প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বিধ্বস্ত গাজায় বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে তৈরি প্রথম মসজিদ
ইসরাইলিদের বর্বর হামলায় ফিলিস্তিনের নির্যাতিত নিপীড়িত গাজাবাসী ইতঃমধ্যে নিজদের বাড়ি-ঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাদের ঘর-বাড়ির সাথে ধ্বংস হয়ে গেছে পবিত্র ভূমির হাজারো মসজিদ। বিভিন্ন স্থানে তাঁবুতে আশ্রয় নেয়া এ মানুষগুলোর জন্যে ইতোমধ্যে ত্রাণ, জরুরি ঔষধ, শিশুদের জন্যে কাফনের কাপড় ও খাবার দাবার দিয়ে বাংলাদেশি চ্যারাটি সংস্থা ‘আশ ফাউন্ডেশন’ ইতঃমধ্যে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। সেই সকল তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া মুসলমানদের জামাতের সাথে ফরজ নামাজ আদায় করার ব্যাকুল আগ্রহ দেখে গাজাস্থ খান ইউনিসের আল মাওয়াশিতে একটি মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় বাংলাদেশের চ্যারাটি সংস্থা ‘আশ ফাউন্ডেশন’।
গত শুক্রবার (১২ এপ্রিল) জুম্মার নামাজের আজান দিয়ে উদ্বোধন করা হলো আশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তৈরি 'মসজিদ আলহাজ্ব শামসুল হক'। আর এটিই ফিলিস্তিনের মসজিদুল আকসার পবিত্র ভূমিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথম মসজিদ। কাঠ আর ত্রিপলের তৈরি মসজিদটিতে জুম্মার নামাজের আজান পড়ার সাথে সাথে ক্যাম্পের বিভিন্ন তাঁবু থেকে উৎসাহ, উদ্দীপনা আর প্রফুল্লতার সাথে এসে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করেন বিভিন্ন বয়সের শতাধিক বাস্তুহারা ফিলিস্তিনি। আশ ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে জুম্মার নামাজে খুতবা দেন মসজিদটির ইমাম।
শত মুসল্লি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এ মসজিদের বিষয়ে আশ ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন এই প্রতিনিধিকে জানান, বাংলাদেশের মানুষের দেওয়া অনুদানে পবিত্র ভূমিতে এটি আমাদের তৈরি প্রথম মসজিদ। ঈমানদার এ মানুষগুলোর জন্যে এখানে হাজারটা মসজিদের প্রয়োজন। আশ ফাউন্ডেশনের আগত কর্মসূচিতে আপাতত বিভিন ক্যাম্পে একশত অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আগামীতে গাজা পুনঃনির্মাণের সময় এ মসজিদগুলো আল্লাহ চাহেতো স্থায়ী মসজিদে রূপ নিবে।
নাসির উদ্দিন আরো বলেন, দাতাগণ চাইলে 'মসজিদ আলহাজ্ব শামসুল হক'-এর মতো নিজেদের নামেও এখানে স্বল্প বাজেটে অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণ করতে পারে এবং এটি সম্ভব।
উল্লেখ্য, আমেরিকায় রেজিস্টার্ড আশ ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশের অনুমোদিত এনজিও সংস্থা আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গত নভেম্বর থেকে গাজায় জরুরি খাবার সহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাঠানো হচ্ছে। উভয় ফাউন্ডেশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন আরো জানান, বর্তমানে চলমান খাবার কর্মসূচির মেহমানখানা ও মসজিদ নির্মাণের পাশাপাশি আশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গাজার বিভিন্ন ক্যাম্পে টয়লেট নির্মাণ ও পানির ট্যাংক স্থাপনের কাজও চলছে। এ ক্ষেত্রে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে ফিল্ড হসপিটাল, ইয়াতিমখানা, মসজিদ ইত্যাদি নিয়ে গাজায় 'বাংলাদেশ কমপ্লেক্স' নামে একটা ওয়ান স্টপ সেবা কেন্দ্র চালু করার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি উল্লেখ করেন, গাজায় মালয়েশিয়ান হসপিটাল, ইন্দোনেশিয়ান হসপিটাল নামে বেশ ক'টি হসপিটাল গাজাবাসীদের দীর্ঘদিন ধরে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।