শনিবার, ১০ মে, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৫, ১২:৩৫

অসত্যের যাঁতাকল

আবদুল্লাহিল কাফী
অসত্যের যাঁতাকল

স্মরণাতীতকাল থেকে একাল পর্যন্ত সভ্যতার অধিকাংশ মানুষ অসত্যের যঁাতাকলে পিষ্ট হতে হতে জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছে। তদুপরি সময়ের যঁাতাকল ভর করে থাকে অহর্নিশ। কালের এমন বিস্ময়কর পরিবর্তনে সমাজ দ্রষ্টাগণের ভেতরে বেশ ঔদাসীন্য ভাব দেখা যায়। এহেন অবস্থায় অতিশয় সাধারণ মানুষের মনোরাজের অবস্থা কী হতে পারে তা সহজেই আন্দাজ করা যায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন বলে ভবতারিণীর অশেষ কৃপায় আমরা প্রীতি লাভ করে প্রীতিমুগ্ধ হই। অর্থাৎ বিষণ্ন শতাব্দীর যে ক্রান্তিকাল বইছে, তাতে হতাশার গ্লানিকে গলাধঃকরণ করেই প্রত্যাশার তৃষ্ণা মেটাতে হয়। লোভ-লালসার উদ্দাম উন্মাদনায় উলঙ্গ নৃত্যে মানুষ যেভাবে বেসামাল হয়ে পড়ছে, তাতে মানুষের নীরব আর্তনাদ সর্বদাই আকাশ-বাতাস ভারী করছে। সমাজ-সভ্যতা এবং মানুষের রহস্যময় গভীরতা তা চিরন্তন রূপেই বিস্ময়কর। এ নিয়ে বিশ্ববিশ্রুত গবেষকগণ বহুকাল ধরে ধরিত্রীর কোলে মাথা ঠুকে রহস্যের পাট চুকাতে ভবলীলা সাঙ্গ করেও কূল-কিনারা পেয়েছেন বলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তথাকথিত শ্রীযুক্ত সমাজ দর্পণতুল্য মানুষ যারা কি-না পৃথিবীর সকল সুখ-শান্তিকে উপভোগ করে সদর্পে নিজেদের জাহির করতে কসুর করছে না। আকাশ আর জমিনের মাঝে তাদেরই দৌরাত্ম্য স্রোতস্বিনীর মতো প্রবহমান। এরা কেবল সার্বক্ষণিক চরণ পাতায় অন্যের তৈল মর্দনকে পছন্দ করে থাকে। যার ফলে তারা মানব কল্যাণের কথা ভুলে গিয়ে অপকর্মের দিকপাল হয়ে মানুষের কাছে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। অনিন্দ্য সুন্দর পৃথিবীর প্রতি তাদের তেমন কোনো দায়বদ্ধতা আছে বলে মনে হয় না। এরা তারাই, যারা দুর্নীতিবাজের তকমা আপন ললাটে লাগিয়ে বিশ্ব চরাচরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এরা আছে, এরা থাকবে, যতক্ষণ না পৃথিবী তার জৌলুস হারাবে।

মূলত জ্ঞানপাপীরা জ্ঞানেশ্বরের বিশাল বিশেষণ লাগিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের যে-রূপ ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছে তা বিস্ময়করই। ভাষা বিজ্ঞানীগণও যেন এদের নিয়ে বেশ বিপাকে আছে। কোন্ ভাষায় যে এদেরকে পুনশ্চ বিশেষায়িত করা যায়! এরা রাজা নয়, কিন্তু রাজাধিরাজের মতো অঁাটঘাট বেঁধে মসৃণ পৃথিবীকে অমসৃণ করছে। সমাজের চোখ এদেরকে আর সুন্দর চোখে দেখে না। বাস্তবতা হলো, এদের উপলব্ধির গোড়ায় যতোই বিশুদ্ধ জল ঢালা হোক না কেন গোড়ায় পচনের আগে মগজে পচন ধরে। সুতরাং ঐসব কথিত বিকৃত মস্তিষ্কের ধারক বাহকদের না আছে বিবেকের জ্বালা না আছে প্রকৃতির জ্বালা। এদের চোখে বিবেকের দণ্ড আর ন্যায়দণ্ড উভয় দণ্ডই মূল্যহীন দণ্ড। মূলত এরা অসৎ কর্মের ওপর ভর করেই সারাবছর হিসেবের খাতা অদল বদল করে জমা খরচের হিসাব মিলায়। ফলস্বরূপ জাতির বিশুদ্ধ মানুষগুলো আজ তামসিকতার বেড়াজালে আটকে নিষ্প্রভ হয়ে আছে। প্রকৃতপক্ষে জাতির সকল অনাসৃষ্টির মূলে রাষ্ট্রের বিশেষায়িত বিশেষণধারী করিৎকর্মা ঐসব কলমধারী মানুষ। যারা কিনা বাধাহীনভাবে রাতকে দিন আর দিনকে রাত করতে একটুও দ্বিধাগ্রস্ত হয় না। এদের হাত এতোটাই লম্বা থাকে যে, সুউচ্চ শৈলাগ্র অতিক্রম করতে তিলার্ধ কালও বিলম্ব হয় না।

