সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

দিনব্যাপী তথ্য মেলার সফল সমাপ্তি

দিনব্যাপী তথ্য মেলার সফল সমাপ্তি
অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশের ইতিহাসে দুটি জনবান্ধব আইন পাস হয়েছে ২০০৯ সালে। একটি হচ্ছে তথ্য অধিকার আইন এবং অন্যটি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন। তথ্য অধিকার আইন যাতে বাংলাদেশে পাস হয় সেজন্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশানাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এবং টিআইবির অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)সহ দেশের সকল গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবী মহল সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের নিমিত্ত বিধান করার লক্ষ্যে প্রণীত আইন।

তথ্য অধিকার আইনের সূচনায় লিখা হয়েছে, “যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত এবং তথ্য প্রাপ্তির অধিকার চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ; এবং যেহেতু জনগণ প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক ও জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা আবশ্যক; এবং যেহেতু জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা হইলে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি ও বিদেশী অর্থায়নে সৃষ্ট বা পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাইবে, দুর্নীতি হ্রাস পাইবে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হইবে; এবং যেহেতু সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি ও বিদেশী অর্থায়নে সৃষ্ট বা পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল-।”

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ বাস্তবায়নে জেলা পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সক্রিয়তায় ও নানা পদক্ষেপে এর প্রায়োগিক দিকটা যেভাবে প্রচারের আওতায় এসেছে, সেভাবে আসতে পারেনি তথ্য অধিকার আইন ২০০৯। এই আইনটি নিয়ে টিআইবি ও সনাক নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতায় যতোটা না সরব ও প্রচারমুখী, ততোটা সরকারি-বেসরকারি সংস্থার অন্য কেউ নয়। অবস্থা এমন, এই আইনের প্রায়োগিক দিক নিয়ে যেনো টিআইবি ও সনাকেরই যতো মাথাব্যথা। সেজন্যে দেশে বিদ্যমান সনাক-টিআইবির ৪৫টি ইউনিটের সবচে’ বড় বার্ষিক ইভেন্ট হচ্ছে তথ্য মেলা। এ মেলা আয়োজনে জেলা/উপজেলা প্রশাসনের আবশ্যিক সহায়তা এড়িয়ে যাওয়া যায় না।

কয়েক দফা তারিখ পেছানোর পর অবশেষে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও সনাক-টিআইবি গত ১৪ নভেম্বর ২০২২ সোমবার চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজন করে দিনব্যাপী জমজমাট এক তথ্য মেলা। সকাল ৯টা থেকে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত অন্তত ১৩ ঘণ্টা চলে এই তথ্য মেলা। এ মেলায় চাঁদপুরের সরকারি-বেসরকারি সেবাদানকারী ৩১টি প্রতিষ্ঠান তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী জনগণকে তথ্য প্রাপ্তির কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা সরকারি-বেসরকারি কোন্ কোন্ প্রতিষ্ঠান থেকে কীভাবে তথ্য পেতে পারেন সেজন্যে তথ্য প্রাপ্তির আবেদন ফরম পূরণ সম্পর্কে তাদেরকে ধারণা দেয়া হয়। এমন ধারণা পেয়ে ১৯০৫টি ফরম পূরণ হয় এবং সেমতে তাৎক্ষণিক প্রত্যাশিত তথ্যসমূহ সরবরাহ করা হয়।

চাঁদপুরে সর্বশেষ তথ্য মেলা হয়েছিলো ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি। তারপর করোনার কারণে তথ্য মেলা আয়োজনের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। সেজন্যে ২০২০ সালের শেষ দিকে ও ২০২১ সালে তথ্য মেলা আর আয়োজন করা যায়নি। করোনার প্রকোপ কমায় ২ বছর ৯ মাস ১৬ দিন পর গত ১৪ নভেম্বর ২০২২ তারিখে বহুল প্রত্যাশিত তথ্য মেলা আয়োজন করা হয়। আবহাওয়ার আনুকূল্যসহ জেলা প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতা পেয়ে সনাক-টিআইবি এবারের তথ্য মেলাটি আয়োজনে সর্বোচ্চ শ্রম, মেধা ও অর্থ বিনিয়োগ করে এবং কাঙ্ক্ষিত সাফল্যেরও দেখা পায়। এজন্যে মেলার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে হার্দিক অভিনন্দন জানাই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়