প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
সিলিং ফ্যানের সাথে দড়ি বাঁধতে গিয়েই চেয়ার ভেঙে নিচে পড়ে গেলো রোজী। তার মনে হচ্ছে ডান পা মচকে গেছে! এই মুহূর্তে উঠে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। পায়ে চিন চিন ব্যথা করছে। হঠাৎ করেই ওদের বাসায় চলে আসে রিভা।
-থাপ্পর দিয়ে বলে ‘তোকে না বলছি পাগলামি করতি না?’
-আমি রিহানকে ছাড়া বাঁচবো না।
-আর একটা কতা কইলে তোর হাড্ডি আমি গুঁড়া করে দিমু।
তুই আসলেই কি রিহানকে ভালবাসিস?
-হুম। অনেক অনেক।
তুই নিজের জীবনকেই ভালোবাসতে পারছ না। আর আরেক জনকে ভালোবাসিস! শোন, যে নিজেকে ভালোবাসতে পারে না, সে কাউকেই প্রকৃতভাবে ভালোবাসতে হারে না। ভালোবাসাকে ভালো রাখতে নিজের ভালো থাকা জরুরি।
-আমি ওকে কীভাবে ভুলে থাকবো বল?
-মানুষ অভ্যাসের দাস। মানুষ পারে না এমন কোনো কাজ নেই। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। দোয়াই সকল সুখের মূল।
-আমি ওকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবো তো?
-হারতে তোকে হবেই। ও যদি পাঁচ বছরের রিলেশনটা ভেঙে পেলে ভালো থাকতে পারে তাহলে তুই পারবি না কেন! তুইও বেঁচে থেকে দেখিয়ে দে, ওকে ছাড়া তুইও দিব্যি ভালো থাকতে পারিস। শোন, এটা দুনিয়া, জান্নাত নয়। এখানে দুঃখ, হতাশা, আপন মানুষকে না পাওয়া এটা থাকবেই।
খোঁজ নিয়ে দেখ, কেউই তার প্রথম ভালো লাগার মানুষকে পায়নি।
আমাদের জীবন সংক্ষিপ্ত। আমাদের এই সংক্ষিপ্ত জীবনে এমন কাজ করতে হবে। যাতে আমাদের না পেয়ে অন্যরা আপসোস করে। আমরা চলে গেলে অন্যরা কাঁদে। আর আমরা হেসে হেসেই দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ লাভ করতে হারি।
-তুই সব সময়েই ভালো বলিস। তুই আমার সত্যিকারের বান্ধবী রে। তোর কথায় আমার মন ভরে গেছে। আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। আজ থেকে আমি নিজেকে ভালোবাসব। অনেক ভালোবাসব।
দুজনে এইবার অন্যরকম গল্প শুরু করে দিলো। বহুদিন পরে হাঁটতে হাঁটতে নদীর পাড়ে চলে আসলো। প্রকৃতির মনজুড়ানো বাতাসে দুজনের মেজাজই ভালো হয়ে গেল। হঠাৎ এক পরিচিত নম্বর থেকে কল আসলো রোজীর। সে রিসিভ করে হ্যালো বলতেই ও পাশ থেকে জানালো, তোর বয়ফ্রেন্ডের হবু বউ আজ গায়ে হলুদের দিনেই অন্য ছেলের হাত ধরে পালিয়ে গেছে। আর তোর বয়ফ্রেন্ড শুনে কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় স্ট্রোক করছে! কথাটা শোনার সাথে সাথেই ফোনটা কেটে দেয় রোজী। সে হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। দু চোখে দিয়ে তার টপ টপ পানি পড়ছে।