মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

প্রশিক্ষণ পেয়ে শিক্ষকরা দক্ষ হচ্ছেন
অনলাইন ডেস্ক

মোঃ সোহেল হোসেন হাইমচরের ৮নং দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক । সম্প্রতি তার মুখোমুখি হয়েছে শিক্ষাঙ্গন বিভাগ। সাক্ষাৎকারটি আজ প্রকাশিত হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?

উত্তর : আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা পেশায় কিভাবে এলেন?

উত্তর : আমার বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ছোটবেলায় বাবাকে দেখেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বুনি। আল্লাহর রহমতে নিজের প্রথম সরকারি চাকরি পরিক্ষায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে উত্তির্ন হই।

যেহেতু স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার এবং তা পুরন হওয়ায় পরবর্তীতে আর কোন চাকরির জন্য আবেদন করিনি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষক হিসেবে প্রথমদিন কেমন কেটেছে?

উত্তর : আলহামদুলিল্লাহ। আজীবন স্মৃতির পাতায় ধরে রাখার মতো একটা দিন। প্রথম দিন স্কুলে উপস্থিত হলে সকল সম্মানিত শিক্ষক শিক্ষিকাগণ আমাকে সাদরে গ্রহণ করেন। সম্মানিত প্রধান শিক্ষক মহোদয় আমাকে সর্বপ্রথম ৫ম শ্রেনীতে নিয়ে গেলেন এবং ছাত্রছাত্রীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আমি যখন বাচ্চাদের সাথে কথা বলতেছিলাম তখন মনে হলো আমি স্বপ্নের চুড়ান্ত শিখরে অবস্থান করতেছি। আমার উপলব্ধি হলো এটাই আমার জন্য উপযুক্ত পেশা। দিন দিন এখান থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবো এবং নিজের মেধা, অভিজ্ঞতা এবং আন্তরিকতা দিয়ে নিজেকে যথাযথ ব্যবহার করতে পারবো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার ছাত্রজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন।

উত্তর : সত্যি বলতে, আমার বাবা রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় খুবই সামান্য বেতন পেতেন। যা দিয়ে সংসার চালাতে বাবার খুবই কষ্ট হত। তাই বাধ্য হয়েই এইচএসসির পর পরই আমি পড়ালেখার পাশাপাশি ছোটখাটো চাকরি এবং টিউশনি করতাম। তবে এইচএসসির আগে পর্যন্ত ছাত্রজীবন মোটামুটি আনন্দময় ছিল।

আমি ১৯ নং উত্তর গন্ডামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে গন্ডামারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং হাইমচর মহাবিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করি ২০০৮ সালে । পরবর্তীতে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী এবং ঢাকা তিতুমীর কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাদের সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান সময়ের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে কী পার্থক্য লক্ষ্য করেন?

উত্তর : অসংখ্য পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন,

১. আমাদের সময়ে শিক্ষার্থীরা মুখস্থ নির্ভর পড়াশোনা করতো বেশি কিন্তু বর্তমানে সৃজনশীলতার ছোয়া পেয়ে বুঝে পড়ার প্রবনতা লক্ষ্য করা যায়।

২. আমাদের সময়ে বছরের প্রথমে নতুন পুরাতন/ছেড়া বই দিয়ে ক্লাস শুরু হত কিন্তু বর্তমানে সম্পূর্ণ নতুন বই দিয়ে ক্লাস শুরু হয়।

৩.আমাদের সময়ে সম্মানিত শিক্ষক শিক্ষিকাদের এত বেশি উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল না বিদায় একই পদ্ধতিতে শিখন শিখনো হত। কিন্তু সময়ের পরিপেক্ষিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষন পেয়ে অনেক অনেক দক্ষ শিক্ষকরা হচ্ছেন। এবং শিখন শিখনো ক্ষেত্রে অনেক সহজ এবং বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়।

৪. তাছাড়া অবকাঠামোর সুযোগ সুবিধা, বিভিন্ন ল্যাব স্থাপন, আইসিটির ব্যবহার বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্থাকে করেছে অনেক বেশি গতিশীল যা আমাদের সময়ে ছিল না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি শিক্ষামন্ত্রী হলে বিশেষ যে তিনটি কাজ করতেন?

উত্তর : যদিও শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না তবুও প্রশ্নের খাতিরে বলছি, শিক্ষা মন্ত্রী হলে যে তিনটি বিশেষ কাজ করতামঃ

১.যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি প্রযুক্তি নির্ভর পড়াশোনা এবং কারিগরি শিক্ষার প্রতি জোর দিতাম।

২.স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি জাতি গড়নের কারিগর মহান শিক্ষকদের আর্থিক এবং সামাজিক মান বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতাম।

আমি বিশ্বাস করি শিক্ষকদের আর্থিক দুরবস্থায় এবং সামাজিকভাবে নিচুস্তরে রেখে জাতি কখনো শিক্ষাখাতে উন্নতি করতে পারে না।

৩. এবং অবশ্যই স্কুল কলেজে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতাম।

চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর : যে হারে খেলার মাঠ সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং বাচ্চারা যেভাবে খেলাধুলা বিমুখ এবং মোবাইলে আসক্ত হচ্ছে তা দেখে আমি বর্তমান প্রজন্ম এবং তাদের সুস্থতা নিয়ে খুব আতংকিত।

আমি বিশ্বাস করি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে হলে শিশুদের খেলাধুলার বিকল্প কিছু নেই। খেলাধুলার ভেতরে যে আনন্দ থাকে তা শিশুমনের পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়ক। তাছাড়া শারীরিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমার মনে হয় অদুরে ভবিষ্যতে সুস্থ স্বাভাবিক জাতি পেতে শিশুদের খেলাধুলা করা বাধ্যতামূলক করা উচিত।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার বিদ্যানিকেতনটি সম্পর্কে কিছু বলুন।

উত্তর : আমাদের বিদ্যালয়টিকে একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ধরা যায়। শিক্ষকদের মধ্যে সৌহার্দ্যপুর্ন সম্পর্ক বিদ্যমান। স্কুলের বর্তমান সভাপতি সাহেব সৎ, যোগ্য এবং শিক্ষা সহায়ক একজন ব্যক্তি। স্কুলের পরিবেশ অনেক মনোরম এবং সাজানো গুছানো। তবে অবকাঠামোর দিক দিয়ে আরো উন্নয়ন করার অবকাশ রয়েছে। বিশেষ করে স্কুলের নিরাপত্তা এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে চারপাশের বাঊন্ডারি হওয়া খুবই জরুরি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় ছাত্র কারা? কেন প্রিয়?

উত্তর : একজন শিক্ষক হিসেবে স্কুলের সকল ছাত্রছাত্রী আমার সন্তান সমতুল্য। একজন আদর্শ বাবার কাছে যেমন সকল সন্তান প্রিয় আমার কাছে ও সকল ছাত্রছাত্রী প্রিয়। তবে নিয়মিত উপস্থিত, ক্লাসে মনোযোগী, ভদ্র এবং নৈতিকতা সম্পূর্ণ বাচ্চাদের বেশি ভালো লাগে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়