শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

কেঁপে উঠলো শহর

জহিরুল ইসলাম
কেঁপে উঠলো শহর

সকাল তখন ৭টা বেজে ২১ মিনিট। মুঠোফোনে বেজে উঠলো সাইরেন। ঘুম চোখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে ফোন কানের কাছে নিতেই ওপাশ হতে ভেসে উঠলো মায়ের দরদভরা কণ্ঠস্বর। নিমিষেই সমস্ত রাগ উবে গেলো মা জানান দিলো আমাদের বাড়ির মেয়ে নিতু যে সম্পর্কে ভাতিজি হয় তাকে তার শ্বশুর-শাশুড়ি গত রাতে ষড়যন্ত্র করে ওড়নায় ঝুলিয়ে ফাঁসি দিয়ে মেরে ফেলেছে। দুঃসংবাদ শুনে সকাল সকাল মনটা ভীষণ বিমর্ষ হয়ে গেলো। মায়ের সাথে কথা বলা শেষ করে বিছানা ছেড়ে আর উঠতে ইচ্ছে হচ্ছিল না। তাই আলসে শরীর আর বিমর্ষ মনে মুঠোফোন হাতে নিয়ে ফেসবুক স্ক্রলিং করছিলাম। তখন হঠাৎ চোখে এলো নিতুর মৃত্যুর খবর নিয়ে একটি সামাজিক মাধ্যমের খবর। তা দেখতে দেখতে হঠাৎ করেই কেঁপে উঠল পুরো কক্ষ। খাট, জানালা, টেবিল, চেয়ার, দেয়ালে ঝুলে থাকা ফটো ফ্রেমগুলো। কিছুই যেনো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লাম কিছু সময়ের জন্য। বুঝতে বাকি রইল না ভূমিকম্প হচ্ছে! তড়িগড়ি করে বের হতে গিয়ে হালকা ধাক্কা খেলাম দরজায়। তবুও ব্যথা উপেক্ষা করে দোতলা হলরুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে পড়লাম কোনভাবে। দৌড়াতে দৌড়াতে শুনতে পেলাম হলে থাকা অন্যদের চিৎকার। ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখি পাশের রুমে থাকা ছোটভাইরা যে যেভাবে পেরেছে দৌড়ে বেরিয়ে পড়লো। সবাই হাঁপাচ্ছে কারো কারো শরীর থরথর করে কাঁপছে। ভয়ে শিউরে উঠলাম সকলে। গায়ের লোমগুলো দাঁড়িয়ে গেছে সব, চোখে আতঙ্ক আর বাকরুদ্ধ চেহারায় থ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ। এরপর দেখলাম আশপাশের ভবন থেকে নেমে এলো সেখানকার বাসিন্দারা। সবাই বলাবলি করছি নিজেদের অনুভূতি একে অপরের সাথে আদান প্রদান করছে। আমার কণ্ঠ থেকে কোন স্বর বের হচ্ছে না। বুক ধুকপুক করছিলো মনে হচ্ছে হার্টবিট দ্রুত গতিতে ছুটে চলছে। মগজের ভেতরে কেবল অল্প সময়ের সেই দৃশ্যগুলো পায়চারি করছে। বিল্ডিং-এর কাঁপন দেখে মনে হচ্ছিল হয়তো মৃত্যুদূত আচমকা হানা দিয়েছে দরজার কপাটে। সম্মুখ বিপদে মানুষের মগজ বোধহয় এলোমেলো হয়ে যায়, কী করবে বুঝতে পারে না। মনে হচ্ছিল সমস্ত শহর কেঁপে উঠলো কয়েক মুহূর্তের জন্য। শুনেছি যে অঞ্চলে পাপাচার বেড়ে গেলে কিংবা মানুষ স্রষ্টার কাছ থেকে দূরে সরে গেলেই ভূমিকম্প বেড়ে যায়। এটাই হয়তো স্রষ্টার কোনো অদৃশ্য বার্তা মানুষের জন্য।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়