প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২১, ১২:১৬
আস্থা-অনাস্থার দোলাচলে সংবাদপত্র
নানা ঘটনায় টালমাটাল থাকে নেট-দুনিয়া। হাতের মুঠোয় খবরের পর খবর। খবর দেখার শুরু আছে, এর যেনো শেষ নেই। হাতের আঙ্গুল যতো চালানো যায়, ততোই খবর। মোবাইল, ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস্অ্যাপ, টুইটার, ভাইভার, ইউটিউব, গুগল, ইনস্ট্রাগ্রামসহ নিত্যনতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এবং ভুরি ভুরি টিভি চ্যানেলে তীব্র প্রতিযোগিতা। কে সবার আগে, সবার শীর্ষে সংবাদ বিক্রি/পরিবেশন করবে। এই ইলেকট্রনিক মাধ্যমের খবর যতোই চাউর হোক না কেনো কাগজের সংবাদপত্রের সংবাদের গুরুত্ব আজও সমাদৃত।
|আরো খবর
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদের ন্যায় বর্তমানে আঞ্চলিক বা জেলায় সংবাদপত্রের ভূমিকাও মুখ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অসংখ্য সংবাদপত্রের মাঝে সকল স্তরেই হাতেগোণা স্বল্পসংখ্যক পত্রিকা পাঠকের বিশ^াস-বিশ^স্ততা অর্জন করতে সক্ষম হন। সেই সকল পত্রিকার দায়ভারও অনেক বেশি সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে। এই দায়ভার ও সংবাদের বিশ^স্ততা সংবাদপত্রের সংশ্লিষ্টরাই পাঠকের মাঝে দায়িত্বশীল হস্তে সমর্পণ করছে। চাঁদপুর জেলায় চাঁদপুর কণ্ঠ পাঠকসমাজ বস্তুনিষ্ঠতায় যথেষ্ট আস্থাশীল। এই আস্থা/দায়িত্বশীলতার মাপকাঠি চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবার তিলে তিলে অর্জন করছে।
কাজ করলে ত্রুটি-বিচ্যুতি হবেই। এটাই স্বাভাবিক। কখনো কখনো দল বেঁধে সংবাদ সংগ্রহেও সংবাদের কেন্দ্র বিন্দুতে প্রবেশ না করে দায়সারা ভাব নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়ে থাকে। ফলে অনেক সময় সংবাদটি ফিকে হয়ে যায়।
সংবাদের আড়ালেও সংবাদ আছে, যা টিভি সিরিয়ালের ক্রাইম বিষয়ক অনুষ্ঠান দেখলে বুঝা যায়। নেট-দুনিয়ায় সংবাদের ছড়াছড়ি। দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকরাও সংবাদ সংগ্রহে করেন চারদিকে ঘোরাঘুরি। সংবাদ সংগ্রহে এসে সাংবাদিক নামধারী অনেকেই হয়ে যায় সংবাদের শিরোমণি। যারা হলুদ সাংবাদিক নামে পরিচিত। তথাপিও সঠিক সংবাদের গুরুত্ব হারায়নি। হারিয়ে যাবে না। সঠিক সংবাদ পরিবেশন করে সংবাদপত্র টিকে থাকবে। তথ্য সংগ্রহের নিয়ম-কানুন যথাযথ প্রতিপালন করে সংবাদ প্রকাশ করলে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অবশ্যই পাবে।
অর্থনৈতিক, অনুমাননির্ভর পারিপার্শি^ক বিষয় ভাবনা বিবেচনা আমলে নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করলে সংবাদটি গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে যায়। যাতে পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ‘সংবাদের প্রতিবাদ’ জানাতে বাধ্য হয়। দায়িত্বশীল সংবাদপত্র কাগজের সংবাদের প্রতিবাদলিপি প্রকাশে সংবাদপত্র ও তথ্য সংগ্রহকারী সাংবাদিকের ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্নাতীত হয়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রধান সম্পাদকের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। নির্দিষ্ট মানদ-ে সংবাদ সংগ্রহ করলে ‘প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ’ প্রযোজ্য নাও হতে পারে। বিশেষ করে দ্বি-পক্ষীয় সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে উভয়পক্ষের মতামত প্রকাশ করলে সাংবাদিকের দায়িত্বশীলতা প্রকাশ পায়।
দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রাত্যহিক সংবাদপত্রের একজন পাঠক হওয়া সত্ত্বেও বাস্তবের দুটি ঘটনার সংবাদ প্রকাশে দেখা গেলো পারিপাশির্^ক বিবেচনায় কেউ কেউ একপক্ষীয় সংবাদ প্রকাশ করেছে। যা আমাকে ব্যথিত করে। সত্য ঘটনা প্রকাশে আমার বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই। নিউজ প্রকাশের নামে হাত খরচে প্রলুব্ধ হয়ে বা কানকথা, লোকমুখে শোনা, ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে, বিভিন্ন প্রেক্ষপটে ঈর্ষান্বিত হয়ে মনগড়া, একপেশে সংবাদ পরিবেশন ভুক্তভোগী এবং সংবাদপত্র উভয়েরই ক্ষতির কারণ বটে। ভুক্তভোগী ব্যক্তির কর্ম ও ব্যক্তিত্বের দায়ভার সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিবেচিত হবে। যা অনেক ক্ষেত্রে অদৃশ্যমান। সংবাদপত্রের ভূমিকা দৃশ্যমান। কারণ প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদলিপির মূল সারমর্ম হচ্ছে সংবাদের ‘তথ্য সংগ্রহের ত্রুটি’। যাতে সাংবাদিকের সাথে সাথে সংবাপত্রের মানদ- ক্রমে ক্রমে বিবর্ণ হয়ে যায়। প্রতিবাদলিপিতেও সংবাদপত্র তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকেশ করে। পাঠক সচেতন। ত্রুটিপূর্ণ/প্রতিবাদলিপি প্রকাশিত সংবাদপত্র ক্রয় করতে আগ্রহী নয় পাঠক। সংকটের শেষ নেই। তথ্যের অভাব নেই। গ্লোবাল যুগে নিউজ আজকাল অহরহ। দায়িত্বশীল সংবাদ উপস্থাপন করলে মানুষ অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করবে। স্মরণ করবে কালে কালে।
অন্যের দ্বারা প্ররোচিত না হয়ে, নিরীহ জনগণের ভাবনা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করুন। সহজ-সরল মানুষগুলো আজও সংবাদপত্রের সাথে সংশ্লিষ্টদের কুর্নিশ করে। ভুল তথ্য পরিবেশনে ব্যক্তি-পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্র অহেতুক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আশা করি দায়িত্বশীল সংবাদপত্রের সম্পাদকম-লী মহোদয়গণ এক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিবেন।
প্রত্যাশা : আগামীদিনগুলোতে প্রতিবাদবিহীন সংবাদ প্রকাশে দৃঢ় প্রত্যয়ী হবে চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবার। সংবাদপত্রের অক্ষরের নয়নমণির জন্মবার্ষিকীতে মোবারকবাদ।