মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

পাইলস নিরাময়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
অনলাইন ডেস্ক

যে সকল কারণে মলদ্বারের নিকটবর্তী শিরাসমূহে রক্ত চলাচলের গতিরোধ হয়ে রক্ত সঞ্চিতির ফলে স্ফীতি এবং বড় হয় তাকে পাইলস বা অশর্^ বলে। কখনও একটি কখনও বা একাধিক থোকা থোকা আঙ্গুরের ন্যায় দেখতে পাওয়া যায়। অর্শ্বের বলি মলদ্বারের বাইরে থাকলে তাকে বর্হিবলি এবং অভ্যন্তরে থাকলে তাকে অন্তর্বলি বলে।

মানুষের রোগব্যাধির মধ্যে মলদ্বারের রোগই সবচেয়ে বেশি চিকিৎসা এবং হাতুড়ে চিকিৎসা হয়। কিছুটা ভয় ও বিব্রতকর অনুভূতির জন্য এ জাতীয় রোগ হলে রোগীরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না। রোগীরা নিজে নিজে অথবা সস্তায় পাওয়া হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে যান বেশি। বিভিন্ন কুসংস্কার এবং মলদ্বারের সব রোগই পাইলস এ ভ্রান্ত ধারণার কারণে চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি করেন, যা কখনো কখনো ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে।

পাইলসের প্রকারভেদ

বলিভেদে পাইলস দুই প্রকার। যথা : বহির্বলি ও অন্তর্বলি। আবার ¯্রাব সম্বন্ধীয় পাইলস বা অশর্^কে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা : ১. যে অশর্^ থেকে প্রবল রক্তধারা ছুটে, তাকে রক্ত¯্রাবী পাইলস বলে। ২. যে অর্শ্বে রক্ত¯্রাব থাকে না কিন্তু জ্বালা-যন্ত্রণা, সুঁচ ফোটান ব্যথা ইত্যাদি কষ্টদায়ক উপসর্গ থাকে, তাকে অ¯্রাবী পাইলস বলে। ৩. যে অর্শ্বে কেবলমাত্র আম নির্গত হয়, তাকে আম¯্রাবী পাইলস বলে। যার প্রাদুর্ভাব বর্ষা ও বসন্তকালে দেখা যায়।

যেসব রোগী পাইলসে ভোগেন তাদের সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া জাতীয় সমস্যা থাকে। অনেক রোগী আছেন যাদের পেটে গ্যাস হয়। পায়খানার সঙ্গে মিউকাস বা আম যায়। পায়খানা করার পর মনে হয় ক্লিয়ার হয়নি। দুধ, পোলাও, ঝাল, গরু বা খাসির মাংস ইত্যাদি খেলে হজমে গোলমাল হয়। টয়লেটে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। অনেকে মলদ্বারের ভেতর আঙুল দিয়ে মলত্যাগ করেন। রোগীরা এ সমস্যাগুলোকে গ্যাস্ট্রিক বা ক্রনিক আমাশয় হিসেবে মনে করেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে আমরা বলি ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ডোম বা আইবিএস। এ জাতীয় রোগীদের দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, পোলাও, ঝাল, বিরিয়ানি খাওয়া নিষেধ।

পাইলসের উৎপত্তি

কোষ্ঠবদ্ধতা, উৎকট উদরাময়, যকৃতের বিবৃদ্ধি, অতিরিক্ত মদ্য কিংবা মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, অলস জীবনযাপন, স্ত্রীলোকের জরায়ুর বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে বস্তি গহ্বরের শিরা সকলে চাপা পড়ে। ফলে রক্তের গতিরুদ্ধ হওয়ার কারণে মলদ্বারে নিকটবর্তী শিরা সকল রক্ত সঞ্চিত হয়ে স্ফীত হয়। এভাবে অর্শের জন্ম হয়। মোটকথা, বস্তি গহ্বরের শৈরিক রক্তস্রোত বাধাপ্রাপ্ত হলেই পাইলস বা অর্শ্বের উৎপত্তি ঘটে।

লক্ষণ

মলের সঙ্গে রক্তের ছিঁটে দেখা যায় অথবা সময় সময় পায়খানাতেই প্রায় এক ছটাক হতে আধ পোয়া পর্যন্ত রক্ত বের হয়। মল ত্যাগকালে রোগী কষ্ট পান এবং সরলাস্ত্র মধ্যে জ্বালা, দপ্দপানি ও চিড়িক মারা মত যাতনা ভোগ করেন এবং সময় বিশেষে মল নির্গত হয়ে যাবার পরও অনেকক্ষণ পর্যন্ত উক্ত যাতনাদি অবস্থান করে। যখন অর্শ্বের বলিগুলো প্রদাহিত হয় অথবা গুহ্যদ্বারের পেশি দ্বারা নিষ্পেষিত হয়, তখন অতিশয় ক্লেশ বোধ হতে থাকে এবং উপর্যুপরি দুইতিনদিন পর্যন্ত রোগী বিছানা হতে উঠে কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। প্রায় সকল সময়েই অর্শ্বরোগের সাথীরুপে কোষ্টবদ্ধতা প্রকাশ পায়। এই রোগ কতকটা পূর্বোক্ত ‘মেক্যানিক্যাল অবস্ট্রাকসান’ এবং কতকটা মলত্যাগকালীন যন্ত্রণা জন্য আনীত হয়। অশর্^রোগ নিবন্ধন, আলস্য বোধ, রুক্ষ মেজাজ, শিরপীড়া, মূর্চ্ছাভাব এবং পরবর্তী অবস্থায় অতিরিক্ত রক্ত¯্রাবহেতু রক্তসল্পতা ও মাথা ঘোরা, উপসর্গ রূপ দেখা দেয়।

খাদ্যাভাসের পরিবর্তন

আমরা প্রচুর রোগী পাই। যাদের সঠিক খাদ্যাভাসের অভাবে পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ হয়। পায়খানার পরিমাণ বাড়ে এমন খাবার খাওয়া উচিত। যেমন : শাক-সবজি, সালাদ, ফল, ইসবগুলের ভূষি, গমের ভূষি ইত্যাদি। দৈনিক পরিমিত পানীয় খেতে হবে। একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের জন্যে ৬-৮ গ্লাস পানি প্রতিদিন পান করতে হবে।

হোমিওপ্যাথিক প্রতিবিধান

পাইলস বা অর্শ্বে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের কার্যকারিতা বহু প্রাচীনকাল থেকেই সন্দেহাতীতভাবে দৃঢ়তার সাথে প্রমাণিত হয়ে আসছে। কেন্ট রেপার্টরীর প্রয়োগ-সংকেতও এ পীড়ায় প্রণিধানযোগ্য।

ডাঃ মোঃ মাজহারুল হক : বি.এ. ডি.এইচ.এম.এস. (বি.এইচ.বি.) ঢাকা। ডি.ইউ.এম.এস. (কন্ট), এম.এইচ.জি. (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ঢাকা।

ইসলামিয়া হোমিও হল। চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর।

মোবাইল : ০১৯২২৪৯২৬২৪ ও ০১৭৯৪৫০৯০৮০

* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত যে কোনো প্রশ্ন ও লেখা পাঠানোর ই-মেইল : [email protected]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়