বুধবার, ০৭ মে, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৫, ০১:২৬

"কেউ দেখেও দেখে না"

ঢাকা-দোহারে লাগাতার দুর্ঘটনা, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা চরমে

আব্দুল মান্নান সিদ্দিকী, মুন্সিগঞ্জ

ঢাকা-দোহার মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের জাহানাবাদ এলাকায় অটোরিকশা দুর্ঘটনায় লামিয়া ও সামিয়া নামের দুই শিশু আহত হয়েছে। সোমবার (৫ মে) বিকেল চারটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শ্রীনগরের মধ্যবাঘরা থেকে অটোরিকশা চালক আব্দুল জলিলের চালিত অটোরিকশায় করে শিশুদের মা ও দাদির সঙ্গে ঢাকা যাচ্ছিল দুই শিশু। পথিমধ্যে জাহানাবাদ এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায় অটোরিকশাটি। এতে অটোরিকশাটি উল্টে যায় এবং শিশু লামিয়া ও সামিয়া মাথায় আঘাত পায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য:

দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা ছুটে এসে দ্রুত শিশুদের উদ্ধার করে। তবে ভাগ্যক্রমে গুরুতর কোনো আঘাত না পাওয়ায় নিকটবর্তী একটি ওষুধের দোকানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অভিভাবকরা শিশুদের নিয়ে নিজ গন্তব্যে ফিরে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, "এই রাস্তায় প্রতিনিয়তই এমন বেপরোয়া চালকের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু কোনোরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।"

আশঙ্কাজনক বেপরোয়া চালনা ও নিরাপত্তাহীনতা:

ঢাকা-দোহার সড়কটি মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগপথ। কিন্তু এই সড়কে বেপরোয়া রিকশা ও অটোরিকশা চালনা এখন রীতিমতো আতঙ্কের নাম। পথচারী ও যাত্রীরা বলছেন, লাইসেন্সবিহীন চালক, অতিরিক্ত গতিতে চলাচল, এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের অভাব — সব মিলিয়ে এই সড়ক প্রতিনিয়তই মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে।

একজন দোকানদার জানান, "এই সড়কে প্রতি মাসেই কয়েকটি ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন বা ট্রাফিক বিভাগের কোনো তদারকি নেই।"

দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি:

স্থানীয় জনগণ বলছেন, এই সড়কে নিয়মিত টহল, অটোরিকশা ও রিকশাচালকদের লাইসেন্স যাচাই, এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও স্কুল-কলেজ সংলগ্ন এলাকায় স্পিড ব্রেকার স্থাপন জরুরি। তাদের মতে, স্পিড ব্রেকার থাকলে চালকেরা নিয়ন্ত্রিত গতিতে যান চালাতে বাধ্য হবে এবং দুর্ঘটনার হার কমবে।

স্থানীয় প্রশাসনের দায়বদ্ধতা কোথায়?

এ প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের এক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা সড়কের উন্নয়ন ও সংস্কারে কাজ করছি। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও চালকদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের।”

অন্যদিকে শ্রীনগর থানার এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা দুর্ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। চালক বা গাড়ির বৈধতা যাচাই করা হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারি বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চ

এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে, দেশের মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কতটা নড়বড়ে। দুর্ঘটনায় শিশু দুটি ভাগ্যক্রমে বড় ধরনের আঘাত থেকে রক্ষা পেলেও, ভবিষ্যতে আরেকটি বড় দুর্ঘটনা না ঘটে তার নিশ্চয়তা কে দেবে?

এখন সময়, কথা নয় — পদক্ষেপ নেওয়ার।

"প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটে, কিন্তু কেউ দেখেও দেখে না!" — স্থানীয় দোকানদার

"স্পিড ব্রেকার থাকলে হয়তো আজ আমার নাতনিদের এমন বিপদে পড়তে হতো না।" — শিশুদের দাদি

ডিসিকে / এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়