সোমবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ডাকাতিয়া নদী ও সিআইপি অভ্যন্তরস্থ খাল খননসহ ৫ দফা দাবিতে সংগ্রাম কমিটির সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪

এইডস্ : অধিকার নিশ্চিত হলেই মুক্তি

ডা. পীযূষ কান্তি বড়ুয়া
এইডস্ : অধিকার নিশ্চিত হলেই মুক্তি

সংকটে পৃথিবীর জন্ম, সংকটে পৃথিবীর সংগ্রাম। এক এক সময় এক এক সংকটে পৃথিবী আতঙ্কগ্রস্ত হয়েছে। কখনো তাকে পেয়েছে কলেরার আতঙ্ক, কখনো পেয়েছে প্লেগ মহামারি। এরই ধারাবাহিকতায় এইডস্ আতঙ্কে পৃথিবী ভুগেছে আশি-নব্বইয়ের দশকে। এখনও তার বিরুদ্ধে মানুষের যুদ্ধ চলমান। ঊনিশশো সাতাশি সালে প্রথম বিশ্ব এইডস্ দিবস পালিত হওয়ার প্রস্তাব আসে। এরই ফলশ্রুতিতে ঊনিশশো আটাশি সালের পহেলা ডিসেম্বর হতেই বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব এইডস্ দিবস। প্রতি বছর এই দিবসটির এক একটি প্রতিপাদ্য নির্দিষ্ট করা হয়। এবারের সুনির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য বিষয়টি হলো, ‘অধিকার নিশ্চিত হলে/ এইচআইভি-এইডস যাবে চলো’। বাংলাদেশে প্রথম এইডস্ রোগী সনাক্ত হয় উনিশশো উননব্বই সালে। উনিশশো উননব্বই সাল হতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে এগার হাজার এইডস রোগী সনাক্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে আজ অব্দি উনচল্লিশ মিলিয়ন এইডস্ রোগী নিবন্ধিত হয়েছে।

এইডস্ এর জীবাণু এইডসের মূল বিষয় হলো দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়া। হাল আমলে করোনা ভাইরাসের আক্রমণেও দেহের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে মানুষের মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়ে ওঠে। এইডসের জীবাণু হচ্ছে একধরনের ভাইরাস যার নাম হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস। এটি একটি আরএনএ ভাইরাস।

এইডস্-এর জীবাণুর বিস্তার

এইডস্-এর জীবাণু বিভিন্নভাবে বিস্তৃত হতে পারে। তবে অধিক বিস্তৃত হয় অরক্ষিত অবাধ যৌন সংসর্গের মাধ্যমে। যারা একাধিক সঙ্গীর সাথে যৌন সংসর্গ করেন; যারা পায়ুপথে, মুখে অনিরাপদ যৌনতায় লিপ্ত থাকেন তারা এইডস্ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যারা শিরাপথে মাদক সেবন করেন, যারা দলবেঁধে মাদকাসক্তিতে ভোগেন তারা এইডস্ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যারা যথাযথভাবে যাচাই না করে রক্ত পরিসঞ্চালন করেন, অর্থাৎ যারা স্ক্রিনিং না করে রক্ত নেন, যারা এইডস্ রোগীর ব্যবহৃত রেজর ব্যবহার করেন তারা এইডস্ এ আক্রান্ত হতে পারেন। যারা এইডস্ রোগীর রক্ত পরীক্ষাকালে সুঁইয়ের ঘাইয়ে আক্রান্ত হন তারাও এইডস্ রোগে আক্রান্ত হন। গর্ভাবস্থায় এইডস্ আক্রান্ত মায়ের পেটে থাকাকালে শিশু বা ভ্রƒণ মায়ের রক্তের মাধ্যমে এইডসে আক্রান্ত হয়।

এইডস্-এর লক্ষণ

* ঘুষঘুষে জ্বর এবং তা নিরাময় না হওয়া

* ওজন হ্রাস পেতে থাকা

* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া

* ঘন ঘন ডায়রিয়া হওয়া

* ছত্রাকের সংক্রমণ হওয়া

* সর্দি-কাশি লেগে থাকা

এইডস্-এর জটিলতা

* যক্ষায় দ্রুত আক্রান্ত হওয়া

* সর্দি-কাশিতে কাহিল হওয়া

* ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া

* ফাংগাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়া

এইডস্-এর চিহ্ন

লাল রঙের রিবন হলো এইডসের চিহ্ন।

বাংলাদেশে এইডস্ রোগী বাংলাদেশে এইডস্ রোগীর সংখ্যা ০.১%-এর কম। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এইডস্-এর সংক্রমণের হার অধিক। নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে এইডস্ রোগী সনাক্ত করা জরুরি। বর্তমানে এইডস্ রোগী সনাক্তের জন্যে বাংলাদেশে সাতাশটি কেন্দ্র রয়েছে।

এইডসের চিকিৎসা এইডসের কোন কার্যকর চিকিৎসা নেই বললেই চলে। প্রতিরোধই এক্ষেত্রে সর্বোত্তম। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপীর মাধ্যমে এইডস জীবাণুর ভাইরাল লোড কমিয়ে আনা যায় ছয় মাসের মধ্যেই। তবে এইডস নির্মূল ও নিরাময় করা যায় না।

এইডস্ রোগীর চলাফেরা সামাজিকভাবে এইডস্ আক্রান্ত রোগীর চলাফেরায় কোনো বাধা নেই। হ্যান্ড শেক, কোলাকুলি, একই থালায় আহার, একই টয়লেট ও বাথরুম ব্যবহারে এইডস্ রোগ ছড়ায় না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়