শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় ইমামকে চাকরি ছাড়ার নির্দেশ!
  •   এনআইডিতে ভোটার এলাকা হিসেবে থাকছে না বর্তমান ঠিকানা
  •   জাহাজে ৭ খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটনসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি
  •   নিখোঁজের একদিন পর বৃদ্ধের মরদেহ মিললো পুকুরে
  •   সৌদি আরবে বাংলাদেশের ১৬তম  রাষ্ট্রদূত মো. দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২১, ০০:০০

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি

ঢাকায় রোগী না পাঠিয়ে স্থানীয়ভাবেই চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা রাখুন

ঢাকায় রোগী না পাঠিয়ে স্থানীয়ভাবেই চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা রাখুন
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

চাঁদপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা গতকাল রোববার বিকেলে কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এ ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। সভার শুরুতে জেলা প্রশাসক চাঁদপুরের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মন্ত্রীকে অবহিত করে বলেন, চাঁদপুরে করোনা পরিস্থিতির তেমন একটা উন্নতি এখনো দেখা যায়নি। আক্রান্তের হার আজ কিছুটা কমলেও আবার বেড়ে যাচ্ছে কাল। সবাই যদি সম্মিলিতভাবে এগিয়ে না আসে তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের প্রশাসনের অনেক ম্যাজিস্ট্রেট, কর্মকর্তাণ্ডকর্মচারীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। পুলিশসহ বিভিন্ন দফতরের লোকজন আক্রান্ত হচ্ছেন। তারপরও আমরা রাতদিন চেষ্টা করে যাচ্ছি একে দমাতে। প্রশাসন কাজ করছে। তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে ৮৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮৯টি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। পৌরসভাগুলোতেও কমিটি করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার দলের হয়েও কিছু কিছু লোক এখনো সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে উদ্বুদ্ধ হতে পারছেন না, অংশ নিতে চাইছেন না। বরং কোনো কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি থেকে মনে হয় যে সরকারের কর্মকাণ্ডের বিপক্ষে অবস্থা নিয়েছেনণ্ডএমন পোস্ট দিচ্ছেন এবং সমালোচনা করছেন। যা কোনোভাবেই ঠিক না। সরকার এতো কিছু করে যাচ্ছে, তাই প্রশংসা পাবে। জেলা প্রশাসক বলেন, এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা তাদের পাশে পেতে চাই। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যদি কাজে নামি তাহলে তা সুন্দর হয়।

জেলা প্রশাসকের এসব কথা শুনে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, আমি আগেও বলেছিণ্ড এ ধরনের অপকর্ম বরদাস্ত করা হবে না। যারা এসব করে তাদের আইডি স্ক্রীনশর্ট করে রেখে দিন। এরা কখনো দলের কোনো কর্মী বা নেতা হতে পারেন না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনণ্ড এই তিনজনের করোনা ছাড়াও রাষ্ট্রের অন্য কাজগুলো সম্পাদন করতে হয়। তাদের পাশে থেকে সম্মিলিতভাবে বা নিজেরা কাজ করে যেতে হবে। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে দলের লোকদের কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে আমি আগামীকাল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যদের সাথে কথা বলবো।

সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্যাহ শিক্ষামন্ত্রীকে চাঁদপুরের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, জুলাই মাসের গত ১৮ দিনে ১৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এখন এক ঘরে একজন আক্রান্ত হলে অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, আইসোলেশন ওয়ার্ডে বেড সংখ্যা কম ছিল। সবগুলো হাসপাতালেই বেড বাড়িয়েছি। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিটি হাসপাতালে কমপক্ষে আরও ২০টি বেড বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের ১৫০টি বেডকেই করোনা রোগীদের চিকিৎসার্থে ছেড়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে যেসব সাধারণ রোগী ভর্তি হয়েছেন তাদেরকে অন্য বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে স্থানান্তর করার ব্যবস্থা করুন।

মন্ত্রী বলেন, আপনাদের আইসিইউ সরঞ্জামাদি এসেছে এবং অন্যসব সরঞ্জামাদি পেতে যদি দেরি হয় তাহলে সেটি আমাকে জানান। প্রয়োজনে আমরা আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তা ব্যবস্থা করে দেবো। যা যা আপনাদের নেই কিন্তু এখনই প্রয়োজন এবং যা যা আছে তার একটি তালিকা আমাকে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। তিনি বলেন, ঢাকায় রোগী না পাঠিয়ে স্থানীয়ভাবেই চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা রাখুন। খুব গুরুতর না হলে ঢাকা বা অন্য কোনো জায়গায় পাঠানো ঠিক না। এখন যে পরিস্থিতি এসেছে নিজেদের স্থানে নিজেরাই ব্যবস্থাগুলো করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীকে জানানো হয়, অক্সিজেন প্ল্যান্ট থেকে রোগীরা ঈদের পরই অক্সিজেন পাবেন। এছাড়া আবুল খায়ের গ্রুপ পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আবারও বলছি সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। প্রশাসনকে তিনি বলেন, আগামী লকডাউনে সরকারি বিধিণ্ডনিষেধ মানাতে যতোটা কঠোর হওয়া দরকার সেটিই আপনারা হবেন। সবমিলে সবাইকে চেষ্টা করে যেতে হবে এই মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, কোনোরকম দায়িত্বহীন কথাবার্তা সহ্য করা যাবে না।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ হাবিব উল করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াছ প্রমুখ।

এছাড়া এই ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়