সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১১ মে ২০২২, ০০:০০

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের কথা
অনলাইন ডেস্ক

আমি চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার সন্তান। গ্রামেই আমার বেড়ে ওঠা। পার্শ্ববর্তী গ্রামের আধারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আমি প্রাইমারি পড়াশোনা করি। কাউয়াদি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে অনার্স এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করি।

১৯৯৭ সালে আমি চাঁদপুর সরকারি কলেজে যোগদান করি। সে বছরই অর্থাৎ ১৯৯৭ সালে কলেজে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স চালু হয়। তখন আমাদের অনেকগুলো শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন হয়। ধীরে ধীরে সে সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠি।

চাঁদপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে আমি সহকর্মী হিসেবে বরেণ্য উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের পেয়েছি। প্রফেসর আসাদুল হাসনাত, সুশীল কুমার নাহা, নাহিদ মনসুর ম্যাডাম, মনির হোসেন সরকার, মোশাররফ হোসেন (এলীন) ও মাহফুজুর রহমান প্রমুখ আমার সহকর্মী ছিলেন।

চাঁদপুর সরকারি কলেজের মধ্যে ভালো ফলাফল করার মতো সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয় হচ্ছে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ। এ কলেজে ১৯৯৬-১৯৯৭ শিক্ষাবর্ষে বিভাগটি চালু হওয়ার পর থেকেই প্রতি বছর গৌরবময় ফলাফল অর্জন করে চলছে শিক্ষার্থীরা। প্রথম বছর অনার্সে প্রায় ২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জনই প্রথম বিভাগ পেয়েছে। যা আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করেছে। সে সময় আমাদের বিভাগে প্রথম হওয়া সানাউল্লাহ পাটওয়ারী বর্তমানে ফরেস্ট বিভাগে দায়িত্ব পালন করছে।

বিভাগটিতে একঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর পদচারণা আমার মনে প্রশান্তি এনে দেয়। অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা এ বিভাগটিকে গৌরবান্বিত করছে। এরা সবাই আমার প্রিয় শিক্ষার্থী। আমাদের অনেক শিক্ষার্থীই সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। যেমন আমাদের বর্তমান বিভাগীয় শিক্ষক মোহাম্মদ কামরুল হাছান (সহকারী অধ্যাপক), মোঃ শাহআলম পাটওয়ারী (সহকারী অধ্যাপক হিসেবে চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজে আছেন), মোহাম্মদ জাকির হোসেন খান-এই কলেজে বিভাগীয় প্রদর্শক হিসেবে দায়িত্বরত, দীপক সূত্রধর- চিড়রা সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগকে আধুনিক বিভাগ হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্যে আমরা প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করি। আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ গঠনে মনোনিবেশ করতে পারে সে হিসেবে তাদের গড়ে তোলার চেষ্টা করি।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগটি আমার প্রাণের স্পন্দন। শিক্ষক হিসেবে এ বিভাগে অনেক স্মরণীয় ঘটনা আমার রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো যেদিন আমি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করি সেদিন কলেজ প্রশাসনসহ শিক্ষার্থীরা আমাকে যেভাবে বরণ করে নিয়েছে তাতে আমি খুবই অভিভূত। আমৃত্যু এ স্মৃতি আমি বয়ে বেড়াতে চাই।

এ বছর আমাদের শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনীর যে আয়োজন করা হয়েছে তাতে আমি খুবই আনন্দিত। এর মাধ্যমে বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের একটি মেলবন্ধন রচনা হয়েছে। এতে করে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়েছে। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার প্রত্যাশা, তারা যেখানে, যে অবস্থানে থাকুক না কেনো বিভাগের সাথে যেনো সবসময় যোগাযোগ রাখে। এজন্যে আমাদের বিভাগে ‘প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদ’ গঠন করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের নিজেদের লব্ধ জ্ঞান সবার মাঝে দিতে কাজ করবে। একই সাথে নিজেদের বন্ধন অটুট রাখবে। এ বিভাগকে আমি আমার পরিবারের মতো মনে করি। আমাদের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে আমরা একটি পরিবার। যে পরিবারের আলো আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই। সে লক্ষ্যেই আমি কাজ করে যাবো।

মোঃ ইকবাল হোসেন খান : সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, চাঁদপুর সরকারি কলেজ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়