প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন ক্যানসার রোগীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। সংখ্যার দিক থেকে আমাদের দেশে নারীদের জরায়ু ও স্তন ক্যানসার এবং পুরুষদের ফুসফুস ক্যানসারের পরই মুখগহ্বরের ক্যানসারের রোগী বেশি দেখা যায়। জিব, তালু, জিবের নিচে, গালের ভেতরের অংশ, ঠোঁট, মাড়ি বা মুখের মধ্যে যেকোনো স্থানে বেড়ে উঠতে পারে ক্যানসার। এ কারণে মুখের ভেতরে যে কোনো ধরনের ঘা, ক্ষত, গোটা, স্বাভাবিক রঙের পরিবর্তন, অতিরিক্ত ঝাল অনুভূতি বা যে কোনো অস্বাভাবিকতা দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলেই এর ধরন নিশ্চিত হতে হবে।
ক্যানসারের কারণ সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও মুখের ক্যানসারের সঙ্গে কিছু বিষয় জড়িত। যেমন-
* দাঁত বা মুখগহ্বরের কোনো সমস্যা নিয়ে শুরুতে দন্তচিকিৎসকের কাছে না গিয়ে অনেকে অযথা সময় নষ্ট করেন। অপচিকিৎসায় আস্থা রাখেন কেউ কেউ। এতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়।
* ধোঁয়াবিহীন তামাক, যেমন জর্দা, সাদা পাতা, গুল ক্যানসার তৈরিতে শক্ত ভূমিকা রাখে। ধূমপান, হুঁকা, পাইপ যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ।
* প্রাকৃতিক দাঁত বা কৃত্রিম দাঁত অথবা ফিলিংয়ের ভাঙা অংশ, জমে থাকা পাথর বা ক্যালকুলাসের ভাঙা অংশ বা যেকোনো ধারালো অংশ থেকে সৃষ্ট ক্ষত ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
* বিশেষ প্রজাতির ভাইরাস, যেমন হিউমান প্যাপিলোমা দ্বারা সৃষ্ট ক্ষত থেকে ক্যানসার হয়।
* অপুষ্টি, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় অবহেলা থেকেও মুখে ক্ষত হতে পারে।
* মা-বাবা বা পরিবারের অন্য কারও ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে অধিক সতর্ক থাকতে হবে।
* দাঁতের অস্বাভাবিক অবস্থান, যেমন আক্কেল দাঁত বাঁকা হয়ে উঠে গালে বা জিবে কামড় লাগা থেকে ধীরে ধীরে ক্যানসার হতে পারে।
* মদ্যপান, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার ঝুঁকি বাড়াবে।
* অতিরিক্ত সূর্যালোকে বহুদিন থাকলে ঠোঁটে ক্যানসার হতে পারে।
* পুরোনো ক্ষত বা বিশেষ ধরনের কিছু ঘা, যেমন ইরাইথ্রোপ্লাকিয়া, লাইকেন প্লানাস, লিউকোপ্লাকিয়ার মতো অস্বস্তিকর ক্ষত হলে যথাযথভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তা না থাকলে পরে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
চিকিৎসা : যত দ্রুত এ রোগ শনাক্ত হবে, চিকিৎসার সফলতাও তত বেশি হবে। রোগের ধরন ও ব্যাপ্তির ওপর নির্ভর করে সার্জারি, কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সচেতনতায় প্রতিরোধ : * নিয়মিত সঠিকভাবে মুখের স্বাস্থ্যের পরিচর্যা নিশ্চিত রাখতে হবে।
* তাজা, ফরমালিনমুক্ত মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজি, দুধ, টক দই, ছোট মাছ, আঁশযুক্ত খাবারসহ সুষম খাবারে অভ্যস্ত হতে হবে।
* চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য কমাতে হবে।
* পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
* ওজন ঠিক রাখতে ব্যায়াম করতে হবে।
* ক্যানসার তৈরির কারণ জেনে সেগুলো থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।