প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৫১
পৈত্রিক সম্পত্তির কানাকড়িও পায় নি দুবোন : আদালতে বাঁটোয়ারা মামলা

বিএস খতিয়ান বলে খতিয়ানে মালিক দুই ভাই দুই বোন। খতিয়ানে দুই বোন মিলে ৯৩.২৫ শতক জমির মালিক। কিন্তু দুই বোনকে এক কানাকড়িও দেয়নি ভাই ও তাদের পরিবার। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি বিধায় বাধ্য হয়ে তারা আদালতে বাঁটোয়ারা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের পশ্চিম সন্তোষপুর গ্রামে।
জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত উমেদ আলীর দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে আলী হোসেন সবার বড়ো। আলী হোসেনের অংশ
.৩৭৬, দেলোয়ার হোসেনের অংশ
.১৬৪, মাতা মৃত ছলেমা খাতুনের অংশ .৭৮, জহুরা খাতুনের অংশ .১৪৮, কোহিনূর বেগমের অংশ .১৫৬ এবং ফয়েজের নেছার অংশ .৭৮ । যা ওই ইউনিয়নের ১২৮নং সন্তোষপুর মৌজার ২৩৫ খতিয়ানমূলে পাঁচ ভাই বোন ১ একর ২৯ শতক জমির মালিক হন।
হিস্যা .৩৭৬ অনুযায়ী আলী হোসেন জমির মালিক হন পুরো খতিয়ানের ৪৮.৫০ শতক। কিন্তু আলী হোসেন ৫৭৯ এবং ৫৮১ দুই দাগে জমি বিক্রি করেন ৫৭ শতক। এই দুই দাগে আলী হোসেন মালিক হন ৩৪.৯৬ শতক। এই দুই দাগে আলী হোসেন বোনদের জায়গাও বিক্রি করে দিয়েছেন। কোহিনুর বেগম এবং জুলেখা খাতুন দুই খতিয়ান মিলে পৈতৃক সম্পত্তির মালিক হন খারিজ ২২৬৩ খতিয়ান মূলে ৯৩.৮৪ শতক। কিন্তু বোনদের অংশ বুঝে না পেয়ে জোহরা খাতুন এবং কোহিনুর বেগম গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে আদালতে বাঁটোয়ারা মামলা দায়ের করেন। নালিশীয় সম্পত্তিতে জোহরা খাতুন এবং কোহিনুর বেগম মালিক থাকা সত্ত্বেও আলী হোসেন গং জোরপূর্বক অন্যত্র বিক্রি করে দেয়-- অভিযোগ মূল মালিকদের।
উল্টো নিজের হিস্যা অনুযায়ী সম্পত্তি দাবি করলে তারা বিভিন্নভাবে মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। এর জের ধরে গত ৩ নভেম্বর প্রতিপক্ষ নাসির আহমেদের স্ত্রী মিনু বেগম বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে প্রকাশ, রাসেল বেপারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মিনু বেগমকে রক্তাক্ত জখম করে। কিন্তু উপস্থিত স্থানীয় লোকজন জানান, ঐদিন কথা কাটাকাটির বাহিরে আর কোনো ঘটনাই ঘটেনি। মামলার বাদী মিনু বেগম বলেন, আমি মুখে কিছু বলতে রাজি নই, যা লিখেছি আদালতে তা প্রমাণ করবো। স্থানীয় গণ্যমান্যদের মধ্যে শাহ আলম বলেন, তারা যদি প্রকৃত মালিক হন তারা আলী হোসেনের কাছ থেকে জায়গা বুঝে নেয়া উচিত। নিয়ম হচ্ছে যিনি বিক্রি করবেন তিনি এ জমির মালিকানা বুঝিয়ে দিবেন।
আবুল কালাম বলেন, এদের এই জমি নিয়ে একাধিকবার সালিস হয়েছে, যারা প্রকৃত জমির মালিক তাদের কোনো জমি দখলে নেই। জালাল আহমেদ গং একাধিক মামলা দায়ের করেছেন। তারা খরিদ সূত্রে মালিক হয়ে অন্যায়ভাবে নেছার আহমেদের পরিবারকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে জালাল আহমেদ জানান, আমি তিনটি দলিল মূলে ১৬.২৫ শতক জমি ক্রয় করে মালিক হয়েছি। আমার খরিদকৃত সম্পত্তিতে আমি যাওয়ার পর নেছার আহমদ গং আমি ও আমার পরিবারের ওপর হামলা করেছে। এজন্যে আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
নেছার আহমেদ বলেন, আমরা জমির প্রকৃত মালিক হয়েও আমাদের দখলে কোনো জমি নেই। আমাদেরকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি অব্যাহত রেখেছে জালাল আহমেদ গং।
খতিয়ানের মালিক আলী হোসেনের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। স্থানীয় ইউপি সদস্য সলিমুল্লাহ জানান, এদের দুই পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে সমস্যা বিরাজমান। প্রকৃত মালিকরা কোনো জমি দখলে নেই। কিছু লোক খরিদ সূত্রে মালিক হয়ে বেশি জমি দখলে আছে। আদালতে বাঁটোয়ারা মামলা হয়েছে। ওই মামলার রায় আসলে কেউই বেশি জমিতে থাকতে পারবে না।