এ কথা সত্য যে, সত্যান্বেষীগণ সত্যের গীত গাইতে গাইতে প্রকৃতির দুয়ারে অঞ্জলি পেতে আশা পূরণে প্রহর গুণতেন। অতঃপর প্রাপ্তিযোগে প্রশান্তি লাভ করতেন। আজকাল সেসবের আর দেখা যায় না। স্বপ্ন ভঙ্গের কষ্ট নিয়েই মানুষ আজ জগৎ সংসারে বেঁচে আছে।

এবার কথার বাৎসায়ন কীরূপ রসায়ন সৃষ্টি করতে পারে সেদিকে দৃষ্টি দেয়া যাক। দেশের তথাকথিত দর্পণতুল্য মানুষের প্রহসনের কৌশলের ধরণ দেখে চোখ কপালে ওঠার মতোই অবস্থা। তারা যে কথা বলে সে কথা রাখে না। যে কথা রাখে সে কথা জুতসইও নয়,

ধোপেও টিকে না। মানুষ প্রকাশ্যে যে কথাগুলো বলে মোটেও তারা কর্ণপাত করে না। জাতিকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে দঁাড় করানো যেন এদের মূল কাজ। ভঁাড়ামি আর প্রহসন একমাত্র অবলম্বন। কাজেই খঁাটি সত্যের উপর টিকে থাকাটা আজকাল অধিকাংশ মানুষের জন্যে নিতান্তই অগ্নিপরীক্ষার। কেননা অসৎ আর চাটুকারের দল জাতির জমিনের দখল নিয়ে যেভাবে মত্ত হয়ে আছে, তাতে ভবিষ্যৎ আলোর বাতিঘরগুলো সায়াহ্নের অস্তমিত সূর্যের মতো অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়ার মতোই অবস্থা। বুঝাই যায় কী বেহাল দশার ভেতরে মানুষের জীবনকাল অতিক্রান্ত হচ্ছে। যেখানে মানুষ শিরদঁাড়া উঁচু করে মুখের সরস কথা উগরাতে পারছে না, সেখানে দিব্য সারথির কথা বলে রসসিঞ্চন করা অর্থহীন প্রলাপ মাত্র। একদিকে মানুষ চাটুকারদের দৌরাত্ম্যে অঁাধারে তলিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে জ্ঞানপাপী চামারের দঙ্গল জাতির সর্বাঙ্গ খুঁড়ে খুঁড়ে খাচ্ছে।

মূলত সত্যাসত্যের কাসুন্দি ঘেঁটে নিখাদ সত্যের রস বের করে আনা বেশ কষ্টের। কেননা কণ্টকাকীর্ণ পথের বিড়ম্বনার কথা সকলেরই জানা আছে। সত্যের অপলাপকারীগণ যেভাবে চারদিকে অক্টোপাসের মতন ডানা মেলে আছে, তাতে বিশুদ্ধ জ্ঞানীগণ সত্য ও ন্যায়ের কথা বলতে গিয়ে প্রতিকূলতার মুখোমুখি দঁাড়াতে হচ্ছে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা এমনই দঁাড়িয়েছে যে, সত্য নামক শব্দের অকাল প্রয়াণে ফাগুনের অগ্নি হাওয়ায় শ্মশানের ভস্মগুলো যেন আজ দক্ষিণারঞ্জনকে তাড়াচ্ছে। যার ফলে মানুষ চোখ খোলা রেখে কানে তুলো দিয়ে সময় পার করছে। তবে এসব নিয়ে তর্কযুদ্ধে নামা অদরকারী। কেননা মূর্খ পণ্ডিতগণ তর্কালংকার সেজে বহু সময় ধরে ওঁত পেতে আছে। সুযোগ যেন বেহাত না হয়।

শব্দের গঁাথুনিতে সত্যকে যেভাবেই মসৃণ করার অবতারণা করা হোক না কেন, অসত্যের দাপাদাপিতে সুন্দরের অবয়ব সৃজন করা যথেষ্ট পীড়াদায়ক। দিব্যচক্ষে যা দেখা যায় মনশ্চক্ষুতে তার অনুরণন বুঝা যায়। নীতিভ্রষ্ট মানুষের দল যেভাবে ভারী হচ্ছে তাতে জাতির বিশুদ্ধ বিবেকের জন্যে মঙ্গলপ্রদ নয়। সংগত কারণেই বলতে হয়, যঁারা সত্যের প্রদীপ জ্বালায় তঁারা জানে যে প্রদীপের আলো জ্বালাতে কতোটা তমসার চোখ রাঙানিকে সামাল দিতে হয়। আর যারা ঐ প্রদীপ জ্বালায় না তাদের কাছে ঐ প্রদীপ শুধুই আলোর খেলা।

