প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২২, ০০:০০
আব্দুল খালেক মতলব দক্ষিণ উপজেলার ২০নং শাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত। সম্প্রতি তিনি চাঁদপুর কণ্ঠের ‘শিক্ষাঙ্গন’ বিভাগের মুখোমুখি হন। এ সময় তিনি তার শিক্ষাজীবন, শিক্ষকতা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাব্যবস্থার নানা দিক নিয়ে কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি আজ প্রকাশিত হলো।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?
আব্দুল খালেক : আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা পেশায় কীভাবে এলেন?
আব্দুল খালেক : শিক্ষকতা পেশার প্রতি ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ ছিলো। আগ্রহ থাকার কারণে শিক্ষকতা পেশায় দক্ষতা অর্জনের জন্যে বিএড ডিগ্রি অর্জন করি। মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকতার আগ্রহটাই বেশি ছিলো। শিক্ষকতা পেশার প্রতি আগ্রহ থাকার সুবাধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি এবং আলহামদুলিল্লাহ চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়ে ২০নং শাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষক হিসেবে প্রথমদিন কেমন কেটেছে?
আব্দুল খালেক : শিক্ষক হিসেবে প্রথম দিন আলহামদুলিল্লাহ ভালোই কেটেছে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর দেখলাম বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকগণ খুবই আন্তরিক। শিক্ষার্থীরাও নতুন একজন শিক্ষক পেয়ে আনন্দিত। সবার সাথে পরিচিত হয়ে পাঠদান কাজ শুরু করি। বিদ্যালয়টি নদীর কোলঘেঁষে খুবই সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে অবস্থিত, যা ভালো লাগাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার ছাত্রজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন।
আব্দুল খালেক : ছাত্রজীবন শুরু হয়েছে ১৭৩নং দক্ষিণ ঘোড়াধারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এ পর্যন্ত যাঁর তত্ত্বাবধানে আসছি তাঁর কথা না বললেই নয়। তিনি হলেন আমার একমাত্র বড় ভাই মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির। বহরী উচ্চ বিদ্যালয়, আল-আমিন একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করি। আমার বড় ভাইয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং আমার প্রিয় শিক্ষকদের সহযোগিতার মাধ্যমে আমার একাডেমিক শিক্ষাজীবন শেষ করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাদের সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান সময়ের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে কী পার্থক্য লক্ষ্য করেন?
আব্দুল খালেক : বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার প্রসার হচ্ছে, যা আমাদের সময়ে কল্পনা ছিলো। আমাদের সময়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষকদের প্রতি যে সম্মান এবং শ্রদ্ধা ছিলো বর্তমান সময়ে তা তেমন দেখা যায় না।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি শিক্ষামন্ত্রী হলে বিশেষ যে তিনটি কাজ করতেন?
আব্দুল খালেক : আমি শিক্ষামন্ত্রী হলে যা করতাম তা বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী অনেকটাই শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এক. সমন্বিত শিক্ষাব্যবস্থা শুরু হয়েছে। দুই. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রযুক্তির ব্যবহার করে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিন. শিক্ষকদেরকে সর্বোচ্চ সম্মানির ব্যবস্থা করে শিক্ষকতা পেশাকে মহৎ পেশা হিসেবে মানসম্মত ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষকতা পেশার প্রতি আগ্রহী করতাম।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
আব্দুল খালেক : খেলাধুলা শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে। পড়াশোনা করার জন্যে শরীর ও মন সুস্থ থাকতে হবে। শরীর ও মন সুস্থ না থাকলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবে না, পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ থাকবে না। তাই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি ও পড়াশোনায় মনোযোগী করতে খেলাধুলার বিকল্প নেই।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার বিদ্যানিকেতনটি সম্পর্কে কিছু বলুন।
আব্দুল খালেক : আমার বিদ্যালয়টি নদীর কোলঘেঁষে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে। বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষক শিক্ষার্থী খুবই আন্তরিক।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় ছাত্র কারা? কেনো প্রিয়?
আব্দুল খালেক : সকল শিক্ষার্থীই আমার প্রিয়। কিন্তু দুষ্টু প্রকৃতির শিক্ষার্থীরা আমার অনেক প্রিয়। তারা কোনো বিষয়ে বুঝতে না পারলে জানার আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করে থাকে। শিক্ষার্থীদের জানার আগ্রহ থাকলে পাঠ পরিচালনা করতে ভালো লাগে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা জীবনের একটি আনন্দের ঘটনা বলুন।
আব্দুল খালেক : আমার শিক্ষকতা জীবনে যেই আনন্দের ঘটনাটি প্রায় ঘটে থাকে। তা হলো বিদ্যালয়ে ২ জন সিনিয়র ম্যাডাম রয়েছেন তাঁরা শিক্ষার্থীদের নাম ডাকার সময় শিক্ষার্থীরা ইয়েস ম্যাডাম/উপস্থিত ম্যাডাম বলতে অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছে, এখন আমি নাম ডাকার সময় তারা প্রায়ই ইয়েস ম্যাডাম/প্রেজেন্ট ম্যাডম বলে নিজেরাই হেসে দেয়। আরেকটি মজার বিষয় হলো তারা আমাকেই বেশি ভয় পায় আবার আমার কাছেই কোনো সমস্যা থাকলে শেয়ার করে।