সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৫, ০১:০৯

শ্রীনগরে বাড়ির সীমানা নিয়ে চরম উত্তেজনা: সংঘর্ষের আশঙ্কা

চার বছর আগের নারকেল গাছকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীদের মধ্যে বিরোধ, সালিশেও মিলছে না সমাধান

আব্দুল মান্নান সিদ্দিকী
শ্রীনগরে বাড়ির সীমানা নিয়ে চরম উত্তেজনা: সংঘর্ষের আশঙ্কা
ছবি : প্রতীকী

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মধ্য বাগড়া মনিপাড়া এলাকায় বাড়ির সীমানা নিয়ে পুরনো বিরোধ নতুন করে চরমে পৌঁছেছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, প্রায় চার বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল দাস তার নিজস্ব জমিতে একটি দালান নির্মাণ করেন। দালানটি নির্মাণের সময় তার প্রতিবেশী মঙ্গল দাস আপত্তি জানালেও সুনীল দাস তা উপেক্ষা করে সীমানা ঘেঁষে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন। মঙ্গল দাস দাবি করেন, দালানটি নির্মাণের আগে তিনি নিজ সীমানায় একটি নারিকেল গাছ রোপণ করেন। বর্তমানে গাছটি বড় হয়ে যাওয়ায় এর ডালপালা সুনীল দাসের বাড়ির কার্নিশে আঘাত করছে এবং ক্ষতি করছে বলে অভিযোগ ওঠে।

“আমি অনেক আগেই গাছটি রোপণ করেছি। এখন গাছ বড় হয়েছে বলে যদি সমস্যা হয়, সেটা তো আমার দোষ নয়!” — মঙ্গল দাস

“তিন শতাংশ জমিতে বাড়ি করতে হলে জায়গা ঘেঁষেই তো করতে হয়। গাছ তখন ছোট ছিল, এখন ক্ষতি করছে।” — উত্তম দাস

দুই পক্ষের দাবি-পাল্টা দাবি

এ বিষয়ে মঙ্গল দাস জানান, “আমি সুনীল দাসকে বলেছিলাম, বাড়ি তৈরি করতে হলে অন্তত কিছুটা জায়গা ফাঁকা রেখে তৈরি করতে। কিন্তু তিনি কারো কথা না শুনেই সীমানা ঘেঁষে বাড়ি তৈরি করেন। আমি অনেক আগেই নারিকেল গাছটি রোপণ করেছিলাম। এখন গাছটি বড় হয়ে যাওয়ায় তিনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।”

অপরদিকে সুনীল দাসের ভাতিজা উত্তম দাস জানান, “আমার চাচার মাত্র ৩ শতাংশ জমি। তাই বাধ্য হয়ে সীমানা ঘেঁষেই দালান তুলতে হয়েছে। তখন গাছটি ছোট ছিল, কোনো সমস্যা হয়নি। এখন গাছটি বড় হয়ে বাতাসে নড়াচড়া করলে ডালপালা কার্নিশে আঘাত করে বিল্ডিংয়ের ক্ষতি করছে।”

বিচার বৈঠকেও মেলেনি সমাধান

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একাধিক সালিশ বৈঠক বসেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। উভয় পক্ষই নিজেদের জায়গার দাবি থেকে সরে আসতে নারাজ।

মঙ্গল দাসের শ্যালক তপন দাস, যিনি ঢাকায় কর্মরত, জানান, “হঠাৎ ফোন পেয়ে জানতে পারি বাড়িতে সমস্যা। ভয়ে ছুটে আসি। এসে দেখি নারিকেল গাছকে কেন্দ্র করে এত বড় বিরোধ! আমি চাই সমস্যাটির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক।”

স্থানীয় মাতব্বর সুকুমার জানান, “ঈদের পর উভয় পক্ষকে নিয়ে আবার বসা হবে। চেষ্টা থাকবে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে।”

সংঘর্ষের আশঙ্কা

এলাকাবাসীর মতে, বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে চললেও এখন গাছটি বড় হওয়ায় সমস্যা প্রকট হয়েছে। উভয়পক্ষের উত্তেজনা দিনদিন বাড়ছে। যদি দ্রুত সমাধান না হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এ বিরোধ বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।

স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দাবি উঠেছে, উভয় পক্ষের জমির সীমানা নির্ধারণে ভূমি অফিসের মাধ্যমে সঠিকভাবে পরিমাপ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে, যাতে উত্তেজনার অবসান ঘটে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসে।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়