প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২২, ০০:০০
ফাতেমা ইয়াছমিন চাঁদপুর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বাবুরহাট শাখার সহকারী শিক্ষক (বাংলা) হিসেবে কর্মরত। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি তিনি এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। শিক্ষকদের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা এবং শিক্ষকতার প্রতি ভালো লাগা ও ভালোবাসার থেকে শিক্ষকতা পেশায় আসেন তিনি।
ফাতেমা ইয়াছমিন সম্প্রতি দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের পাক্ষিক আয়োজন ‘শিক্ষাঙ্গন’-এর মুখোমুখি হন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শিক্ষাঙ্গন প্রতিবেদক।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?
ফাতেমা ইয়াছমিন : আলহামদুলিল্লাহ। ভালো আছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা পেশায় কীভাবে এলেন?
ফাতেমা ইয়াছমিন : শিক্ষকদের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও শিক্ষকতার প্রতি ভীষণ ঝোঁক ছিলো। সেই ভালো লাগা ও ভালোবাসার থেকে শিক্ষকতা পেশায় আসা।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষক হিসেবে প্রথমদিন কেমন কেটেছে?
ফাতেমা ইয়াছমিন : এক অন্যরকম অনুভূতি। ছাত্রজীবন থেকেই শিক্ষকতা শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেটা ছিলো খ-কালীন। ১ জানুয়ারি ২০১৭, দিনটি আমার জন্যে অবিস্মরণীয়। সেদিন ছিলো আমার জন্যে এই বিদ্যালয়ে নিয়োগের প্রথম দিন। সেদিন আমি প্রথম ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছেছিলাম তারপর অন্যান্যরা আসে। ঘুরে দেখছিলাম চারিদিকের আঙ্গিনা।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার ছাত্রজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন।
ফাতেমা ইয়াছমিন : বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, তাই সেনানিবাসে স্কুলজীবন কেটেছে। আমার একটাই স্কুলÑসেনানিবাস পর্ষদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা। এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার পর আমাদের পুরো পরিবার কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর চলে আসে। এসে ভর্তি হয়েছিলাম গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পাস করে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স পাস করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাদের সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান সময়ের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে কী পার্থক্য লক্ষ্য করেন?
ফাতেমা ইয়াছমিন : আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য রয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহারে। আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তখন কিন্তু মোবাইলের ব্যবহার ততোটা বহুলপ্রচলিত ছিলো না। নিয়মিত বিদ্যালয় যেতাম, খেলাধুলা করতাম। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা ছিলো না। বোর্ড পরীক্ষায় হিসেবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা ছিলো। এখন প্রযুক্তির কল্যাণে অনলাইন ক্লাসের সংখ্যা বেড়েছে। একই বিষয়ের উপরে চাইলে শিক্ষার্থীরা অনেক ক্লাস করতে পারে। অনেক রকম বিষয় সম্পর্কে খুঁটিনাটি জ্ঞান বিভিন্নভাবে খুব সহজেই জানা যায়।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি শিক্ষামন্ত্রী হলে বিশেষ যে তিনটি কাজ করতেন?
ফাতেমা ইয়াছমিন : খুব কঠিন প্রশ্ন। তারপরও যেহেতু জানতে চাইলেন। প্রথমত, সরকারি শিক্ষকদের পাশাপাশি বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতাম। দ্বিতীয়ত, পাঠ্যবই ও বিষয়ের সংখ্যা কমাতে চেষ্টা করতাম। তৃতীয়ত, সার্টিফিকেটের চেয়ে প্রায়োগিক মূল্যায়ন বা কারিগরি দক্ষতা অর্জনের জন্যে পদক্ষেপ/ব্যবস্থাগ্রহণ করতাম।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষার্থীদের জন্যে খেলাধুলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
ফাতেমা ইয়াছমিন : শিক্ষার্থীদের জন্যে খেলাধুলা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে সেটা অবশ্যই মাঠের খেলা। শারীরিক কসরত ও খেলাধুলা যে কোনো শিক্ষার্থীকে সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে ও মানুষ হতে সাহায্য করে। বর্তমানে সাইবার গেম কিংবা অনলাইন গেমের প্রতি যে অসুস্থ আসক্তি তৈরি হয়েছে সেটা অচিরেই নির্মূল হোক। আমাদের নতুন প্রজন্ম খেলাধুলার জন্যে মাঠে ফিরে যাক।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার বিদ্যানিকেতনটি সম্পর্কে কিছু বলুন।
ফাতেমা ইয়াছমিন : শহরে যেখানে ইট-কাঠের ভিড়ে জায়গা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর সেখানে অনিন্দ্য সুন্দর পরিবেশে মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সেজে আছে বিদ্যানিকেতন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বাবুরহাট। রয়েছে সুন্দর বাগান ও মাঠ, শুদ্ধ পরিচ্ছন্ন বাতাস। এমন পরিবেশে এলে যে কারো মন ভালো হয়ে যাবে। শিক্ষক ও শিক্ষিকারা অনেক বেশি নিবেদিতপ্রাণ। শিক্ষার্থীরা অনেক উপভোগ করে এখানকার পাঠদান। সব মিলিয়ে অনেক সুন্দর এবং ভালো লাগার একটা পরিবেশ।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় ছাত্র কারা? কেনো প্রিয়?
ফাতেমা ইয়াছমিন : প্রিয় শিক্ষকদের নাম বলা সহজ। ছাত্রদের সবাইকে প্রিয় করে নিতে হয়। তবে বড়দের চেয়ে ছোটদের বেশি প্রিয় বলতে হয় কারণ তারা শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করে বেশি অকৃত্রিমভাবে ভালোবাসে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা জীবনের একটি আনন্দের ঘটনা বলুন।
ফাতেমা ইয়াছমিন : আনন্দের অনেক ঘটনা আছে তবে একটি বললে বলতে হয়, এসএসসি ব্যাচ ২০২১-এর শতভাগ পাস আমার জন্যে এক আনন্দের ঘটনা।