প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
জীবন মানে জন্ম, যার মৃত্যু নেই। জীবনকে ঘিরে স্বপ্ন ঘুরে। জীবনকে ঘিরে ফেলে দুরাশা। জীবনকে ঘিরে চলে ভালো লাগা ভালোবাসা। জীবনেই সৃষ্টি। জীবনেই অস্বস্তি। সুখ দুঃখে মোড়ানো অনুভূতির খুঁটি ধরে হাঁটতে হাঁটতে এক সময় জীবন জীবন ছেড়ে দেয়। হৃদয়ে হৃদয়ে গড়ে ওঠা বিষাদের কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে জীবন দম ছেড়ে দেয় কখনো কখনো। কেউ কারো জন্য পাগল হয়ে থাকে, কেউ আবার পাগলামি করে কারো হতে চায় না। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবন তার বাঁকে বাঁকে নতুন নতুন সঙ্গী খুঁজে নেয়। কখনো আনন্দ-উল্লাস আবার কখনো বিষাদের বিপর্যয় জীবনকে বেঁধে ফেলে। এমনও বর্ণিলা জীবনকে চিনতে ধরতে মন চায় আমার। অনেকের চিন্তাকে কলমে টেনে নিই তাই। কলম ধরে তাই কবি আমি।
শাশ্বত তুমি
বৈশাখের ঝড় হয়ে আমার মন কিনারে আঘাত হানলেও কখনো বর্ষার বৃষ্টির স্নিগ্ধতা হয়ে ঝড়ো তুমি ।
যতই খরস্রোতা হও না কেন তোমার বুকেই আমার মনপাড়া।
যতই ¯্রােতস্বিনী হয়ে বয়ে যাও না কেনো তোমার কিনারেই আমার সুখের ঘাট ।
আমি সমুদ্র সেজে থাকি যেনো এক মোহনায় দেখা হয়।
যতবারই তুমি আমার মন কিনার ভাঙ্গো না কেনো পরে আবার ঢেউ হয়ে মায়াবতী স্পর্শ দাও আমায়।
যতবারই তুমি বাঁক বদল করো না কেনো বাঁকে বাঁকে তুমি তোমার স্মৃতি রেখে যাও।
যতবারই তুমি মরে যাও না কেনো তোমার গাঙ্গে ভালোলাগা উবিয়ে যায় না।
বরং ভালোবাসার চর জেগে ওঠে।
তোমার গভীরে সবসময়ই পুষে রাখো দেখে তুমি কখনো জোয়ার কখনো ভাটা।
তুমি অগ্নিগর্ভ হলেও তার চারিপাশ বড়ই শীতল। তুমি ঝঞ্ঝার কথা বললেও তোমার ভেতর বড়ই নিরব।
হাজারো মাতাল কম্পনকেও সমতল বানিয়ে রাখো তুমি
তোমার প্রতিটি রাগে অনুরাগের পরশ থাকে। তুমি যতটাই উত্তাল, ততটাই স্নিগ্ধ সকাল।
তোমার মুখ দেখেই তাই পৃথিবীর মুখ দেখি আমি। শাশ্বত তুমি।
দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষা
আমার বাইরে যার আস্তর,
সেই তো আমাকে আগলে রাখে।
আমি তাকে মরিচা বলি না।
বড় হয় সে আমার ভেতর।
দিন যায়, আমি ক্ষয়ে যাই।
হয় না ক্ষান্ত সে, ক্লান্ত আমি তাই।
গোগ্রাসে গিলে ফেলে একদিন ।
অভেদ্য তার পুরু আবরণ।
কারোর চোখে দৃশ্যমান নই এখন।
ঢেকে রাখে প্রতিক্ষণ।
দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষা।
নাই হয়ে তাই তারই মাঝে,
আমি পুরোটাই তার ভেতর।
অমনি যত্নে আগলে রাখে সে।
মৃত ডায়েরি
শেকল-ছেঁড়া ভালোবাসা,
এক হৃদয়ে ভিন্ন আশা,
সে তো নয় মোর মনের ভাষা।
শিরোনামহীন স্মৃতির রাণী,
তোমারে আমি কখনো ভুলিনি।
যাওনা তুমি যতই গোপনে,
ততোই হারাবো তোমারই গহীনে।
বিন্দু বিন্দু স্মৃতির তাড়ায়,
মন এখনো তোমাতে হারায়।
সময়ের পাড়ে পথেরও ধারে,
এখনো খুঁজি মনেরই কিনারে।
মৃত ডায়েরির জীবন্ত কথা,
বাড়িয়ে দেয় বুকেরই ব্যথা।
ঘুড়ি হয়ে ওড়ো যারই আকাশে,
মেঘ হয়ে রই তোমারই পাশে।
আনমনে তুমি কখনো কাঁদলে,
চোখ দুটি মোর ভরে যায় জলে।
তোমারি ঠোঁটের স্নিগ্ধ হাসি,
ভুলিয়ে দেয় মোর দুঃখ রাশি।
মরিলে আমি বাঁচিবে তুমি?
তবুও থাকিব তোমারই আমি।
প্রহরে প্রতীক্ষা
অযত্ন অবহেলা আমারে করিও,
তবু তুমি নিজেরে যতনে রাখিও।
চুপি চুপি দিন যায় কত রাত বিরাতে,
আড়ালেই থেকে যায় চাওয়াগুলো নিজ হাতে।
হাসিমাখা কথাগুলো ফাঁসি পরে লুটিয়ে,
স্মৃতিগুলো যায় আজ আমাকে কাঁদিয়ে।
চোখেরি ভাষায় ছিনিয়ে নেয়া আশায়,
এখনো তোমারে খুঁজি অপলক হতাশায় ।
নির্জলা নয়নে মন কাঁদে গোপনে,
উঁকি মেরে খুঁজে ফেরে শয়নে স্বপনে।
শূন্য থেকে পূর্ণ হয়ে আবারো অপেক্ষা!
মরণের প্রহরেও জেগে থাকুক মোর প্রতীক্ষা।
সম্পর্কের চিতা
তুমি পারলেও আমি আপোস করব না অশুদ্ধ ভালোবাসার বিশুদ্ধ আলিঙ্গন।
সময়ের পরতে পরতে রেখে আসা স্মৃতিগুলো অস্বস্তির দীর্ঘশ্বাসের ঢেউ হয়ে এখনো প্রতীক্ষার তীরে পাড়ি জমাচ্ছে।
সম্পর্কের চিতায় পুড়েছি শুধুই প্রেমের ফুলকি হওয়ার জন্য নয়, ভালোবাসার স্ফুলিঙ্গের কৃষ্ণচূড়া ফুল হয়ে ফুটে শীতল স্নিগ্ধতার উষ্ণতা ছড়াতে।
শুধু কি তাই, তোমার বুকে ভালোলাগার উষ্ণ অগ্নিকুণ্ড হয়ে প্রমাণও করেছি প্রেমে পড়ে জ্বলতে হয়, জ্বালাতে নয়।
এরপরেও তুমি আমার না!