মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

ফিরতি খামে রোদ পাঠিয়ো
অনলাইন ডেস্ক

হেমন্ত এলেই মনের মধ্যে অদ্ভুত এক পরিবর্তন টের পাই। আমি প্রেমিক হয়ে উঠি। সাহসী নয়, নীরব প্রেমিক। যে প্রেমিক ছুঁয়ে দেখার স্পন্দন ভুলে অনুভবের আনন্দে মাতাল হয়। খোলা জানালা দিয়ে মন বাড়িয়ে ধরতে চায় প্রকৃতির সৌন্দর্য। নবান্নের মতো পুরোনো খাতা বাদ দিয়ে নতুন একটা খাতা খুলে বসি। দুধসাদা জমিনে স্বপ্নরং ছড়িয়ে দিই। সোনালি আর সবুজ মিশে যে চিত্রটি প্রতিভাত হয়, তা যেন খুব চেনা! সরু আইলের দুপাশ ঘেঁষা ধানখেতের সঙ্গে এটির কী আশ্চর্য সাযুজ্য! ঝিরঝিরে হিমেল হাওয়া সেখান থেকে পাকা ধানের গন্ধ বয়ে নিয়ে আসে। তার রঙে মোহিত হই, গন্ধে শিহরণ জাগে।

পায়ের কাছে ভাঁজ করে রাখা নকশিকাঁথাটা আলতো করে টেনে নিই। ঘড়ির কাঁটার তোয়াক্কা না করে আলস্যমাখা শরীরখানা তাতে জড়িয়ে নিই। স্বচ্ছ কাচের জানালায় সূর্যের ঝিকিমিকি হাসির বদলে কুয়াশাভেজা কাঁচা আর্দ্রতা। হঠাৎ ঘুম ভাঙলে মনে হয়, কাঁথার অপর প্রান্তেই হয়তো জড়সড় হয়ে তুমি মুখ লুকিয়ে আছো। কিংবা নিঃশব্দে উঠে ঘরের পেছনের ধানখেতে ছুটে গেছ। সবুজ ঘাসের কচি ডগার ওপর জমা হওয়া শুচি শিশিরের ওপর হাত ঘুরিয়ে তোমার নামের আদ্যক্ষর লিখে নিজেই মুগ্ধ হয়ে বলছ, ‘কী দারুণ ক্যানভাস!’ আমার স্বচ্ছ কাচের জানালাতেও কুয়াশাভেজা কাঁচা আর্দ্রতা। সেটিকেই ক্যানভাস বানিয়ে নিই। আঙুল বাড়িয়ে আঁকিবুঁকি করি।

হেমন্ত তোমার মতোই মৌন। প্রকৃতিকে আদর করে টুক করে কেটে পড়ে। আমার স্বপ্ন ফুরোয় না। আঁকিবুঁকি শেষ হয় না। এবারও রঙিন ফুলের বনে, পরিযায়ী পাখির দলে হারিয়ে যাওয়া হয় না। কংক্রিটের বদ্ধ দেয়ালের মধ্যে বসে তপ্ত চা খাই, খেজুর রসের স্বাদ নেওয়া হয় না। দিনের শেষে মায়াবী আলো কল্পনার রং ছড়িয়ে যায়। যেন লাল টুকটুকে সূর্যটার গায়েহলুদ হচ্ছে! সবুজ ধরায় হলুদমাখা সোনা রোদ অপার্থিব সাজে সেজেছে। খুব ইচ্ছে করে, রোদটাকে মুঠোয় ভরে এনে নিজের কাছে রাখতে। উঁচু উঁচু দালানকোঠায় বাধা পেয়ে তা আমার হাত অবধি পৌঁছায় না। বাধ্য হয়ে তোমার কাছে ফিরে যাই। মনে পড়ে, সেই কবে সবুজ পাতার খামের ভেতর হলুদ গাঁদার চিঠি লিখেছিলাম! তুমি হেসে কুটি কুটি হয়েছিলে। আমার ‘কী চাই’ জানাতে বলেছিলে। ফিরতি খামে হয়তো তা-ই পাঠাতে! তখন সংকোচে বলতে পারিনি। কিন্তু আজ হলদে আলোয় আঁকা এ হেমন্ত বিকেলে লুকোচুরির গল্প বলা সোনারোদটুকু পেতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছি। তোমার উঠোনে গড়াগড়ি করা রোদটাকে বন্দী করে রাখো। ফিরতি খামে সেই রোদটুকু পাঠিয়ো। আমি অধীর হয়ে আছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়