প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৫৩
মধ্যরাতের আতঙ্ক: কিশোর গ্যাংয়ের নৃশংস হত্যা
রক্তাক্ত রাত
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডবে ওষুধ ব্যবসায়ী হাসিবুল ইসলাম (৪০) নির্মমভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার (১ জানুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে ঢাকা থেকে শ্রীপুরের শ্বশুরবাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাসিবুল বরিশালের বানারীপাড়া থানার ইপুহার এলাকার মো. আব্দুল হাইয়ের ছেলে।
|আরো খবর
নিহতের স্ত্রী মাহমুদা আক্তারের ভাষ্যমতে, যানজটের কারণে রাত তিনটার দিকে তাদের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছাতে দেরি হয়। বাড়ির সামনে পৌঁছানোর পরপরই স্থানীয় রুবেল, রোমান ও অন্তরের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি কিশোর গ্যাং তাদের ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে হাসিবুল বাধা দেন। স্ত্রী ও সন্তানদের সামনেই তাকে নির্মমভাবে ইট দিয়ে আঘাত করা হয়।
মাহমুদা বলেন, "আমরা রাতের খাবার খেয়ে ঢাকা থেকে রওনা দিই। আজ সন্তানদের স্কুলে ভর্তির কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু বাড়ির সামনে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটবে, তা ভাবতে পারিনি।"
আটক ও তদন্তের অগ্রগতি:ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য অন্তর (২০) এবং রোমান (২১)-কে আটক করেছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, রুবেলসহ বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তিনি আরও বলেন, "নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং আমরা শিগগিরই অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।"
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া:স্থানীয়রা জানায়, অভিযুক্তদের মধ্যে অন্তরের বাড়ি হাসিবুলের শ্বশুরবাড়ি থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে। এলাকাটিতে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল। তবে এত বড় সহিংসতার ঘটনা এ প্রথম।
নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ: :ঘটনার পর থেকে শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
শেষ কথা:পরিবারের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও হাসিবুল ইসলামের মতো একজন নিরীহ ব্যবসায়ীকে এমন নৃশংসতার শিকার হতে হলো। ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতির একটি উদাহরণ। দেশের প্রতিটি এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ না নিলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো সম্ভব হবে না।