আলোর নিচে অন্ধকার কেবল উপমা উৎপ্রেক্ষার এক অনুবেদন। মহামনীষীগণ এর অর্থবোধের গভীরতাকে যুগোত্তীর্ণকাল ধরে উদ্ভাসিত করেছেন, কিন্তু দেশের কথিত করিৎকর্মাদের অন্তঃপুরে সাড়া জাগানো রক্তাম্বরী বহ্নি শিখার মতো। তবে অন্ধকার যারা দেখতে পায় না, তারা পৃথিবী সুন্দর থেকে অনেক দূরে বাস করে। চক্ষুষ্মান হলেও তারা অন্ধের কাতারের। মোহগ্রস্ত-লোভাকৃষ্ট। এদের জীবনে বিবেকের জ্বালাও নেই বিষের জ্বালাও নেই। একদিকে বিষ ভক্ষণ করে অন্যদিকে বিষ্ঠাও ভক্ষণ করে। এরাই ক্ষণে ক্ষণে খোলস বদলায়।

প্রকৃত বিশ্বাসীরা কথায় কথায় বলে থাকেন, সত্যবাদীরা যতবার মরে ততবারই বঁাচে, আর অসত্যবাদীরা বারবার মরে না একবারই মরে পৃথিবীকে জানান দিয়ে যায়, তোমরা সাবধান হও, সামনে গাঢ় অন্ধকার। সত্যের কষ্টিপাথরে অসত্যকে যতোভাবেই ঘষামাজা করা হোক না কেন তথৈবচ রূপ ধারণ করবে। এ কথা ঠিক যে, সত্য কথন বিবেকের নির্মল উৎসারণ হলেও সময়ের তালে কখনও তা হয় প্রতিপাদ্য কখনও হয় শ্রুতিগ্রাহ্য। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, দেশের তথাকথিত জ্ঞানীজন-গুণীজন-বিদগ্ধজন সত্যের জাবর চিবুতে চিবুতে দন্তশূলের সৃষ্টি করে ও জিহ্বায় স্বাদ নিতে পারে না, বরং তেতো স্বাদই চাটে। বিলক্ষণ বুঝা যায় সভ্যতার মানুষের কাছে সত্য আজ কতোটা জীবন্ত হয়ে আছে।

ন্যায়পাল ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে সর্বজনের কাছে সুবিদিত। আর ঐ ন্যায়পাল যদি তরণীর হাল ছেড়ে দেয়, তাতেই বিপত্তির অঁাচড় লেগে যায় তুষার ধবল জীবনাকাশে। পরক্ষণেই জমে থাকা মেঘরাশি গগণতলে বিরামহীন আস্ফালন দেখিয়ে থাকে। ফলে দায়বদ্ধতাকে আড়াল করার অবকাশ আর থাকে না। বিষয়টা খোলসা করা দরকার। এক সময় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কচি-কোমল কিশোর-কিশোরীদের অবসর বিনোদনের নানাবিধ খেলার মধ্যে একটি খেলা ছিলো বেশ উপভোগের। আর তা হলো চোর-পুলিশ খেলা। সাদা কাগজের টুকরো ছিলো এর নান্দনিক উপকরণ। চিত্তবিনোদনের জন্য বেশ মজার খেলাই। সভ্যতার বিকাশের সাথে প্রযুক্তির উদ্ভাবনী শক্তির কাছে ঐসব খেলার নান্দনিকতা নেই বললেই চলে।বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, চিত্তাকর্ষক ঐ খেলাটাই একালে এসে খোলস বদলে হয়েছে কালি-কলম-চোরের খেলা। তবে এ খেলা সিঁদেল চোরের খেলাও নয়, ডাকাতের খেলাও নয়। তবে অধিক উঁচু মানের খেলা। সাধারণের নাগালের বাইরে থাকে এ খেলার গুটির চাল। মগডালে বসা আলঙ্কারিকগণ এসবের অলংকার। শুধু যাদের হাতের আঙ্গুলের ডগায় বিশ্বাসী কলমের নিপুণ শক্তি লুকিয়ে থাকে, তারাই এ খেলায় অংশীদার। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, তথাকথিত অস্ত্রধারীরা কলমধারীদের কাছে আজ কতোটা অসহায়। এদের হাত এতোটাই লম্বা থাকে যে, সুউচ্চ শৈলাগ্র অতিক্রম করে ওপাশের মৃত্তিকা স্পর্শ করতে তিলার্ধকালও দেরি হয় না ।

