প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৯
মুন্সিগঞ্জে কুকুরের তাণ্ডব: ৪ ঘণ্টায় ৪০ জনকে কামড়, আতঙ্কে এলাকাবাসী
চার ঘণ্টায় ৪০ জন আক্রান্ত: আতঙ্কের শহর, নিরাপত্তাহীন গ্রামবাসী

মুন্সিগঞ্জ সদরের চরাঞ্চলের চারটি গ্রামে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে বেপরোয়া কুকুরের আক্রমণে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের তাণ্ডব তারা কখনো দেখেননি।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের টরকি, উত্তরচর মুশুরা, দক্ষিণচর মুশুরা ও চরকেওয়ার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হঠাৎ করেই কয়েকটি কুকুর পাগল হয়ে মানুষের ওপর হামলে পড়ে।
আতঙ্কের শহর, নিরাপত্তাহীন গ্রামবাসী
আহতদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গুরুতর আহতদের মধ্যে আল-আমিন (১৪), মেহেজাবিন (৭), মরিয়ম (৩), মিরাজ (৮), মাহাবুব (৮) ও নুসাইবা (৭)-কে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উত্তরচর মুশুরা গ্রামের ডলি বেগম (৬০) আতঙ্কিত কণ্ঠে বলেন, "দুপুর ২টার দিকে আমাকে একটি কুকুর কামড় দেয়। কিছুক্ষণ পর দেখি আরও অনেকে কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে ছুটোছুটি করছে। এমন তাণ্ডব আগে কখনো দেখিনি।"
হাসপাতালে উপচে পড়া ভিড়, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সংকট
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আতাউল করিম বলেন, "দুপুর আড়াইটার পর থেকেই আহতরা দলে দলে হাসপাতালে আসতে থাকেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪০ জনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।"
স্থানীয়দের দাবি, এসব কুকুর সম্ভবত জলাতঙ্কে আক্রান্ত, তাই তাদের দ্রুত নিয়ন্ত্রণ না করলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
এলাকাবাসী বলছেন, বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ছে, কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একদিনে ৪০ জন মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
নগর কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিভাগ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তবে স্থানীয়রা দ্রুত এসব কুকুরকে নিয়ন্ত্রণ ও জলাতঙ্ক প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, প্রশাসন কি ঘুমিয়ে আছে? নাকি আরও বড় দুর্ঘটনার অপেক্ষায়?
ডিসিকে/এমজেডএইচ