প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
‘বাংলাদেশ’ শ্লোগানে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত মিশরের মারাজাইল বাহরাইন মুখরিত
পবিত্র কুরআনের সূরা আর রহমান-এর ১৯ ও ২০ আয়াতে এরশাদ হচ্ছে, তিনি পাশাপাশি দুই দরিয়া প্রবাহিত করেছেন। উভয়ের মাঝখানে রয়েছে এক অন্তরায়, যা তারা অতিক্রম করে না। তাছাড়াও সুরা ফোরকানের ৫৩ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেন, আর তিনিই দুই সাগরকে সমান্তরালে প্রবাহিত করেছেন, একটি মিষ্ট সুপেয় এবং অন্যটি লোনাখর, আর তিনি উভয়ের মধ্যে রেখে দিয়েছেন এক অন্তরায়, এক অনতিক্রম্য ব্যবধান।
ভূমধ্যসাগর আর বিখ্যাত নীলনদ মিলিত হয়েছে মিশরের দুম্মিয়াত নামক স্থানে। সেখানে নীলনদের মিষ্টি পানি আর ভূমধ্যসাগরে লোনা পানি প্রবাহিত হচ্ছে আপন গতিতে, কিন্তু একে অপরকে অতিক্রম করে না।
মিশরে বাংলাদেশি ছাত্র সংগঠন আল-আযহার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সেই মারাজাইল বাহরাইনে গিয়ে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়। এতে মিশরে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তারা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করলো 'আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ'।
কায়রো থেকে বাসযোগে রাস-ইল-বার জেলার দুম্মিয়াত শহরের ভূমধ্যসাগর সৈকতে ছাত্ররা মেতে উঠেছিল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলা হাঁড়ি ভাঙ্গা, দড়ি টানা সহ বিভিন্ন খেলায়। পড়ন্ত বিকেলে দুই দরিয়ার মোহনায় দাঁড়িয়ে হামদ নাত পড়ার পাশাপাশি ওরা 'আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ' শ্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে গোটা এলাকা। সাথে যোগ দেয় স্থানীয় মিশরীয় সহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা।
আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নরসিংদীর খালেদ মনসুর আজহারী বলেন, প্রিয় মাতৃভূমি ও আপনজনদের ছেড়ে বিদেশের মাটিতে প্রবাসীদের ঈদ যেন এক ভিন্ন রকম অনুভূতি। আজকের আনন্দ ভ্রমণের আয়োজনে আপনজনদের ছেড়ে একাকী ঈদ কাটানোর কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হলো।
আরেক শিক্ষার্থী খাগড়াছড়ির ইলিয়াস হোসেন আজহারী বলেন, এই ঈদ পুনর্মিলনী ও শিক্ষা সফরে এসে চমৎকার একটা ঘটনায় মনটা ভালো হয়ে গেল। মাগরিবের আগমুহূর্তে সূর্য ডোবার সময় দুই দরিয়ার পানিগুলো লালচে রং ধারণ করে। যা দেখার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলো হাজারো পর্যটক।
সবার মতো আমরাও সামিল হলাম সেখানে। সেই মুহূর্তে মিশরীয় কিছু ছেলেমেয়ের তাদের দেশিয় গানের সাথে নাচ দেখে আমরা ব্যথিত হলাম। পরক্ষণেই আমরা সামান্য দূরে গিয়ে মনের সমস্ত আবেগ দিয়ে প্রাণ খুলে গাইতে শুরু করলাম,
‘হাজারো ব্যথা বেদনার পরে ফিরে আসনি তুমি আপন ঘরে’। তা দেখে আস্তে আস্তে মিশরীয়রা আমাদের সামনে হাজির হচ্ছিল বলে আমরাও সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলা ভাষায় হামদ ও নাত গাইলাম। আমাদের সাথে যোগ দিলো মিশরীয়সহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা। ‘লিল্লাহে তাকবির, আল্লাহু আকবার, আমাদের দেশ, তোমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ শ্লোগানে মুখরিত করে তুললাম দুই দরিয়ার মোহনা।