মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২২, ০০:০০

ন্যাচারাল থেরাপি

ঠাণ্ডা-জ্বরের সমস্যায় আকুপ্রেশার চিকিৎসা

অধ্যাপক কে. এম. মেছবাহ্ উদ্দিন

ঠাণ্ডা-জ্বরের সমস্যায় আকুপ্রেশার চিকিৎসা
অনলাইন ডেস্ক

ঠাণ্ডা, সর্দি ও কাশি যদিও কোনো জটিল রোগ নয়। কিন্তু এ রোগগুলো সঠিকভাবে নির্ণয় করা না গেলে তা আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে দেখা দেয়। কারণ এটি আমাদের দৈনিন্দিনের কাজকর্মে সবচেয়ে বেশি ব্যাঘাত ঘটায় এবং বিরক্তকর। কিন্তু যখন এটি নিউমিনিয়া আকার ধারণ করে তখন তা মারাত্মক হয়ে উঠে।

আমাদের দেহের মধ্যে শতকরা ৭২ ভাগই পানি। ঠাণ্ডা গরমে প্রকৃতির পানির মতই শরীরের ভেতরের এ পানি একই রকম আচারণ করে। আমাদের দেহ একদিকে হিটার আবার অন্যদিকে এয়ার-কন্ডিশনার। অর্থাৎ ঠাণ্ডা গরমে সকল ঋতুতেই শরীরের তাপমাত্রা একই থাকে। দিনের বেলা কর্মব্যস্ততার কারণে এ পানি উত্তপ্ত থাকে ফলে এর কোনো প্রভাব লক্ষ করা যায় না। কিন্তু রাতের ঠাণ্ডা আবহাওয়া এবং ঘুমের মধ্যে যখন শরীর শীতল হয়ে যায় তখন এই পানি ফুসফুস ও মস্তিস্কে আদ্রতা সৃষ্টি করে। দিনের জলীয়বাষ্প যেমন রাত্রে শিশির আকার ধারণ করে ঠিক তেমনিভাবে সকালে ঘুম থেকে উঠলে মস্তিষ্কে জমা এই পানি সর্দি আকারে ঝরতে থাকে, কখনো কখনো এটি চোখ দিয়েও ঝরতে থাকে এবং ঘন ঘন হাঁচি আসে। আয়ুর্বেদি চিকিৎসা মতে, সকালের সর্দি ও ঘন ঘন হাঁচি স্বাস্থের জন্যে ভালো সংকেত বহন করে। একজন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির বছরে দুবার এই সর্দি হতে পারে। এটি তিন থেকে চারদিন স্থায়ী হয়। অনেক সময় মজা করে বলা হয় ঔষধ ব্যবহার করলে সর্দি ছয় দিনে ভালো হয়। কিন্তু ঔষধ ব্যবহার না করলে চারদিনেই ভালো হয়ে যায়। এই ধরনের ঠাণ্ডা-সর্দি প্রায় সবার মধ্যে দেখা দেয়, এজন্যে একে জনসাধারণের ঠাণ্ডা-সর্দি বলে।

ঠাণ্ডা, কাশি, টনসিল, জ্বর ও সাইনোসাইটিস এবং হাঁপানির মূল কারণ : ১. দেহের বাড়তি তাপ : জন্ডিস, অবিবেচিতভাবে কৃমির ঔষধ সেবন (অতিরিক্ত কৃমির ঔষধ লিভারকে অকেজো করে দেয়) অথবা অন্য কোনো কারণে জীবন রক্ষাকারী অঙ্গ লিভার ধীরগতিসম্পন্ন হলে পিত্তরস উৎপাদনও ধীর গতিতে হয়। ফলে পাকস্থলি থেকে অর্ধ-পরিপাককৃত খাদ্য সম্পূর্ণরূপে এসিডমুক্ত না হয়েই ক্ষুদ্রান্তে প্রবেশ করে। এটি পাকস্থলি অন্ত্রের বায়ুকে উত্তপ্ত করে। এই উত্তপ্ত বায়ু মাথা ও মুখের ফাঁকা জায়গা দখল করে। দিনের এই উত্তপ্ত বায়ু যখন ফ্যানের বাতাস, এয়ার-কন্ডিশনাড় রুম অথবা রাত্রের শীতল হাওয়ার সংস্পর্শে আসে তখন পানিতে পরিণত হয়।

ক) এই পানি যখন মস্তিষ্কের স্নায়ুর সংস্পর্শে আসে তখন মাথা ব্যথা দেখা দেয়।

খ) শীতল আবহাওয়ায় এই পানি নিচের দিকে নামতে থাকে এবং এটি গলা ও নাকের ভেতর উত্তেজনা সৃষ্টি করে। ফলে টনসিল, ঘন ঘন হাঁচি, কাশি এবং নাক দিয়ে অনবরত সর্দি ঝরতে থাকে।

সাইনোসাটিস : যখন এই সর্দি অর্ধ-তরল শ্লেষ্মা আকার ধারণ করে তখন এটি নাকের দেয়ালে, নাকের গোড়ায় সাইনাস পকেটে এবং মস্তিষ্কের ফাঁকা জায়গায় জমা হতে থাকে। ফলে রোগী সাইনোসাটিসে আক্রান্ত হয়। কখনো কখনো সাইনাস পকেট অপারেশন করা হয়। কিন্তু রোগের মূল কারণ যেহেতু অজানাই থেকে যায় তাই রোগীর তেমন কোনো উন্নতি হয় না।

দেহে পানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া : আমাদের দেহের পানি নিয়ন্ত্রিত হয় দেহের তাপ দ্বারা। দেহের তাপ নির্ভর করে হজমশক্তির উপর। সুতরাং যখন হজমশক্তি কমে যায় তখন দেহের অভ্যন্তরীণ উত্তাপ কমে যায়। এটি দেহের অতিরিক্ত পানির বাষ্পায়ন কমিয়ে দেয়। ফলে দেহে পানির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এটি দেহের উত্তাপ সর্বনিম্ন অবস্থায় নিয়ে আসে এবং খাদ্যরস থেকে রক্ত উৎপাদন ক্রিয়া ধীরগতিসম্পন্ন হয়। এ সময় প্রচুর পরিমাণ কফ উৎপন্ন হয়ে বের হতে থাকে। কখন কখন এটি গাঢ় হলুদ বর্ণ ধারন করে। ঠাণ্ডাপানীয়, গুরুপাক খাবার, লেমন জুস ইত্যাদি এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়া, এয়ার-কন্ডিশনাড় রুম এমনকি ফ্যানের বাতাস সরাসরি বুকে লাগা এই ঠাণ্ডাকে আরও গুরুতর খারাপ অবস্থায় নিয়ে যায়। বৃদ্ধ বয়সে অধিকাংশ লোকেরই এই সমস্যা দেখা দেয়।

দেহের বাড়তি পানি বলতে শরীর, হাত ও পা ইত্যাদি ফুলে যাওয়া বুঝায় না। এটি বাহির থেকে বোঝা যায় না। এর ফলে উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো দেখা দেয়।

জ্বর ও টনসিল : এক পর্যায়ে বুক, ফুসফুস ও গলায় রক্ত জমাট বাধে। যখন এই জমাট রক্ত বের হতে না পারে তখন রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং টনসিলের সমস্যা দেখা দেয়। (চলবে)

অধ্যাপক কে. এম. মেছবাহ্ উদ্দিন : বিভাগীয় প্রধান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ। ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।

[পরের পর্ব আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়