ট্য হিসেবে এই অন্তরায়িত বিরোধিতাকে গণতন্ত্রে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। রাজনৈতিক চিন্তাদর্শের এটা একটা পূর্বশর্ত- বিরোধিতা গণতন্ত্রের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

ন্যূনতম কতজনের দল হলে সংসদে বিরোধীদল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম বিধান রয়েছে। নরওয়েতে ১ জন, জাপানে দুজন, অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ডের লোকসভায় ৫ জন, ফ্রান্স ও ভারতে ৩০ জন হলে বিরোধীদল হিসেবে স্বীকৃতি পায়। আমাদের দেশে স্বীকৃতি পেতে হলে বিরোধীদলের কমপক্ষে ২০জন সাংসদ থাকতে হবে। বাংলাদেশের প্রথম সংসদে মোট ৩১৫ আসনের মধ্যে আওয়ামীলীগের ২৯৩টি আসন ছিল। সরকারবিরোধী সংসদে ছিলেন মাত্র ৪ জন। এই স্বল্পসংখ্যক বিরোধী সাংসদের পক্ষে বিরোধীদলের সংসদীয দায়িত্ব পালন করা স্বস্তিকর হয়নি।

সংসদে কার্যক্ষম বিরোধীদলের থেকে সরকারের বড় বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে হঠকারিতার সম্ভাবনা থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের পর যখন নেলসন ম্যান্ডেলা দেখেন তাঁর দল দু-তৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করেনি তখন তিনি তাঁর সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানান। যেখানে সংসদে দু-তৃতীয়াংশ সাংসদ সরকারি দলের, সেখানে সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও ষড়রিপু দুষ্কর্মের জন্য উঁকিঝুঁকি মারবেই।

আমাদের দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাসের মুখ্য অংশ বিরোধিতার বৃত্তান্ত। বৃটিশ-বিরোধিতা, সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতা, ঔপনিবেশিকতা বা আধা-ঔপনিবেশিকতাণ্ডবিরোধিতা, মুসলিম লীগ-বিরোধিতা ও পাকিস্তান-বিরোধিতার সঙ্গে ‘সংগ্রাম চলবেই চলবে’ স্লোগান মুখরিত হয়ে আসছে অনেকদিন ধরে। বিরোধীদল সরকারকে গদি ছাড়ার হুমকি দেয়। সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস করার চেষ্টা করে। ক্ষোভে-অভিমানে সংসদ বয়কট করে। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সংসদণ্ডঅভিমুখে মিছিলের ডাক দেয়। রাজপথে মোকাবিলার জন্য অপরপক্ষকে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করে। ধর্মঘট-লাগাতার হরতালের সঙ্গে ঘেরাও-জ্বালাও-পোড়াও-এর কর্মসূচিও গ্রহণ করে থাকে। সড়ক-শক্তিকে বহুদেশে, আমাদের দেশেও, একাধিকবার সাফল্যের সঙ্গে বিরোধীদল অধিষ্ঠিত-সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। মানুষ জোগাড় করে সড়ক-শক্তির প্রতিযোগিতায় সরকারও কখনো কখনো নিজেকে জাহির করে থাকে। সড়ক-শক্তির ব্যবহারের বড় সমস্যা হচ্ছে এর মধ্যে এমন একটা সন্ত্রাসের বীজ লুকিয়ে থাকে, যা দিশেহারা হয়ে হত্যা বা আত্মহননে লিপ্ত হতে পারে। সখ করে কেউ রাজপথে নামতে চায় না। প্রতিরোধের অস্ত্র হিসেবে সড়ক-শক্তি অনাকর্ষণীয় হবে না যখন প্রতিবাদ ও বিরোধিতাকে সরকার-উচ্ছেদের বহিঃপ্রকাশ না ভেবে সমস্যাপূরণের গণতান্ত্রিক দাবি বলে গণ্য করা হবে।

যে বৃটিশ সংসদীয় গণতন্ত্রের সঙ্গে আমাদের পরিচয় সেখানে ‘সংসদীয় বিরোধিতা’ কথাটা বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। যা ‘তদীয় মহিমার বিরোধী পক্ষ’ (his Majisty's opposition) হিসেবে খ্যাত ও প্রচলিত। কোন কারণে সরকারের পতন ঘটলে বিরোধীদলকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনের জন্য সদাপ্রস্তুত থাকতে হয়। এজন্যে বিরোধীদলের ছায়া-মন্ত্রিসভা (Shadwo cabinet) থাকা দরকার। আমাদের দেশে কোনো বিরোধীদল এ পর্যন্ত ছায়া-মন্ত্রিসভা গঠন করেনি। তার ফলে বিরোধীদলের প্রত্যেক শীর্ষস্থানীয় নেতা নিজেকে সর্ববিষয়ে পারদর্শী ভেবে সরকারের বিরোধিতা করেন এবং প্রকাশ্যে যে-কোন নীতি নির্ধারক বক্তব্যে অংশগ্রহণ করতে তিনি সংকোচবোধ করেন না। সরকারের মধ্যেও একই প্রবণতা দেখা যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্রীয় প্রশ্নে বা স্বাস্থ্যমন্ত্রী কৃষিবিষয়ক প্রশ্নে অবলীলাক্রমে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে মন্তব্য করেন। এখতিয়ার বা দায়িত্বের বিভাজন মেনে না নিলে, না সরকার না বিরোধীদল, কারো পক্ষে প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থায় সুষ্ঠুভাবে কর্তব্য পালন করা আদৌ সম্ভব নয়।

