প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
আবদুল গনি বিশ্বাস করেন পরিশ্রমে ধন আনে পুন্নে আনে সুখ। শ্রম ও অধ্যাবসায় তাকে এনে দিয়েছে সাফল্য। তাই তো দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রবাসে চলার পথে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সৌদি আরব রিয়াদ প্রবাসী। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নিজের প্রতি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস আছে বলেই আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।
১৯৯৯ সালে জীবিকার তাগিদে আবদুল গনি প্রবাসী বড় ভাইয়ের দেয়া ভিসা নিয়ে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সাধারণ কর্মী হিসেবে বেতন ছিল অল্প। এই স্বল্প বেতনের টাকা দিয়ে চলতে থাকে জীবন-সংগ্রাম।
দিন-রাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে থাকেন গনি। তার দু চোখে ছিল স্বপ্ন। প্রতিনিয়ত স্বপ্ন তাড়া করে বেড়াতো কীভাবে একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়া যায়। অন্যের কাজ বাদ দিয়ে ২০০৩ সালে আবদুল গনি ও তার বন্ধু সৌদি নাগরিক নাছেরসহ যৌথ ব্যবসা শুরু করেন। কোম্পানির নাম : INSHAAT Contracting @Landscaping Inshaat-Sa.com। তার কোম্পানিতে বিভিন্ন দেশের ৫০০ শ্রমিক কাজ করছে, তার মধ্যে ২০০ বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছে।
বর্তমানে দেশটিতে গোল্ডেন আকামা নিয়ে সপরিবারে বসবাস করছেন তিনি। তার বাড়ি ঢাকার ডেমরায়। পৈত্রিক বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা। তিনি ৫ সন্তানের জনক। ভিশন-২০৩০-এর আওতায় শ্রমবাজারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন ধরেই পরিবর্তন আনছে সৌদি সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদি আরবের অভ্যন্তরে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে দেশটি। ওয়েবিনারে সৌদি কর্তৃপক্ষ গত ২৩ আগস্ট ২০২১ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশীসহ ভিনদেশী ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য বিনিয়োগের তথ্যাদি প্রদান করে নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বাণিজ্য উপমন্ত্রী প্রকৌশলী আয়েদ আল-ঘোয়াইনাম।
২৩ আগস্ট ২০২১ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশীসহ ভিনদেশী ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য বিনিয়োগের তথ্যাদি প্রদান করে নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বিস্তারিত বলা হলেও পরে এটিকে বাড়িয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখের মধ্যে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শেষ করতে বলা হয়। সৌদি সরকারের আদেশ মেনে যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের মধ্যে আবদুল গনি একজন। তিনি নিজের নামে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৌদি নাগরিক বন্ধুসহ নিজেই পরিচলনা করছেন এখন, তার কোম্পানিতে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক কর্মরত রয়েছেন।
তিনি জানান, বর্তমানে সৌদি আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই দক্ষ শ্রমিক হতে হবে। সেখানে অদক্ষ শ্রমিকের কোন চাহিদা নেই। ইতোমধ্যে তার কোম্পানিতে বহু নতুন ভিসায় আসা বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। প্রবাসে আসার আগে অবশ্যই সেই দেশের ভাষা, কালচার সম্পর্কে জেনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা উচিত, তা না হলে পদে পদে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। সেই সাথে এই সকল কোম্পানিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা বাড়বে, তারা বৈধ পথে টাকা পাঠাতে পারলে দেশে রেমিট্যান্সের হার বৃদ্ধি পাবে। দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে।
সৌদি আরব রিয়াদের একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতমুখ আবদুল গনি। এখন তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। প্রবাসের সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠনগুলোতে রয়েছে তার আন্তরিক সহযোগিতা। তিনি প্রবাসে যেমন সফল তেমনি নিজের মাতৃভূমিতেও পিছিয়ে নেই তার কর্মকাণ্ড। উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যেও অবদান রেখে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত এবং সমাজের অসহায় মানুষের পাশে থেকেও আত্মতৃপ্তি পান তিনি। বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহায়তার সুন্দর সমাজ গড়ার প্রত্যাশা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন আবদুল গনি। তার স্বপ্ন অসহায়-হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজ করা।
লেখা পাঠানোর ই-মেইল : [email protected]