এদেশের তথাকথিত বিদগ্ধজন কথায় কথায় বিশুদ্ধ বিবেকের কথা বলে আকাশ-বাতাস ভারী করে জাতির মানুষগুলোকে বোকার কাতারে দঁাড় করিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন। তারা এ কথা বুঝতে চায় না যে, ধবল তুষারে আটকে থাকা প্রকৃত জ্ঞানীগণ তুষার শূন্য হয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। মূলত তথাকথিত দুর্নীতিবাজ, দুর্নীতিপরায়ণ, উৎকোচের উৎকৃষ্ট ধ্বজাধারীগণের কাছে প্রশান্তির ললিত বাণী কিংবা ধর্মের অমিয় বাণী যে প্রকরণেই শুধানো হোক না কেন, তাদের কাছে এ বাণী নিরস বাণীর মতোই। এক কানে ঢুকে অন্য কান দিয়ে বের করে দেয়। মূলত এসব বাণী তারাই অনুধাবন করে, যারা বোধের জগৎকে প্রফুল্লচিত্তে জাগ্রত রাখে। আমাদের বিশ্বাসের ভাণ্ডার ভরাট থাকলেও সত্যের আলোকরশ্মি ছড়াতে যৎপরোনাস্তি হিমশিম খেতে হয়। তথাকথিত জ্ঞানপাপীদের ভঁাড়ামিতে সমাজ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের মানুষ আজ দারুণ বেকায়দায় আছে। কঁাটা যেন গলায় বিঁধে আছে। না গেলা যায় না উগরানো যায়। ধনতৃষ্ণার কাঙ্গালগণ অনাবৃত কলমের অঁাচড়ে দিনমুখ হতে সন্ধ্যামুখ পর্যন্ত স্বার্থ হাসিলের জন্যে উদগ্র বাসনা নিয়ে যেভাবে পথের দূরত্ব বাড়াচ্ছে, তাতে দিকভ্রান্ত হওয়াটা নিতান্তই সময়ের ব্যাপার। ঘোষিত হোক কিংবা অঘোষিত হোক এরা দুর্নীতিপরায়ণ। চৌর্যবিদ্যায় দারুণ পাকা হাত। বাইরে মানুষ এদের বিষয়ে যে পরিমাণ জানে তার চেয়ে ঢের বেশি জানে ভেতরের মানুষ। অর্থাৎ রাষ্ট্রযন্ত্রের কুশীলবগণ।

পৃথিবীটা স্বর্গের চারণভূমি হিসেবে আমাদের বিশ্বাসের জমিন দখল করে আছে। সভ্যতার মানুষ বিশুদ্ধ সত্যের চাষ করতে বিশ্বাস মতে বদ্ধপরিকর। সে কথা জোর দিয়ে বলার মতো অবস্থা আজ আর নেই। কালের ধ্বনি প্রতিধ্বনিকে যারা প্রতিনিয়ত নিজের মতো করেই আমলে নিচ্ছে, তারা সত্যান্বেষী। শাশ্বত সত্যকে কণ্ঠে ধারণ করে মানুষের মাঝে সত্যের নিগূঢ় বাণী বিলিয়ে দিয়ে তৃপ্তি লাভ করছে। বিস্ময়কর হলো, একদিকে মানুষ সত্যের বন্দনা করছে, অন্যদিকে অসত্যকে অঁাকড়ে ধরছে। প্রকৃত সত্যকে অধর সুধায় মন্থন করে যে তৃপ্তি পাওয়া যায় তা আর ভিন্ন প্রকরণে পাওয়া যায় না।

সত্য স্বর্গ জ্যোতির মতো অত্যুজ্জ্বল হলেও অসৎ প্রকৃতির মানুষের কাছে তা অনুজ্জ্বল। কাজেই কলমের খেঁাচায় সত্য বদলানো উঁচু তলার জ্ঞানপাপীদের উৎপীড়ন এভাবে বাড়তে থাকলে জাতির সুন্দর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত অন্ধকারে নিপতিত হবেই, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অপরিণামদর্শিতা, অদূরদর্শিতা এবং জিঘাংসার যে আস্তরণ জাতির গতর ক্ষত-বিক্ষত করছে, তার থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করা জাতির বিশুদ্ধ বিবেকের দায়বদ্ধতাকে আড়াল করার কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু সাধুর সাবধান বাণী কতোটা ক্রিয়াশীল তা ঐ নির্মোহ সাধুর লোটার বিশুদ্ধ পুষ্পজলই বলে দেয়। একদিকে সাধু লোটার জল ছিটিয়ে পাপ পঙ্কিলতা দূর করে, অন্যদিকে কদর্য মানুষগুলো দম্ভভরে দৃষ্টি বদলায়।

আবদুল্লাহিল কাফী : নাজির ( অব.), জেলা জজ আদালত, চঁাদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়