গণতন্ত্র মানে সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে সারাক্ষণ কুর্ণিশ জানানো নয়। গণতন্ত্রে দলমত-ধর্ম নির্বিশেষে সকল নাগরিক রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে এবং সকলে আইনের সমান আশ্রয় চাইবে এবং তা সহজভাবে পাবে। গণতন্ত্রের মূলনীতি ‘সকলের সমান সুযোগ’- এর অনুকূল হবে। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দার্শনিক জ্যাঁ জ্যাঁক রুশোর সাধারণ ইচ্ছা (General Will) তত্ত্বের সাথে সুর মিলিয়ে বলতে হয়, সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছা বা সকল দলের সম্মিলিত ইচ্ছা (will of all)’র চেয়ে দেশের সেই সাধারণ ইচ্ছা (General Will) বড়, যা দেশের ও জনগণের কল্যাণ ও সুখ বয়ে আনতে পারে।

গণতান্ত্রিক সরকারবিরোধিতার ক্ষেত্রে নানান জিজ্ঞাসা। অপ্রতিনিধিত্বমূলক বিদেশী শাসকদের বিরুদ্ধে যেভাবে সত্যাগ্রহ করা হতো, আইনগতভাবে নির্বাচিত স্বদেশের শাসকদের বিরুদ্ধে ঠিক তেমনিভাবে সত্যাগ্রহ করা কি বিধেয়? অপরপক্ষে জিজ্ঞাসা, নাগরিকের সমালোচনা করার অধিকার এবং শান্তিপ্রিয়ভাবে তার বিবেক-বিবেচনা অনুযায়ী প্রতিবাদ করার অধিকার ভোট দেওয়ার বা নির্বাচনের রায় ঘোষিত হওয়ার পর কি নিঃশেষ হয়ে যায়? প্রশ্নহীন ও প্রতিবাদহীন আনুগত্যে কি পাঁচ বছরের জন্য কোন সরকারকে কবুলিয়াত দেওয়ায় ন্যায়বিচারের পক্ষে সত্যাগ্রহের প্রতিবাদী ভূমিকা থাকতে পারে না? ক্ষমতাসীন দলে যেখানে শৃঙ্খলার অভাব, দুর্নীতির ব্যাপকতা এবং সংসদের কাছে জবাবদিহিতা নামমাত্র বর্তমান, যেখানে নির্বাচন-পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ ও সর্বজনীন-অংশগ্রহণমূলক নয় এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিকে পাঁচ বছরের আগে ফিরিয়ে আনা বা Recall করার বিধান নেই, সেখানে সত্যাগ্রহের ভূমিকা অস্বীকার করে সমাজের সংস্কারের পথ কি বন্ধ করে দেওয়া যায়? কিন্তু এ সত্যাগ্রহ যখন তার সীমা অতিক্রম করে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে আঘাত হেনে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তোলে, তখনও কি সত্যাগ্রহীর অধিকারকে সহিষ্ণুতার সঙ্গে মেনে নিতে হবে?

বিগত বেশ কিছু বছরের গণতন্ত্রখেলাপিদের কর্মকাণ্ড, বিশ্বাসঘাতকতা, আত্মহনন ও দুর্নীতির বদৌলতে আমাদের ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য একাংশ আজ রক্তের ওয়াসিয়ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবদীপ্ত মুখ দেশের ভাঙ্গা আয়নায় চেনা মুশকিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এমনকি বৈশ্বিক মহামারীকেও জয় করে বাংলাদেশের লোক যেমন আবার উঠে দাঁড়ায়, তেমনি রাজনৈতিক দক্ষযজ্ঞ ও তুলকালাম উপেক্ষা করে এবং প্রয়োজনে সংগ্রাম করে নিজের পায়ে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।

অধ্যাপক মোঃ হাছান আলী সিকদার : সভাপতি, চাঁদপুর জেলা জাসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা, চাঁদপুর জেলা শিক্ষক নেতা; সমাজ ও রাজনীতিবিশ্লেষক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়