প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৩, ২১:১৪
লুবনার করুন মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শ্বশুর-জামাতার দ্বন্দ্বের অবসান
অবশেষে লুবনার করুন মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শ্বশুর-জামাতার দন্দের অবসান ঘটলো। রবিবার ঢাকা পিজি হাসপাতালে লুবনার ব্রেন টিউমারের অপারেশন করা হয়। অপারেশন করার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় আইসিইউতে (লাইফ সাপোর্টে)। সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বুধবার (২৩ আগস্ট) দিবাগত রাত ২ টার দিকে লুবনা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না.......রাজিঊন)।
|আরো খবর
কচুয়া উপজেলার নূরপুর গ্রামের অধিবাসী ফারুক হোসেন মাহমুদা আক্তার লুবনার সাথে ২০০৭ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। দুই/আড়াই বছর পূর্ব থেকে লুবনা মাঝে মাঝে মাথা ব্যাথা অনুভব করে। ২০২২ সালে ১২ জুলাই এমআরআই করানো হলে, লুবনার ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে।
এ ব্যাপারে ফারুক দাবী করে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা অভিমত প্রকাশ করে বলেন লুবনার টিউমার অপারেশন করা হলে, সে মারা যেতে পারে অথবা বিকলাঙ্গ হয়ে পড়তে পারে। ডাক্তারের এ অভিমত প্রকাশের পর তার শ্বশুর ও বড় জামাই মুনসুর আহমেদ কেনু সহ নিকট আত্মীয় স্বজনদের সাথে পরামর্শক্রমে লুবনাকে হোমিও চিকিৎসার আওতায় নেয়। হোমিও চিকিৎসায় লুবনার রোগের ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটতে থাকে। কিন্তু এক পর্যায়ে আমার শ্বশুর হোমিও চিকিৎসা বাদ দিয়ে তার টিউমার অপারেশন করানোর জন্য আমার উপর চাপাচাপি করতে থাকে। কিন্তু আমি তাতে সম্মত হয়নি। চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে লুবনাকে বেড়ানোর নামে আমার শ্বশুর তার বাড়িতে নিয়ে যায়। বেড়ানো যাওয়ার কয়েকদিন পরই আমাকে না জানিয়ে তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে যায়। অতপর গত রবিবার (২০ আগস্ট) লুবনার ব্রেন টিউমার অপারেশন করা হয়। এ অপারেশনে আমার স্ত্রী মারা যায়।
এদিকে আমি প্রায় পাগল হয়ে স্ত্রীকে এক নজর দেখার জন্য বুধবার (২৩ আগস্ট) আমার আত্মীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মুন্সী কে সাথে নিয়ে পিজি হাসপাতালে ছুটে যাই। কিন্তু আমার শ্বশুর পক্ষের আত্মীয় স্বজনরা লুবনাকে দেখতে না দিয়ে দু’দফা লাঞ্চিত করে। দ্বিতীয় দফা লাঞ্চিত করাকালীন লুবনার এক খালাতো ভাই ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আমাকে রক্ষা করে। ল্বুনার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পরপরই তাকে আমার গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করানোর জন্য আকুতি মিনতি জানাই। কিন্তু তারা আমার আকুতি মিনতিতে সাড়া দেয়নি। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে লুবনার লাশ আমার শ্বশুরের কৈলাইন গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এনে দাফন কাফনের উদ্যোগ নেয়। এ অবস্থায় খবর পেয়ে আমি আমার স্ত্রীকে শেষ বারের মত একনজর দেখা ও জানাযা অংশগ্রহনের জন্য শ্বশুরের বাড়িতে ছুটে গেলেও সেখানকার পরিবেশ পরিস্থিতির কারনে স্ত্রীকে দেখা ও জানাযায় অংশগ্রহন করতে ব্যর্থ হই। আমার দু’মেয়ে ও এক ছেলের মধ্য ছেলে ফাহিমকে তাদের বাড়িতে রেখে দিয়েছে। আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেতে চাই। এদিকে লুবনার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই ফারুক ও তার সন্তান সহ পরিবারের লোকজনের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠে।
ফারুকের সম্মতি না নিয়ে অপারেশনের নামে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ায় এলাকার লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।